এইচ এম বাবুল জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রামঃ-কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বাড়িতে আগুন লেগে সেখানে বসবাস করা চারটি পরিবারের সমস্তকিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। পরে কুড়িগ্রাম সদরের ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে রাত ১২ টার দিকে রাজারহাটের উমর মজিদ ইউনিয়নের পূর্ব বালাকান্দি সবুজপাড়া এলাকার আব্দুল গণি মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এতে এক রাতেই আগুনে পুরে চারটি পরিবারের ১৩ জন সদস্য খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকা বলছে পরিবারের সদস্যরা।
বাড়ির মালিক আব্দুল গণি মিয়া (৬২) সহ তার তিন ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), মোজাফফর রহমান (৩৭) ও মিনহাজুল ইসলাম (৩২) সহ মোট চারটি পরিবার সেই বাড়ির ৭টি কক্ষে বসবাস করতেন।
আব্দুল গণি মিয়া জানান, রাত ১২ টার দিকে তারা রান্নাঘরে আগুন দেখতে পায়। রান্নাঘরে পাটকাঠি ও খড়ি থাকায় আগুনের ভয়াবহতার কারনে তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশের ঘর গুলোতে আগুন ছড়িয়ে যায়। আগুনের ভয়াবহতায় পুড়ে যায় ৪টি গরু, ৭টি ছাগল, ফ্রিজ, আসবাব, হাড়ি পাতিল, জামা কাপড়, জমানো নগদ ৫০ হাজার টাকা, ধান-চাউল সহ ৭টা কক্ষের প্রায় সবকিছু।
অপরদিকে ফায়ার সার্ভিসের ঘটনাস্থলে দেরি করে পৌঁছানোর অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে গণি মিয়া বলেন, ১২ টার দিকে আগুন লাগে, এর পরপরই ৯৯৯এ খবর দেওয়া হলেও ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে দেরি করে। ততক্ষণে কিছুই অবশিষ্ট ছিলো না।
প্রতিবেশী ওমর আলী বলেন, আগুন লাগার পর আমরা এসে নেভানোর চেষ্টা করি। আগুন বেশি থাকায় কাছে যেতে পাইনি। ফায়ার সার্ভিস দেরিতে পৌঁছানোয় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব হয়নি। আগুন লাগার দেড় ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলেও জানান তিনি।
১২টা ৪৬ মিনিটে কুড়িগ্রামের ভোকেশনাল মোড় থেকে ফায়ারসার্ভিসকে ফোন করেছিলেন প্রতিবেশী আব্দুল আউয়াল। তিনি জানান, যখন আমি ফোন দিলাম তারা বলছে আমরা খবর শুনেছি, আমরা আসতেছি। আমি ভকেশনাল মোড় থেকে আনন্দবাজার এসে দেখি তারা আনন্দবাজারে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর আমি তাদের নিয়ে আসি।
কুড়িগ্রাম ফায়ারসার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মনোরঞ্জন রায় বলেন, ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়, এরপর আরও একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তিনি আরও বলেন, যতদ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আমরা সবসময় চেষ্টা করি। এক্ষেত্রে জনগণকে আরও সচেতন থাকতে হবে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে যত দ্রুত সম্ভব ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে। আমি লোক পাঠিয়েছি। তারা ফরম ফিলাপ করে নিয়ে এসেছেন।ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।