ফারুক আহমদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী দ্বিতীয় দফায় লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
সোমবার ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের গতকাল ছিলো প্রথম দিন। যার ফলে গতকাল থেকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনসমাগম বন্ধ, গণপরিবহণ এবং নিত্য পণ্যের দোকানপাট ব্যতীত সকল কিছু বন্ধ থাকার কথা থাকলেও লকডাউনের প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন (আজ মঙ্গলবার ) ৬ এপ্রিল বিশ্বনাথের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তার ভিন্ন চিত্র।
সরকাারি ঘোষণায় লকডাউন থাকলেও তা মানছেন না কেউ। বিশ্বনাথের লামাকাজী অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ঢিলেঢালা ভাবেই চলছে লকডাউন। কারো মধ্যে নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই। লকডাউনের বিধি নিষেধ সম্পর্কে নেই কারো ধারণা। এমনকি সড়কে চলাচল করছে সিএনজি অটোরিকশা-মাইক্রোবাস।
আজ লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও বিশ্বনাথ থানার পুলিশের একাধিক টিম মাঠে থাকলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছিল না। ছিল না মুখে মাস্কও। অনেকেই চায়ের দোকানগুলো দিয়েছেন আড্ডা।
তাছাড়া, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তিনজন নিয়ে সড়কে চলাচল করার কথা থাকলেও চার/পাঁচজন নিয়ে চলতে দেখা যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকে।
অফিস খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার সেই সুযোগে সড়কজুড়ে বিকল্প পরিবহনের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। সবমিলিয়ে সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিন অনেকটাই বলতে গেলে স্বাভাবিক ই ছিল বিশ্বনাথ এলাকার গাড়ি চলাচল।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিনই কোভিড-১৯ সংক্রমণের নতুন নতুন রেকর্ড ভাঙছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও। ফেব্রুয়ারিতে দুই শতাংশের ঘরে থাকা সংক্রমণের হার লাফিয়ে বাড়তে বাড়তে এখন ছাড়িয়ে গেছে ২৩ শতাংশে। করোনার ধাক্কায় যখন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ার উপক্রম তখন বছর ঘুরে আবারো লকডাউনে বাংলাদেশ।
দেশে করোনার এমন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে গত বছরের ৮ মার্চ দেশে যখন প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় তখনই নড়েচড়ে বসে সরকার। এরপর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবরের পর করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুতই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সেই ছুটি ৩১ মে পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এক বছর পর সংক্রমণ মোকাবিলায় আবারও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিল সরকার। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে দেশজুড়ে গতকাল সোমবার সকাল ৬টা থেকে এক সপ্তাহের শুরু হয় এ লকডাউন।