বিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ
সেন্টার দখল, ভোট গণনায় কারচুপি, বিজয়ী প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণা করে ১২টি কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার আরজি জানিয়ে সর্বমোট ২৪ জন কে অভিযুক্ত করে সিলেট নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন সদ্য সমাপ্ত বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী সেবুল মিয়া।
গত সোমবার ৩রা জুন সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী বিধিমালা ২০১৩ এর ৫, ৭ (৩) ধারার বিধান মতে উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত ইনসান আলীর পুত্র তাজুল ইসলাম আমমোক্তার হিসেবে সেবুল মিয়ার পক্ষে অভিযোগ পত্রটি দায়ের করেন। যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে নির্বাচনী মোকদ্দমা নং ১/২০২৪ ইং।
উক্ত মামলায় ৯জন প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং অফিসার, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, প্রিজাইটিং অফিসার সহ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব কে ও বিবাদী করা হয়েছে।
মামলার প্রধান অভিযুক্ত হলেন ;১। কাপ পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী সুহেল আহমদ চৌধুরী।
পরের তালিকায় অভিযুক্তরা হলেন; ২। আনারস মার্কার প্রার্থী এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ, ৩। টেলিফোন প্রতীকের আলতাব হোসেন, ৪। কৈ মাছ প্রতীকের গৌছ খাঁন, ৫। ঘোড়া প্রতীকের আব্দুল রোশন চেরাগ আলী, ৬। শালিক পাখি প্রতীকের প্রার্থী শমসাদুর রহমান রাহিন, ৭। আকদ্দুস আলী, ৮ মোহাম্মদ এস আলী এনামুল হক ও ৯ শফিক উদ্দিন।
বাকী অভিযুক্তরা হলেন ১০। বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার স্বর্ণালী চক্রবর্তী, ১১। সিলেট জেলার সিনিয়র নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান ১২। ১৪ নং কান্দিগ্রাম ভোট কেন্দ্রে নিযুক্ত প্রিজাইটিং অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান ভূইয়া, ১৩। ১৫ নং খাজাঞ্চি ইউনিয়ন ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুব আলম সরকার, ১৪। ২০ নং নোয়াগাঁও ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার খাদ্য পরিদর্শক মোঃ মিনার হোসেন, ১৫। ৩৩ নং আশুগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার বিজন সরকার, ১৬। ৫৪ নং মিরেরচর ১ ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মিজানুর রহমান, ১৭। ৫৮ নং বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইটিং অফিসার নজরুল ইসলাম, ১৮। ১২ নং ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মোঃ বিল্লাল হোসেন, ১৯। ২ নং লামাকাজি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মোঃ রেন্টু আলী, ২০। ১১ নং চন্দগ্রাম ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার কাউসার উদ্দিন, ২১। ৩৫ নং সিংরাওলী ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মোঃ নাঈম হোসেন, ২২। ৪০ নং দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার মোঃ আলীম উল্লাহ, ২৩। ৪ নং দিঘলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইটিং অফিসার শান্তিময় ভট্টাচার্য, ২৪। সচিব বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, ঢাকা।
অভিযোগের আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন ; বিগত ৮ মে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ১ম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা অস্ত্রের মহড়া, বিভিন্ন সেন্টার দখল ও তার এজেন্ট কে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে টেবিল কাস্টিং করান। নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইটিং অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তাগনের যোগসাজশে তার ফলাফল পাল্টে তাকে পরাজিত করে ১ নং বিবাদী কে বেসরকারি ভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করেন। ৮ মে’র নির্বাচনে ১ নং বিবাদী কে বেসরকারি নির্বাচিত ঘোষণার পর ১৪ই মে বেআইনি ভাবে বিশেষ গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। ১২ টি ভোট কেন্দ্রের ভোট পুনঃ গণনার দাবী জানান তিনি। ১২টি ভোট কেন্দ্রের ভোট পুনঃ গণনা করা হলে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন বলে উল্লেখ করেন।
তথ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতে ১ নং বিবাদীর ১৪ মে’র তারিখে বিশেষ গেজেট বাতিল পূর্বক সেবুল মিয়া কে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত মর্মে ঘোষণার আদেশ দিতে আদালতের ন্যায় বিচার কামনা করেন তিনি।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জজ কোর্টের বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এ এস এম এ গফুর।