রাকিব হোসেন,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলাধীন বুড়িমারী ইউনিয়নে জন্ম, বাবা -মা দুজনেই শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। এক ভাই এক বোন, পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান বুয়েট অধ্যায়নরত মেধাবীছাত্র ফারহান তানভীর হৃদয়। দীর্ঘ কয়েক বছর প্রচেষ্টার পরে প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে মানব জীবনের বসবাসযোগ্য সিকিউরিটি নিয়ে গবেষণা করে অবিস্মরণীয় সফলতা নিয়ে এসেছে স্মার্টহোম নামে একটি বাড়ির প্লান।
এটি নির্মাণের সাথে জড়িয়ে থাকে গভীর স্বপ্ন, অসংখ্য গল্প। বাড়ি নির্মাণকে ঘিরে যেমন থাকে একটি সুখী পরিবারের স্বপ্ন, আর গল্প, তেমনি অবকাঠামোগত যেকোনো নির্মাণের সাথেও জড়িয়ে থাকে উন্নত একটি দেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন।
এমন আবেগ জড়ানো স্বপ্নগুলো সত্যি করতে, নির্মাণের উপকরণগুলো হতে হয় মানসম্পন্ন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে টক্কর দিতে বিশ্বমানের বাড়ির প্রয়োজন নির্মাণশিল্পে।
এ অনুধাবন থেকেই বাংলাদেশের নির্মাণ বাড়িগুলো বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত আধুনিক সব প্রযুক্তি ও সিস্টেমের সংযোজন এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে, সময়ের পরিক্রমায় বাড়ি নির্মাণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হিসেবে তার এ মহা পরিকল্পনা ।
তার পরিকল্পিত আবিস্কারের
স্মার্টহোম বাড়িটিতে যেসব সুবিধা সমূহ থাকছে ..
১। শরীরের তাপমাত্রার ভিত্তিতে দরজা খুলবে।
আমরা জানি যে বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়েছে। তাপমাত্রা বেশি হওয়া করোনা ভাইরাস সংক্রমনের প্রাথমিক স্তর। যদি কোনো ব্যক্তির শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয়, তাহলে দরজা খুলবে না। তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেই কেবল দরজাটি খুলবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে।
২। ঘরের তাপমাত্রা এবং আদ্রতার ভিত্তিতে ফ্যান এবং এসি অটোমেটিক অন অফ হবে। যেমন শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকে। তখন ফ্যান এবং এসি বন্ধ থাকবে। আবার তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বেশি হলে ফ্যান এবং এসি অটোমেটিক চালু হয়ে যাবে।
৩। ট্যাংকের পানির লেভেলের ভিত্তিতে পাম্প অফ অন হবে। আমরা সচরাচর পাম্পের সুইচ ম্যানুয়ালি অন করি ট্যাংকে পানির লেভেল কমে গেলে। স্মার্ট হোমে পানি নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে নামলেই পাম্প স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন হবে। আবার নির্দিষ্ট লেভেলের উপরে উঠলে পাম্প স্বয়ংক্রিয়ভাবে অফ হবে।
৪। ঘরে আগুন লাগলে বা গ্যাস লিকেজ হলে এলার্ম বাজবে এবং কর্তৃপক্ষের কাছে এসএমএস যাবে। কর্তৃপক্ষ যদি ঘরের বাইরেও থাকে, তাহলেও সে এসএমএসের মধ্যমে ঘরের কন্ডিশন এবং এলার্ট জানতে পারবে।
৫। একটি এন্ড্রয়েড এ্যাপের মাধ্যমে সব গুলা ডিভাইস নিয়ন্ত্রন করা যাবে। ম্যানুয়ালি একটি অ্যাপ দিয়েও সব গুলা ডিভাইস চালু বা বন্ধ করা যাবে।
৬। রুমে যদি কম পক্ষে ১ জন থাকে, তাহলে অটোমেটিক লাইট অন হবে। আবার কেউ না থাকলে অফ হয়ে যাবে।
স্মার্ট হোম প্রজেক্ট নিয়ে ফিউচারে কি কি কাজ করার ইচ্ছা আছে তার জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেনঃ
১। ওয়াইফাই ভিত্তিক কন্ট্রোল সিস্টেম ডেভেলপ করা যাতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সফার এবং মনিটরিং করা যায়
২। একটি সিকিউরিটি ক্যামেরার সাহায্যে ফেস ডিকেক্ট করে প্রবেশ করতে দেওয়া। এক্ষেত্রে অপরিচিত কাউকে ঘরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এর মধ্যমে অ্যাটেন্ডেন্স সিস্টেমের ডেভেলপ করা।
৩। জিপিএসের সাহায্যে প্রাইভেট কার এবং পরিবারের সদস্যদের অবস্থান জানা যাবে এবং একটি সেন্ট্রাল সার্ভারের মাধ্যমে তাদেরকে ঘরে বসেই মনিটর করা যাবে।
৪। এমন একটি অ্যাপ ডেভেলপ করা যাতে ফ্যামিলি মেম্বাররা একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
৫। ঘরে আগুন লাগলে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাধ্যমে সেটা বন্ধ করার ব্যবস্থা থাকবে।
৬। আবহাওয়া সংক্রান্ত কোন জটিলতা দেখা দিলে ঘরে এলার্ম বাজবে। এতে করে পরিবারের সদস্যরা সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবে।
বুয়েট ছাত্র ফারহান তানভীর হৃদয় আরো বলেন, সুন্দর ও প্রযুক্তি ব্যবহারে অল্প ব্যয়ে নানামুখী সুবিধা নিয়ে বসবাস যোগ্য এক পৃথিবী গড়ে তোলার স্বপ্নপূরণে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চিন্তাভাবনা নিয়েই এই গবেষণা এবং এই আবিষ্কার।
বাংলাদেশের যদি বড় বড় কোম্পানি গুলো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাড়ি নির্মাণ কাজ করে এতে অনেক খরচ কমের পাশাপাশি খুব অল্প সময়ে বাড়ি তৈরী করতে পারবে।