জহুরুল হক মিলু, লোহাগড়া(নড়াইল)প্রতিনিধিঃ
আর কদিন পর ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় বেড়েছে কামারদের কর্মব্যস্ততা। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় কামারশালা হচ্ছে লোহাগড়ায়। কামারের দোকানগুলোতে সারা দিন টুং-টাং শব্দ বিরাজ করছে। কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার হাতিয়ার তৈরি ও মেরামতের কর্মযজ্ঞ সেখানে চলছে। সরেজমিনে লোহাগড়া কর্মকারপাড়া, শিয়রবর, লাহুড়িয়া মানিকগঞ্জ, দিঘলিয়া, বড়দিয়া, এড়েন্দা, কলাগাছি, কালনা বাজারের কামারের দোকানগুলোতে দেখা গেছে কেউ গলে যাওয়া লোহা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাতিয়ার তৈরির উপযোগী করছেন। কেউবা পশু জবাই করার ছুরি ধার করছেন। একটি হাতিয়ার তৈরি করতে লোহা অনুযায়ী দাম নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলায় প্রায় ৫০টি কামারের দোকান রয়েছে। এতে প্রায় ১০০ মানুষের কর্মসংস্থান আছে। প্রতি বছর ধানের মৌসুম, কোরবানির ঈদে কামারদের ব্যস্ততা যেন বেড়ে যায়। ধান কাটার কাস্তে, কোরবানির ঈদে ছুরি, দা, কুড়াল তৈরি ও মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকেন কামাররা। এই এলাকার কামারের তৈরি জিনিসের কদর থাকায় নড়াইল, কালিয়া, খুলনা, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, মহাম্মুদপুর, কাশিয়ানি, আলফাডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও জেলায় দা, চাকু, চাপাতি, জবাই ছুরি, কুড়াল, কাস্তে, বঁটিসহ অর্ডার নেওয়ার পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হাতিয়ার তৈরি করে ডেলিভারি দেওয়া হয়।
স্থানীয় কামার শেখর কর্মকার বলেন, পাকা লোহার তৈরি হাতিয়ার ধারালো হওয়ায় এ লোহা থেকে তৈরি প্রতি কেজি দা-বঁটি ৮০০ টাকা, বড় বঁটি প্রতিটি ৫০০ টাকা, বড় ছুরি প্রতিটি ৪০০ টাকা, কুড়াল প্রতি কেজি ৮০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, একটি পুরাতন হাতিয়ার মেরামত ও ধারালো করতে নেওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা।
লোহাগড়ার বাজারের কামার উতপাল, শ্রীবাস হাজারী, প্রবাস কর্মকার বলেন, কামারের ব্যবসা আগের মতো নেই। গত বছরের থেকে প্রতি কেজি কাঁচা লোহার দাম বেড়েছে ২৫-৩০ টাকা ও পাকা লোহার দাম বেড়েছে ৪৫-৫০ টাকা। এ জন্য প্রতিটি লোহার হাতিয়ারের দাম বেশি পড়ছে।
মরিচ পাশা গ্রামের মাওলানা মো. হান্নান মোল্যা বলেন, ‘কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হয়। এ জন্য কামারের কাছে এসেছি ছুরি ধার করাতে।’