নওগাঁ প্রতিনিধি:
সংসদীয় আসন নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর, পোরশা,সাপাহার) আসন থেকে সরকার দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন আওয়ামীলীগের ত্যাগী কর্মী খালেকুজ্জামান তোতা। শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন ফরম তোলেন খালেকুজ্জামান তোতা।
খালেকুজ্জামান তোতা মুঠোফোনে বলেন,
আমি একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান।বাবা ছিলেন তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান। রাজনীতির কারনে ১৯৬৩ সালে আততায়ীর বন্দুকের গুলিতে মাত্র তিন বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলাম। ১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আমার পরিবারের সকল সদস্য নৌকা প্রতীকের নিশ্চিত বিজয় লাভ করার জন্য সকলেই ভোট প্রদান করেন। আমার বয়স তখন ১০ বছর। আমি এলাকার ছোট ছোট ছেলে পেলেদের সঙ্গে নিয়ে পদ্ম পাতার ছবি সম্বলিত নৌকার ছাপ দেখিয়ে অতি উৎসাহে মিছিল করি, যা আমার জীবনের স্মরণীয় দিনগুলির মাঝে অমর হয়ে আছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ১৭ই এপ্রিল গঠিত প্রবাসী ও স্বাধীন বাংলাদেশের নির্দেশে আমার বংশের একজন সদস্য ও আমার মহল্লার একজন সদস্য ভারতে অবস্থান গ্রহণ করে প্রয়াত নেতা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আঃ জলিলের সঙ্গে নওগাঁ অঞ্চলের মুক্তিবাহিনী যুদ্ধ পরিকল্পনা, ও ভারতের মাটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার কাজে যোগ দেন। অতঃপর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত হবার পরে বাংলাদেশের মাটিতে পা দেন।
খালেকুজ্জামান তোতা আরো বলেন, আমি প্রায় ২৫ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। দীর্ঘ ছয় চল্লিশ বছর রাজনীতি জীবনে কখনো কোনো দাগ লাগতে দেয়নি। কখনো দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করিনি। আমি একজন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। আমার রক্তে মিশে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। আমার কষ্ট লাগে যে দলের জন্য নিজের শৈশব, কৈশোর, যৌবন সব ভুলে বৃদ্ধ বয়সেও দলকে উজ্জীবিত করতে তৃণমূল থেকে কাজ করে যাচ্ছি কিন্তু অজানা কারণে আমার থেকে অযোগ্য কর্মী আজ দলের বড় পদে। আফসোস লাগে আমাদের তিলতিল করে গড়ে তোলা তৃণমূল আওয়ামীলীগ এর ত্যাগী কর্মীরা আজ কোন ঠাসা। বর্তমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৃণমূল শাখার সাধারণ কর্মী আমি। আমি চাই ৪৬ নওগাঁ -১ আসন এর পরিবর্তন, আমি চাই নওগাঁ -১ আসন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শেখ হাসিনার উন্নয়নে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে। যেখানে থাকবে না কোন ভেদাভেদ, কমিটিতে মূল্যায়ন পাবে ত্যাগি প্রকৃত আওয়ামী লীগ কর্মীরা। দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমি নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার এর জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে কাজ করে যেতে চাই। আমি ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করেছি এবং যৌবনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সেই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। তৃণমূলের সঙ্গে আমার নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই তৃণমূলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মকান্ড বাস্তবায়ন ও সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছি। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাকে সুযোগ দিলে আমি মানুষের কল্যাণে তাদের পাশে থেকে কাজ করতে চাই।
আমৃত্যু পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার সুযোগ্য কন্যা মানবতার মূর্ত প্রতীক জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তথা প্রিয় জননী বাংলাদেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখব।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল তফসিল ঘোষণা করেন। ভাষণে সিইসি জানান, সংসদ নির্বাচনের মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ডিসেম্বর। আর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে ৭ জানুয়ারি।
বেশ লম্বা সময় ধরে খালেকুজ্জামান তোতা তার নির্বাচনী আসন নিয়ামতপুর, পোরশা,সাপাহারে তার নেতাকর্মীদের নিয়ে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এর পাশাপাশি তার নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
Leave a Reply