সিলেট প্রতিবেদক ::
সিলেটের হরিপুর এলাকার ফতেহপুর ইউনিয়নের লামাশ্যামপুর গ্রামের ২ টি পরিবারকে বাঁদিক মানে একঘরে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরা হলেন লামাশ্যামপুর গ্রামের রইস উদ্দিন ও বদরুল ইসলাম।
অদ্য ৫ জুন সরেজমিনে হরিপুর এলাকায় গিয়ে জানা যায় যে, গত ০৪/০৬/২০২৩ ইং রোববার ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রসিদ আহমদ এর নেতৃত্বে জয়নাল মেম্বার (সাবেক),মাহমুদ মেম্বার (সাবেক) ও আমির উদ্দিন সমন্বয়ে তথাকথিত গ্রাম্য সালিসির মাধ্যমে গুরুতর কোনো কারণ ছাড়াই লামা শ্যামপুর গ্রামের ২টি পরিবারকে একঘরে করা হয়ছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে তথাকথিত একঘরে করা রইছ উদ্দিন ও বদরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন আসলে আমাদের কোন দোষ নেই এবং গ্রাম্য সালিস তথা সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কোন অপরাধও আমরা করিনি, সাবেক চেয়ারম্যান রসিদ সাহেব নিজেকে এলাকার সর্বেসর্বা মনে করেন এবং তিনি চান তার কথায় সবাইকে ওঠাবসা করতে হবে কিন্তু আমরা অনেক সময় উনার অযৌক্তিক কাজকে সমর্থন করতে পারিনা আর মূলত: এটাই আমাদের অন্যায়।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকের একটি দল পুরো বিষয়টি জানার জন্য গ্রাম সালিসের প্রধান ও সাবেক চেয়ারম্যান রসিদ আহমদ বাড়িতে গেলে উনাকে পাওয়া যায়নি,পরিবারের সদস্যরা জানান তিনি অসুস্থ হয়ে সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, পরে উনার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আসলে বিষয়টি এরকম নয়, আমি এখন অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি আছি, আপনি সরাসরি একবার আসেন বিস্তারিত জানতে পারবেন বলে লাইন কেটে দেন।
এদিকে ফতেহপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজি রফিক আহমদ ও উক্ত ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার রুবেল আহমদ এর পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদকে জানানো হয় যে, গ্রামের সালিসির মাধ্যমে ২ টি পরিবারকে বাঁদিক বা একঘরে করে রাখার বিষয়ে উনারা কিছুই জানেন না,তাছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে ডাকা তথাকথিত সালিসি বৈঠকে উনারা উপস্থিতও ছিলেন না। একপর্যায়ে রুবেল মেম্বার বলেন বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে যেখানে আইন আদালত আছে এবং দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন দিক দিয়ে আইনি সেবা দেওয়া হয়, তাছাড়া সাধারণত ছোটখাটো বিষয়ে কোনপ্রকার জটিলতার সৃষ্টি হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়,সেখানে নাকি সাবেক চেয়ারম্যান রসিদ আহমদ এবং উনার অনুগত সাবেক দুইজন মেম্বার মিলে তথাকথিত গ্রাম্য সালিস বৈঠক বসিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত রায় দিয়ে সাধারণ মানুষকে একঘরে করার বিষয়টি সত্যি সত্যিই খুব দুঃখজনক। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিষয়ে একঘরে হওয়া ভুক্তভোগী পরিবার ও তাদের মানসম্মান রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে হরিপুর বাজারে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একঘরে করা আরো ৪/৫ টি পরিবারের লোক কান্না জড়িত কন্ঠে আক্ষেপ করে এ প্রতিবেদক জানান যে, সাবেক চেয়ারম্যান রসিদ আহমদ কোন অপরাধ ছাড়া তাদেরকেও একঘরে করেছেন,তাদের একটাই অপরাধ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা অন্য প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।