এশিয়ান এক্সপ্রেস ডেস্ক: অভিযোগের অন্ত নেই। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেন তার প্রাইভেট চেম্বার। ইচ্ছে মতো যাওয়া-আসা করেন তিনি। এখানে দুুস্থরোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দেয়ার বিধান থাকলেও নিয়মিত নেন টাকা।
রোগীদের কাছে বিক্রি করনে বিনামূল্যের সরকারি ঔষধ ও। টাকা না দিলে অসহায় রোগীদের বকা-ঝকা করে তাড়িয়ে দেন তিনি।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রের, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নীলিমা রানী দাসের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
নানা অনিয়ম অভিযোগ উঠলেও প্রায় ২৫ বছর ধরে একই জায়গায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই এ ‘বাণিজ্য’ করছেন তিনি।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে দশঘর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কেন্দ্রে যাওয়া হয়। দেখা যায়, কাঙ্খিত চিকিৎসা ও ঔষধ না পেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বারান্দায় মলিন মুুখে ঘুরাফেরা করছেন রোগীরা।
কথা হয় তাদের সাথে। সকলেই নীলিমা রানী দাসের বিরুদ্ধে টাকা গ্রহণ ও রোগীদের সাথে অশুভ আচরণের অভিযোগ করেন।
নিজের অসুস্থ কিশোরী মেয়ে নিয়ে আসা নোয়াগাঁও গ্রামের আছিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, মা-মেয়েকে মাত্র ১০টি ট্যাবলেট দেন। আমি বিপি পরীক্ষা করতে চাইলে দাবী করেন ৩শ টাকা। কিছুদিন পূর্বে টাকা দিয়েই বিপি পরীক্ষা ও ঔষধ নিয়েছি। আজ টাকা না দিতে পারায় চিকিৎসা পাইনি।
শাড়ইল গ্রামের মুুহিবুুর রহমান বলেন, অসুস্থতার জন্যে পূর্বে সেবন করা এক পাতা ঔষধ চাইলে তিনি দূরব্যবহার করে আমাকে তাড়িয়ে দেন।
নীলিমা রানী গণমাধ্যম -কে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহিন। আমি দীর্ঘদিন ধরে দশঘরে আছি এবং সাধ্যমত মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। জানামতে ২৫ বছরের চাকুরী জীবনে কারো সাথে অশুভ আচরণ করিনি।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষিকা দিপা বেগম বলেন, গেল ১৩ সেপ্টেম্বর আমি চিকিৎসা নিতে গিয়ে উনাকে পাইনি। সকাল থেকে দুুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে ফোন করলে তিনি জানান আসতে আরো দেরী হবে।
এসময় ফোনে সমস্যার কথা জানালে তিনি ৫শত টাকা নিয়ে পরের দিন সাক্ষাৎ করতে বলেন।
নোয়াগাঁও গ্রামের আবদুল করিম জানান, এই মহিলার সেচ্ছাচারিতার কারনে আমরা খুব অসহায়। প্রতিবাদ করলে তিনি বলেন,‘ তার হাত অনেক লম্বা। কেউ কিছুই করতে পারবে না তার।’
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, বিনামূল্যের ঔষধ, পরিবার পরিকল্পনার সরঞ্জাম, মহিলাদের বিশেষ রোগের চিকিৎসাসহ সকল কাজেই তাকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে গরীব রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ করা তার কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার।
জানতে চাইলে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারুক আহমদ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল বলেন, অভিযোগ সত্য হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তথ্যসূত্র, বিশ্ব/ বিডি।