রাকিব হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হলে এ নিয়ে শোরগোল হয়। আবার একসময় তা মিইয়ে যায়। আবার হামলা হয়। বারবার হামলা হওয়ার কারণ, এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হয় না। পরিকল্পিত এসব হামলার দায় প্রশাসনেরও রয়েছে।
খুলনার রূপসাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পাটগ্রাম উপজেলার পূজা উৎযাপন কমিটি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ পাটগ্রাম আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা এসব হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। মানববন্ধন আয়োজন করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ পাটগ্রাম উপজেলা শাখা ও পূজা উৎযাপন কমিটি পাটগ্রাম । বুধবার ১১ই আগষ্ট, পাটগ্রাম উপজেলার চৌরঙ্গী মোড়ে বিকাল ৪.০০ টার সময় মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
খুলনার রূপসা উপজেলার শিয়ালি গ্রামে গত শনিবার মন্দির, বেশ কিছু দোকান ও সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এই হামলাসহ মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় খাসিদের ওপর হামলা, ঢাকার সাভারে অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণ হত্যা ও পটুয়াখালীর রাখাইন গ্রামে উচ্ছেদের হুমকির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এখানে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পাটগ্রাম উপজেলার সভাপতি অনুব রায় লিটন বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর এসব হামলার পেছনে আছে সাম্প্রদায়িক শক্তি। তারা এসব হামলার মাধ্যমে তাদের শক্তির জানান দিতে চায়। এটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য হুমকি।
অনুপ কুমার রায় লিটন বলেন আরো বলেন, এসব হামলা রুখতে প্রশাসনের ব্যর্থতা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে। হামলা রুখতে সব অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক হতে হবে।
পাটগ্রাম উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি রতন কুমার সাহা বলেন, এসব হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, পরিকল্পিত। ঘটনা ঘটলে সরকার বলে, প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু সেটি আর হয় না। প্রকৃত ব্যবস্থা নিলে এভাবে হামলার পুনরাবৃত্তি হতো না।
পাটগ্রাম উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, আমরা দুর্বল বলেই আমাদের উপর আঘাত, সংখ্যালঘুদের মূল্যহীন করে রাখতে চায় একটি চক্র। কাউকে মূল্যহীন করে নিজে মূল্য পাওয়া যায় না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফল। কিন্তু প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কখনো দায় নেন না।
ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, বিগত সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর যত হামলা হয়েছে, প্রতিটিই পূর্বপরিকল্পিত। রামু, নাসিরনগর, রংপুরের মিঠাপুকুর—সব জায়গায় মিথ্যা অভিযোগে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু একটিরও বিচার হয়নি। হামলাকারীরা জামিন পেয়ে গেছেন।
দেশের সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ওপর সাম্প্রতিক হামলা শুভ লক্ষণ নয়।
হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রকেই মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, তাঁরা রাষ্ট্রবিরোধী।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক , যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সাংগঠনিক সম্পাদক সহ পূজা উৎযাপন কমিটি পাটগ্রাম এর বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ।