মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির নলছিটিতে প্রমত্তা সুগন্ধার ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে ভৈরবপাশা ইউয়িনের বহরমপুর গ্রামের নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা বিধবা আকলিমা আক্তারের শেষ সম্বল বসতঘর ও বাগানবাড়ী।
প্রবল স্রোতে তার বসতবাড়ির বাগানসহ সবকিছু নদীতে বিলিন হয়ে যায়। বর্তমানে প্যারালাইসিস হয়ে শয্যাশায়ী আকলিমা আক্তার তার এক মেয়ে ও দুই নাতী নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তার স্বামী বহরমপুর এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীন তিনিও কিছুদিন পূর্বে মৃত বরণ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার বিশাল মাটির খন্ড নদীতে বিলীন হয়ে যায় এসময় আমরা সেখানে থাকায় তা মুঠোফোনের ক্যামেরায় ধারন করে রাখি। আকলিমা বেগম তার বসত ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে পারলেও বাগানবাড়ীর গাছপালাগুলো নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তারা গৃহহীন অবস্থায় আছেন। তারা যে জমি কিনে নতুন বাড়ি করবেন সেই সামর্থ্য তাদের নেই। তাই সরকারি ভাবে সহায়তা পেলে পরিবারটি একটু মাথা গোঁজার ঠাই পেতো। তিনি এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটা অনেক দিন ধরেই শুনতেছি কেনো এতো দেরি করা হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।
বিধাবা আকলিমা আক্তার বলেন, আমার জমিজমা সবই সুগন্ধায় বিলীন হয়েগেছে। এখন সর্বশেষ বাড়িটাও নদী গর্ভে চলে গেলো। অনেক আগ থেকেই নদীর ভাঙনের মুখে ছিল আমার বসতঘর কিন্তু এখান থেকে অন্যত্র যাওয়ার সামর্থ্য না থাকায় এতোদিন এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করেছি। এখন সেটুকুও নাই তাই এখন কোথায় ঠাই হবে জানি না। আমার সাথে একটা মেয়ে আছে বিয়ে দিলেও তার স্বামী খোঁজখবর না নেওয়ায় সে দুটো সন্তানসহ আমার কাছেই থাকেন। এখন তাদের নিয়ে কোথায় দাড়াবো জানি না। কয়েকদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। টুকটুাক যা আসবাবপত্র ছিল তা প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে রেখে এসেছি। বর্ষার ভিতর এভাবে কতদিন থাকতে পারবো তা আল্লাহ ভালো জানেন। আমার দুই ছেলে তাদের পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন তারা যা আয় করেন সেটা দিয়েই তাদের সংসার চালাতেই অনেক কষ্ট হয় তারপরও আমার খোঁজখবর রাখেন তবে নতুন জমি কিনে ঘর তৈরি করে দেয়ার মতো অবস্থায় তাদের নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলেনা আক্তার বলেন, বর্ষায় সুগন্ধা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আর জোয়ারের পানির কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ ভাঙন আতংকে আছেন। আকলিমার আক্তারের বিষয়টি জানতে পেরে খোঁজখবর নিয়েছি। তার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যতটুকু সহায়তা করা যায় সেটা অবশ্যই করা হবে। এছাড়া তাকে একটি সরকারি ঘর পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা তার বিষয়টি জানতে পেরেছি খুব শীঘ্যই তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হবে।