মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরের আলগী গ্রামের আকনবাড়ি এলাকায় ঐতিহ্যবাহী পোনা নদীর ওপরের কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকাবাসি নিজেস্ব অর্থায়নে তার উপরে কাঠের পাটাতন দিয়ে ২ বছর ধরে পারপার হচ্ছেন দুই গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ। অপর দিকে ভাঙ্গা কালভার্টের অংশ ওই নদীর মধ্যে পড়ে থাকায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে ওই নদীতে কচুরিপানা জন্ম হয়েছে। পানি প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় হাজার হাজার একর জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আসংকা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রাজাপুর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম আংগারিয়া গ্রাম ও আলগী গ্রামের আকনবাড়ি এলাকায় ওই দুই গ্রামের সীমানায় পোনা নদীর দুই পার মাটি দিয়ে ভরাট করে তার ওপরে প্রায় ৮ বছর আগে এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত অর্থায়নে একটি ছোট কালভার্ট নির্মান করা হয়। গত ২০২০ সালে উপজেলার সত্যনাগর এলাকার ওস্তাবাড়ি খালের মোহনা থেকে দক্ষিণ দিকে নদীটির ৬ কিলোমিটার ১৯ লাখ টাকা ব্যায়ে খনন করা হলে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ওই কালভার্টটি। কিছুদিন পরে কালভার্টটি ভেঙ্গে নদীর মধ্যে থুবড়ে পড়ে থেমে যায় পানি প্রবাহ এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আংগারিয়া ও আলগী গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বাহন পার করে নিরাপদে রাখতে দুর্ভোগে পড়েন আলগী গ্রামের ইজিবাইক ও রিক্সা চালকরা। নদীর পানি প্রবাহ থেমে যাওয়ায় নদীটির বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে জন্ম হয়েছে কচুরীপানা এবং হাজার হাজার একর জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আসংকা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। ওই ভাঙ্গা কালভার্টটি নিয়ে বছরখানেক আগে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন উদযোগ নেয়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দা শাহাদত আকন, বেল্লাল আকন, সাইদুল হক আকন, কবির হাওলাদার , জাহারুল হাওলাদার ও হারুনসহ স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৮ বছর আগে মরে যাওয়া পোনা নদীর ওই স্থানে নদীর দুইপাড় মাটি দিয়ে ভরাট করে স্থানীয় মেম্বর দুই গ্রামের মানুষের পারাপারের জন্য একটি ছোট কালভার্ট নির্মান করেন। পরে ভরাট হয়ে নালায় পরিনত হওয়া পোনা নদীটির গত ২০২০ সালে ১৯ লাখ টাকা ব্যায়ে ৬কিলোমিটার খনন করার কিছু দিন পরে কালভার্টটি ভেঙ্গে নদীর মধ্যে থুবড়ে পড়ে। আমাদের দুই গ্রামের মানুষের পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের পারাপারের জন্য কর্তৃপক্ষের কোন উদযোগ না দেখে স্থানীয় লোকজন মিলে নিজেস্ব অর্থায়নে গত দুই বছর আগে ওই ভাঙ্গা কালভার্টের ওপরে কাঠের তক্তা দিয়ে পাটাতন তৈরী করে পারাপার হচ্ছি। অপর দিকে কালভার্টের ভাঙ্গা অংশ নদীর মধ্যে থুবড়ে পড়ায় পানি প্রবাহ থেমে গেছে। নদীর বিস্তির্ণ এলাকা জুড়ে কচুরীপানার জন্ম হয়েছে। এ অবস্থায় বেশীদিন থাকলে ওই নদীর দুই পাশের হাজার হাজার একর জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে আসংঙ্কা করছেন আবুল হাওলাদার, সত্তার হাওলাদার ও মুনসুর হাওলাদারসহ স্থানীয় একাধিক কৃষক। তারা আরো জানান, অতি দ্রুত কালভার্টের ভাঙ্গা অংশ সরিয়ে ওই স্থানে একটি ব্রীজ নির্মান করা খুবই প্রয়োজন।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, খোজ নেয়া হচ্ছে। বরাদ্দ পেলে ভাঙ্গা কালভার্টের অংশ সরিয়ে পোনা নদীর ওই স্থানে ব্রীজ নির্মান করা হবে।