এশিয়ান এক্সপ্রেস ডেস্কঃ কৃষকের স্বপ্ন আর বেঁচে থাকার সংগ্রামের খবর কেউ রাখেনা। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারিকে উপেক্ষা কৃষক বসে নেই ঘরে। জীবন জীবীকার তাগিদে তারা মাঠে আছে রোদ বৃষ্টি, শীত সহ সব প্রতিকুল পরিবেশে। কিন্তু মাথায় হাত পড়েছে এবার শীতকালীন সবজি চাষিদের। গতবারের চেয়ে এবার দেশে সবজি আবাদের পরিমাণ কিছুটা বেশি বলে বোদ্ধাদের দাবী। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আবাদি সবজির উৎপাদন হয়েছে ভাল, কিন্তু উৎপাদন খরচ আগের মতই আছে। উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে লাভতো দুরের কথা পুঁজিও ঘরে আনা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক চাষি ঋণের বোঝা টেনে নিঃস্ব আর হতাশাগ্রস্থ হয়ে দিক খোঁজে পাচ্ছেন না।
দেশে উৎপাদিত শীতকালীন সবজি এবার এতই সস্তা যা অনেক বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সিলেটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে আগত সবজি চাষীদের চোখে মুখে হতাশার চাপ। অনেকেই জমি থেকে সবজি সংগ্রহই করছেন না। সংগ্রহ করে করবেন টা কী। প্রতি কেজি টমেটোর পাইকারি দাম ১ থেকে দেড় টাকা। ২৫ / ২৬ কেজির টমেটোর ক্যারেট বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। বাঁধা কপি প্রতি পিচ ৩ থেকে চার টাকা। ফুলকপি ৫ থেকে ৭ টাকা। বেগুন ২ থেকে তিন টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা বাধাঁকপি কিনে নিতেই আগ্রহী নয়। অনেকেই গরুর খাদ্য হিসেবে বাঁধা কপি কিনে নিচ্ছেন। বিশ্বনাথ উপজেলার প্রীতিগনজ বাজারে গতকাল কামাল খাঁন ও সয়াজ মিয়া নামের দুই ক্রেতা কে দেখা যায় গরুকে খাওয়ানোর জন্য তারা গাড়ি ভর্তি বাঁধা কপি কিনেছেন গরুর খাদ্য হিসেবে। শীতকালীন সবজির আড়ৎ সিলেট নগরীর টুকের বাজার ও চালিবন্দর, বিশ্বনাথ বাজার, মুফতিবাজার ঘুরে সবজির বাজারের চিত্র একি রকম লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীগণ হতাশ দাম পড়ে যাওয়ায়। লামাকাজী বাজারের ব্যবসায়ী সুন্দর আলী বলেন, মহামারি করোনার কারণে মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক দূরাবস্থা বিরাজ করছে। অনেক পরিচিত কাস্টমার এতো সস্তা থাকার পরও তরকারি কিনে নিয়ে খেতে চাচ্ছেন না।
ভ্যানগাড়ী ভর্তি টমেটো নিয়ে বাজারে আসা এক কৃষক অভিমান করে বলেন, একটা বাঁধা কপি উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ৪ টাকা আর বাজারে এনে বিক্রি হয় ৩ টাকা, ১ কেজি টমেটো উৎপাদনে খরচ হয় ২ থেকে আড়াই টাকা বেগুন, করলা, সীম সহ সকল সবজিতে প্রচুর সার কীটনাশক, শ্রম ব্যয় করে যদি এমন অবস্থা হয় তা হলে আগামীতে সবজি চাষই আর করব না।