শাহিন উদ্দিন:
লালাবাজার বাসিয়া পশ্চিম পাড়ের অধিবাসীরা লালবাজার তথা সিলেটের সাথে যোগাযোগে বাসিয়া নদী পারাবারে যুগ যোগান্তরে অত্র এলাকাবাসী সীমাহীন দূর্ভোগে অতিষ্ঠ ছিলো।
জানাগেছে, ১৯৭০ সালে পাকিস্হান আমলে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আাউল গণী ওসমানী বর্তমানে অধিষ্ঠিত ব্রীজের স্হানে একটি ব্রীজ স্হাপনের ওয়াদা করেছিলেন কোনো একটি সূত্রে।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ৭৩ সালের অত্র অঞ্চলের সংসদ সদস্য আ্যডভোকেট নূরুল ইসলাম খাঁনকে টাকা দিয়ে জেনারেল ওসমানী অত্র এলাকার মানুষের কাছে ১৯৭৪ সালে পাটিয়েছিলেন একটি গাছ দ্ধারা ব্রীজ স্হাপনের জন্য। তখন জেনারেল আতাউল গণী ওসমানীর প্রেরিত ও তৎসময়ের এলাকার মানুষেরা আরো কিছু টাকা সংগ্রহ করে একটি গাছের ব্রীজ স্হাপন করেছিলেন। কিন্তু ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যেই এই গাছের ব্রীজটি বর্ষার পানির তুড়ে ভেসে যায়।
এতে বুঝাগেল ১৯৭৪ সালের পূর্বে লালাবাজার বাসিয়া নদী পারাবারে গাছ কিংবা বাঁশেরও কোনো ব্রীজ সেখানে স্হাপিত ছিলোনা।
আজ অত্র এলাকার প্রকৃত বিবেকবান মানুষেরা শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছে জেনারেল মরহুম আতাউল গণী ওসমানী, মরহুম আ্যডভোকেট নূরুল ইসলাম খাঁন সহ তৎসময়ে গাছ দ্ধারা স্হাপিত ব্রীজের সাথে সংলিস্ট এলাকার সকলকে।
১৯৭৪ সালে গাছের ওই ব্রীজটি ভেসে যাওয়ায়, সেখানে স্হায়ী একটি পাকা ব্রীজ স্হাপনের জন্য ১৯৭৭ সালে অত্র এলাকার মানুষেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন।
বর্তমান অধিষ্ঠিত বীজটি ৭৭ সালের ব্রীজ বাস্তবায়ন কমিটি সাবেক এমপি মরহুম খন্দকার আব্দুল মালিকের মাধ্যমে তৎকালীণ রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে ব্রীজটি শেনসন করেন এবং অত্র এলাকার অধিবাসীদের আর্থিক ও সার্বিক প্রচেষ্ঠায় স্হাপিত হয়েছিল সেদিন এই ব্রীজটি।
এলাকার প্রকৃত বিবেকবান মানুষেরা রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, খন্দকার আব্দুল মালিক, ৭৭ সালের ব্রীজ বাস্তবায়ন কমিটির সাথে সংলিস্ট সকলকে এলাকার প্রকৃত বিবেকবানরা শ্রদ্ধার সাথে আজ স্বরণ করছে।
১৯৯৯ সালে তৎসময়ের বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদকে বর্তমান অধিষ্ঠত এই ব্রীজের পরিবর্তে যুগ উপযোগী একটি ব্রীজ স্হাপনের জন্য তাঁকে লালাবাজারে এক গণ সংবর্ধণার মাধ্যমে ব্রীজটির দাবী তুলেধরেছিলেন।
তিনি ওই সংবর্ধণার জবাবে সেদিন যুগের চাহিদার আলোকে লালাবাজারে বাসিয়া নদীর উপর একটি ব্রীজ স্হাপনের আশ্বাস প্রদান করেছিলেন।
মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ ও তাঁর সংবর্ধণার সাথে সংলিস্ট সকল মুরব্বীয়ান ও সংলিস্ট সকল তরুণ যুবকদেরকে এলাকার প্রকৃত বিবেকবানরা আজ শ্রদ্ধার সাথে করছে।
লালাবাজারে বাসিয়া নদীর উপর যুগ উপযোগী নতুন ব্রীজ স্হাপনের জন্য ২০০৩ সালে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি হয়েছিল। এই কমিটি নতুন ব্রীজের দাবী বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন ভাবে দাবী আদায়ে কাজ করেছিলো।
২০০৩ সালের ব্রীজ বাস্তবায়ন কমিটির সাথে ছিলেন, তৎসময়ের অলংকারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, তৎসময়ের লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ও তৎসময়ের তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। আজ অত্র এলাকার প্রকৃত বিবেকবানরা শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছে ২০০৩ সালের ব্রীজ বাস্তবায়ন কমিটি ও তৎকালীণ উপরোক্ত তিনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সংলিস্ট সকলকে।
২০২১ সালের সিলেট ৩নং আসনের উপনির্বাচনে
পূর্ব থেকে এলাকার এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও এক আমেরিকা প্রবাসী ব্রীজটি যুগ উপযোগী নতুন ব্রীজ স্হাপনের জন্য অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে
এক জাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। আজ এলাকার প্রকৃত বিবেকবানরা এই দুই প্রবাসীকে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছে।
বর্তমান সিলেট ৩নং আসনের সংসদ সদস্য এমপি হাবিবুর রহমান গত ৪ নভেম্বর বিকেলে বহুল প্রত্যাশিত লালাবাজার বাসিয়া নদীর উপর যুগ উপযোগী নতুন ব্রীজ স্হাপনের জন্য ব্রীজটির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উম্মোচন করেগেছেন।
যার বিনিময়ে তিনি পেয়েছেন বর্তমান ব্রীজ বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে ব্রীজের কাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই লালাবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিশাল এক নাগরিক সংবর্ধণা। সেই সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে সমেবেত হয়েছিল এলাকার হাজার হাজার প্রত্যাশিত মানুষ। অত্র এলাকার লক্ষ লক্ষ জনতা আজ অধীর আগ্রহে বসে আছে কবে শেষ হবে ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপিত লালাবাজারে যুগ উপযোগী নতুন এই ব্রীজের কাজ।