(শেষ পর্ব)
মো. সায়েস্তা মিয়া :
পরিকল্পিত সমাজ ব্যবস্থা ও দারিদ্র্যতা বিমোচন নিয়ে এ সমাজের সবার পরিকল্পনা এক নয়। নিঃস্বার্থ ভাবে সমাজের সেবা করা সবার দেশা বা নেশা ও নয়। চিত্তে বিত্তে, সহায় সম্বলে ধনী মানুষের তালিকা খাজাঞ্চিতে শতশত কিন্তু হাতে গুনা কয়েকজন স্থানীয় ভাবে উন্নত সমাজ গঠনে ভূমিকা পালন করছেন। আশপাশের হকদার প্রতিবেশির অভাব অনটন ও নানাবিধ সমস্যায় তারা গোপনে ও প্রকাশ্যে পাশে দাড়ান। ধনী শ্রেণির সিংহভাগ লোকেরা যদি গুটিকয়েক দাতাদের মত সমাজে অবধান রাখতেন তা হলে অত্র এলাকার চেহারা পাল্টে যেত। তবে দু’দশক আগের চেয়ে বর্তমানে দাতা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।
এক্ষেত্রে সেলিম আহমেদ এর অবদান শীর্ষে রয়েছে। সেলিম আহমেদ এর সামাজিক ভাবে রাখা অবদানের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনার একটি স্পষ্ট আভাস পরিলক্ষিত। যেটি বাস্তবায়ন করছে তার নিজ হাতে গড়া সালেহ আহমেদ সাকিব কল্যাণ ট্রাস ইউকে। যেমন একটি কাজের উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে আশা করি। বিগত ২০২২ সালে ইউনিয়নের ২০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীদের অংশগ্রহণে একটি মেধাবৃত্তি চালু করেছে । এবং সালেহ আহমেদ সাকিব কল্যাণ ট্রাস্টের আয়োজনে পুরো ইউনিয়ন ব্যাপি মেধাবৃত্তি প্রথম চালু করে। এর আগে কোন সংগঠন বা ব্যাক্তি এরকম আয়োজন করার ইতিহাস নেই। এ বছর ২০২৩ সালে ২য় বার মেধাবৃত্তিটি অনুষ্ঠিত হল। আগামীতে চলমান থাকবে এ ধারা। এ পর্যন্ত অসহায় দরিদ্রদের একাধিক পাকা গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে যে ঘরগুলো দুই -চার কিংবা দশ পনের বছরে ও কিছুই হবে না। এ জন্য বলা যায় সেলিম আহমেদের প্রতিটি কাজের দীর্ঘস্থায়ী একটি স্থায়ীত্ব আছে। এলাকার উন্নয়নে তিনি প্রবাসী এবং সম্পদশালীদের সম্পৃক্ত হওয়ার উৎসাহ যোগান দাতার ভুমিকা পালণ করছেন। ইতিমধ্যে এর অনেক নজির এলাকায় দৃশ্যমান হয়েছে। তিনি তার নিকটাত্মীয় ও পরিচিত মহলের অনেককেই এলাকার উন্নয়নে উদ্বুদ্ধ করে নিজ এলাকায় উন্নয়ন মূলক কাজ বাস্তবায়ন করিয়েছেন।
এছাড়া খাজাঞ্চি ইউনিয়নের অতি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সেলিম আহমেদ। বাংলাদেশ স্বাধীনের দীর্ঘ সময়ে ও খাজাঞ্চি ইউনিয়নে কোন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে এ পর্যন্ত অনেক ঝক্কি ঝামেলা ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। নিরপেক্ষ ও খাজাঞ্চি বাসীর উপকারে আসে এমনকি খাজাঞ্চি ইউনিয়নের সকল মানুষ যাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সেবা নিতে পারে এমন একটি স্থানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের প্লান এবং প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগে কাজ করছেন তিনি। দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করলেও খাজাঞ্চির উন্নয়নের চিত্র পুরোটাই উল্টো। বিগত ১৫ বছরে ইউনিয়নে দৃশ্যমান মেগা কোন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। ইউনিয়নে এখনো কয়েকটি গ্রাম রয়েছে যে গ্রামগুলোতে যেতে হলে পা ছাড়া গাড়ির ভরসা করলে আপনি বোকার রাজ্যে বাস করবেন। যোগাযোগের ক্ষেত্রে পুর্ব খাজাঞ্চি থেকে কম সময়ে পশ্চিম খাজাঞ্চিতে রেল লাইনের পাশ ঘেঁষে ঘাসিগাও থেকে প্রীতিগনজ বাজার পর্যন্ত ভবিষ্যৎতব্য রাস্তায় খাজাঞ্চি রেল ব্রীজের পাশে একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন সেলিম আহমেদ। ইতিমধ্যে এ ব্রীজটি বেসরকারি ভাবে নির্মাণ করার জন্য কয়েকজন প্রবাসী দাতা একত্রিত হয়ে নির্মাণের উদ্যোগী হতে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু ব্রীজটি সরকারি ভাবে করার একটি প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে। যদি সরকারি ভাবে সম্ভব না হয় এবং প্রবাসীরা মিলে অর্থের সংস্থাপন করতে পারেন তাহলে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণের পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে চান তিনি। কয়েকজন প্রবাসী দাতা এগিয়ে এলে এটি করা সম্ভব। তিনি সর্বোচ্চ দাতার তালিকায় থাকবেন এমনটি জানিয়েছেন। ছোট ছোট কালভার্ট নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। খাজাঞ্চি ইউনিয়নে কোন মহিলা ও কারিগরি কলেজ স্থাপিত হয়নি। শিক্ষা ছাড়া জাতীর উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে একটি উচ্চমাধ্যমিক মহিলা কিংবা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যায় কি না তা নিয়ে ও তিনি চিন্তা ভাবনা করছেন বলে জানিয়েছেন।
সর্বোপরি তিনি খাজাঞ্চি ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে কিভাবে রূপান্তরিত করা যায় তা তাঁর পরিকল্পনায় রয়েছে। তিনি সুযোগ ও সময়মত তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন এটি তার স্বপ্ন ও প্রচেষ্টা।
দশের লাঠি একের বোঝা। সে কথার ন্যায় সম্মিলিত প্রয়াসে তার এমন স্বপ্ন গুলো বাস্তবতায় রূপ নিতে পারে। তাই তিনি এলাকাবাসী সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।