মির্জা মাহমুদ রন্টু নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় এক কলেজ ছাত্রী তিশা যৌতুকলোভী স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এ ঘটনায় লোহাগড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও কলেজছাত্রী তার স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাইনি।
এলাকাবাসী ও ভুক্ত ভোগী সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গা গ্রামের ইজাজুল শেখের ছেলে লোহাগড়া সরকারী আদর্শ কলেজের অনার্সো (রাষ্ট্র বিজ্ঞানের) শেষ বর্ষের ছাত্র রেদওয়ান মাহফুজে (২৫)র সঙ্গে লোহাগড়া পৌরসভার কুন্দশী গ্রামের মৃত হাফিজুর রহমানের মেয়ে নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্সের (দর্শন) ২য় বর্ষের ছাত্রী তিশা আক্তার (২২) এর ২০১৭ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। পরে তাদের প্রেমের ঘটনা উভয় পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে গত ২০১৯ সালে ২৯ নভেম্বর উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে তিশা ও রেদওয়ানের বিবাহ হয়। বিবাহর পর থেকে স্ত্রী তিশার নিকট থেকে স্বামী রেদওয়ান বিভিন্ন সময়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও প্রায় ২ ভরি স্বর্নালংকার হাতিয়ে নেয়।
এদিকে স্ত্রী তিশা স্বামীর বাড়িতে নেওয়ার জন্য স্বামী রেদওয়ানকে তাগিদ দিতে থাকে। স্বামী রেদওয়ান স্ত্রীকে বাড়ি না নেওয়ার জন্য বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে স্ত্রী তিশা গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্বামী রেদওয়ানের বাড়িতে গিয়ে ওঠে। এসময় স্বামী রেদওয়ান তিশার নিকট ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে । টাকা না দিলে তিশাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহন করবেনা বলে তিশাকে জানায়। তিশা টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে তিশার স্বামী ও শ^শুর মিলে তিশাকে বেধড়ক মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। তিশা অসুস্থাবস্থায় ১৫ সেপ্টেম্বর লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়। নির্যাতিত তিশা কান্না বিজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, আমার সঙ্গে রেদওয়ানের ২০১৭ সালে মোবাইলের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে উভয় পক্ষের অভিভাবক থেকে আমাদের বিয়ে দেয়। পরে আমি জানতে পারি আমার স্বামী নারী ও যৌতুক লোভী। আমি ছাড়াও আমার স্বামী প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। আমার মত কোন মেয়ের জিবন যেন আর নষ্ট না হয় । যৌতুক দিতে না পারায় আমাকে স্বামী ও শ^শুরমিলে মারপিট করে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার জিবন নিয়ে রেদওয়ান ছিনিমিনি খেলছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
ইতনা ইউনিয়নের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও আওয়ামীলীগ নেতা এসএম আদনান হোসেন বলেন, ছেলে-মেয়ের উভয় পক্ষের অভিভাবক উপস্থিত থেকে আমার বাড়িতে বসে বিয়ে হয়েছিল। এখন জানতে পারলাম ছেলে রেদওয়ান বিভিন্ন টালবাহানা করছে। এটা অন্যায় । অভিযুক্ত স্বামী রেদওয়ান মাহফুজ মোবাইল ফোনে বলেন, আমাকে শালিসের কথা বলে মেয়ের পক্ষের লোকজন জোর করে আমার কাছ থেকে কাবিনে সই নিয়েছিল। তিশা আমার বাড়িতে আসলে আমি তাকে মারপিট করি নাই। তিশা নিজেকে আহত করে আমাকে হয়রানী করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ অশিকুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসছিলাম। কিন্তুু উভয় পক্ষকে আপোষ করতে পারি নাই। আবারও বসে মিমাংশা করে দেয়ার চেষ্টা করছি।