মোঃ নাঈম হাসান ঈমন ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় সদর ইউনিয়নের বিষখালী নদীতে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ৭০ একর জমি নিয়ে নদীর বুকে জেগে উঠেছে এক বিশাল চর। “ছৈলা গাছ” এই চরের মূল আকর্ষণ। এখানে এলে দেখা মিলবে প্রায় লক্ষাধিক ছৈলা গাছের। এই গাছের নামেই মূলত নামকরণ হয়েছে চরটির।
তবে, ছৈলা ছাড়াও এখানে কেয়া, হোগল, রানা, এলি, মাদার, আরগুজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছে ঘেরা। দেখা মিলবে শালিক, ডাহুক আর বকের ঝাঁকের। গাছে গাছে রয়েছে মৌমাছির বাসা। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে অভয়াশ্রম হিসেবে আশ্রয় নিতে আসা শুরু করে অতিথি পাখিও। ভ্রমণ পিপাসুদের প্রতিদিনের পদচারণায় এখন মুখরিত “ছৈলার চর”। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছে চরটি। এখানে পা রাখতেই কানে বাজবে শোঁ শোঁ শব্দ। মূলত বাতাসে ছৈলাপাতার নাচনে এমন শব্দ তৈরি হয়। মাঝেমধ্যে গর্জন করে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে নদীর ঢেউ। সেই গর্জনের সঙ্গে পাখির কলকাকলি মিশে অন্যরকম এক আবহ সৃষ্টি করছে।
উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির দক্ষিণ জনপদ কাঠালিয়ার বিষখালী নদীর তীরে প্রাকৃতিক ভাবে জেগে ওঠা চরটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ভিড় করছেন এখানে। ‘ছৈলার চর’ পর্যটন খাতের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও রয়েছে নানা সংকট। প্রতিকূল যাতায়াত ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এ স্থানে পর্যটকরা চিন্তিত থাকেন। তবু সেই সংকট উপেক্ষা করেই প্রকৃতির নয়নাভিরাম এই ছৈলার চর পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হচ্ছে। জানুয়ারি-মার্চ মাসেই মূলত পর্যটকের ভীড় থাকে ছৈলার চরে। বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সপরিবারে পিকনিকে আসে প্রকৃতির সাথে পরিচিত হতে।
তবে, স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ এখানে রয়েছে নানা সংকট। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে এই চর বলেও আশাবাদী স্থানীয়রা। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন ছৈলারচর স্থানটি পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তবে বাস্তবায়ন হয়নি ছয় বছরেও।