রাকিব হোসেন,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । ভোর ৬টা থেকে তিস্তার পানি হুহু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তারচর অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে চরের নিম্ন এলাকায় শতাধিক পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়ছে। সাথে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙ্গন।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকালে দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপরে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে।ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারাজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, সকাল ৯ টায় পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার যাহা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন।
জানা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ,রাজপুর,গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। ভাঙ্গনের ফলে প্রায় পাচঁ শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের কবলে পরে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
হাতীবান্ধা সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদে সদস্য মফিজার রহমান জানান,তিস্তার পানি আজ ভোর থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু পরিবার পানি বন্ধি হয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে সিন্দুর্না ইউনিয়নের ১ ও ২ নং চর সিন্দুর্ন চিলমারী গ্রামের ১০ দিনের ব্যবধানে প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে।এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেবিন ইসলাম বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে শুক্রবার ভোর থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এবিষয়ে হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনা মহামারি জন্য কালীগঞ্জ উপজেলায় ৩৬ মেট্রিক টন ও হাতীবান্ধা উপজেলায় ২৪ মেট্রিক টন খাদ্যসামগ্রী মজুত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, অত্র ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানিবন্দি পরিবারের তালিকা নিয়ে দ্রুত খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।