এলাহাবাদ আলিম মাদ্রাসার চার তলা ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হওয়ায় বিভিন্ন মহলের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও কিছু কথাঃ–লিখেছেনঃ ইমদাদুল হক যুবায়ের
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামেয়া ইসলামিয়া এলাহাবাদ আলীম মাদ্রাসার সম্প্রসারিত ক্যাম্পাসে চার তলা ভবন নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
গত (৫ এপ্রিল) ২০২১, সোমবার বেলা ১ ঘটিকায় উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নে অবস্থিত মাদ্রাসার সম্প্রসারিত নতুন ক্যাম্পাসে প্রবীন মুরব্বী আলহাজ্ব বাদশা মিয়ার সভাপতিত্বে নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, পশ্চিম সিলেটের গৌরব, সৎপুর দারুল হাদীস কামিল (এম এ) মাদ্রাসার সাবেক সুনামধন্য অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা আলহাজ্ব শফিকুর রহমান।
বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চরা জামেয়া দাখিল মাদারাসার সুপার মাও: ছালেহ আহমদ, অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে জামেয়া ইসলামিয়া এলাহাবাদ আলীম মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ মুখলিছুর রহমান, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা নিজামুল ইসলাম নওশা মিয়া, অত্র মাদ্রাসার বাংলা প্রভাষক আলতাফুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক নুর উদ্দিন, আরবী প্রভাষক মাওলানা ফারুক আহমেদ, কারী মাও ওলিউর রহমান, সৎপুর কামিল মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদ সদস্য হাজী আবুল লেইছ, দেওকলস হাফিজিয়া ফুরকানিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফিজ মুহিবুর রহমান, পীর শাহ তোফাজ্জুল হোসেন ভান্ডারী, মোহাম্মদ জবেদ আলী, চান মিয়া, আছকির আলী, মোহাম্মদ জমির উদ্দিন, সাংবাদিক নুর উদ্দিন, মোঃ আপ্তাব আলী, সমুজ আলী, শরিফ আহমেদ রাজু, ইসলাম উদ্দিন, রহিম উদ্দিন, মোহাম্মদ মখন মিয়া হাজী আকলিছ হোসেন ,আব্দুল মালিক, হাজী ময়না মিয়া, পীর আমিনুর রহমান, হাজী মনির মিয়া, দলিল লেখক নুর উদ্দিন, হাজী জামাল উদ্দিন, বশির উদ্দিন, মইন উদ্দিন, ওলিউর রহমান, শামসুল ইসলাম, সালেহ আহমদ, ফারুক আহমদ, মোহাম্মদ ফিরোজ আহমদ, কয়েছ আহমদ, এহসান মিয়া, মাহফুজুর রহমান, মতিউর রহমান, লাল মিয়াসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলাধীন অর্ধ শতাব্দীর বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপিঠ এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা (সিলেট)। যে বিদ্যানিকেতনটি খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেলিকোনা গ্রামে ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষাবিদ আল্লামা.এ.টি.এম. ওলিউর রহমান (রহ.)।
মাদরাসার স্বপ্নদ্রষ্টা:
ছাত্র জীবনেই মাওলানা ওলিউর রহমানের মনে রেখাপাত করে পরোপকার , সমাজ হিতেশী কর্মকান্ড, মানুষকে শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তোলা। এ সকল কাজের পরিচয় আমরা বিভিন্ন সময় পেয়েছি তিনির জীবনালেখ্য পর্যালোচনায়। তিনির সংস্পর্শে যিনি গমণ করেছেন তাঁকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন , অনুপ্রাণিত করেছেন পরামর্শ ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে। বুরাইয়া মাদ্রাসার সফলতা ও অগ্রযাত্রার পাশাপাশি তিনি নিজ এলাকা নিয়ে ও ভাবতেন আন্তরিক সুহৃদ্যতা নিয়ে। তার উজ্জল প্রমাণ তিনি পাখিচিরী নিবাসী মরহুম সাজিদুর রহমান ও নিজ গ্রামের অধিবাসী হাজী হুসিয়ার আলীর সার্বিক সহযোগিতা এবং এলাকাবাসীর আশঙ্কা উৎসাহে স্থানীয় গণ্যমান্য মুরবিবয়ানদের নিয়ে নিজ গ্রাম তেলিকোনায়“ (এলাহাবাদ) তেলিকোনা ফুরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা” প্রতিষ্ঠা করে তা বিভাগীয় মঞ্জুরী লাভ করান।
মাদরাসার সূচনা:১৯৭০ সালে নিজ বাড়িতে তাঁর পিতা মরহুম মোশাররফ আলী নামানুসারে “ মশরাফিয়া এইডেড বালিকা বিদ্যালয় ” স্থাপন করে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা এলাকায় নারী শিক্ষার দ্বার উম্মোচন করেন। কিন্তু ১৯৭১ সালে শুরু হয় আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিজ গ্রামের মরহুম তমিজ উল্লাহ্ সাহেব ভুমি দান করলে তিনি উক্ত ভুমিতে একটি অবৈতনিক প্রাইমারী স্কুল স্থাপন করেন, যা পরবর্তীতে তেলিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রুপে স্থায়িত্ব পায়। এখানে একটি কথা উল্লেখ করতেই হয়। ১৯৭২ সালে শিক্ষা বিভাগের নির্দেশে মশরাফিয়া এইডেড বালিকা বিদ্যালয় ও তেলিকোনা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় – এ দু’শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একীভুত হয়ে তেলিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভালকি আলী নগরের আলহাজ আব্দুন নুর মাষ্টারের সুদৃঢ আন্তরিকতা , আর্থিক সহযোগিতা, দৌলতপুরের সুফী হাবিবুর রহমানের নির্দেশে ’৭৩ সালে “ তেলিকোনা ফুরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৭৪ সালে মাদ্রাসার নামে আংশিক পরিবর্তন এনে “ জামেয়া-এ-ইসলামিয়া তেলিকোনা মাদ্রাসা ” নামকরণ করে দাখিল পর্যন্ত উন্নীত করেন। ১৯৮১ সালে এ প্রতিষ্ঠানে এসে যোগদান করেন সিলেটের অন্যতম এক শিক্ষাবিদ মাওলানা কাজী শাহেদ আলী সুপার হিসেবে।
মাদরাসার নামকরণ:
মাদরাসার বর্তমান নাম হলো- এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা। মাদরাসাটির প্রথম নামকরণ করা হয় “জামেয়া ইসলামিয়া তেলিকোনা ও ফুরকানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা।
প্রতিষ্ঠাকাল:১৯৭০ সালে মাদরাসাটির প্রথম যাত্রা শুরু হয় টিন, বাশঁ ও ছনের ছাউনি দিয়ে। মাদরাসা শুরু কালীন সময়ে প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা এ.টি.এম. ওলিউর রহমান। তৎকালীন সময়ে মাদরাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য মাওলানা এটিএম. ওলিউর রহমান এর সম্মানিত চাচা জনাব তমিজ উল্লাহ রহ. বাষট্টি শতক জমি দান করেন। জনাব তমিজ উল্লাহ রহ. মাদরাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করলে প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথ সহজ হয়।
মাদরাসার অনুমতি ও এম.পিও লাভে সহযোগিতাকারীগণের কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
আশি শতাব্দিতে জামেয়া-এ-ইসলামিয়া (এলাহাবাদ) তেলিকোনা মাদ্রাসা দাখিলের অনুমতি লাভ করে এবং এমপিও ভুক্ত হয়। আশি শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে আলিম ক্লাস খোলার অনুমতি প্রাপ্ত হয়। ১৯৯৯ সালে জামেয়া-এ-ইসলামিয়া নাম পরিবর্তন করে “ এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ” নামকরণের মাধ্যমে আলিম ক্লাসের কার্যক্রম শুরু হয়।
পহেলা জুলাই ২০০২ সালে আলিম ক্লাসের স্বীকৃতি লাভ করে। ২০০৪ সালে এমপিও এর অন্তর্ভুক্তি লাভ করে। তবে এতসবের নেপথ্যে যিনি নিরলস সাহায্য, সহযোগিতা ও অক্লান্ত পরিশ্রম প্রদান করে তেলিকোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এলাহাবাদ আলিম মাদ্রাসার উন্নতি, অগ্রগতি ও সফল অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে উত্তর বিশ্বনাথ বাসীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত মানুষ গঠনে সহায়ক ভুমিকা পালন করে গেছেন। তিনি আর কেউ নন, তিনি হচেছন মাওলানা ওলিউর রহমান।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা. এ. টি. এম. ওলিউর রহমান (রহ:) এলাকার ধনী গরিব হত দারিদ্র, দেশ বিদেশ সাবার সহযোগীতায় দ্বীনের আলো ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠান করেন। যে প্রতিষ্ঠানটি শুধু বিশ্বনাথের ইতিহাসের পাতায় নয় সিলেট তথা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান।
মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়নে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার
অত্র এলাকার ধনী, গরিব, অসহায়, দ্বীন-মজুর সবার অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে মাদরাসার দ্বিতল ভবন প্রতিষ্ঠা করেন মাওলানা এ.টিএম. ওলিউর রহমান। তৎকালীন সময়ে সুপারিন্টেন্ড কাজী মাওলানা শাহিদ আলী একাডেমিক ভবন নির্মানের হাল ধরেন; যার সুযোগ্য তথ্যাবধানে মাদরাসার দ্বীতল ভবন প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হয়। দ্বিতল ভবনে রয়েছে, মাদসার অফিস, লাইব্রেরী, শিক্ষক মিলনায়তন, ছাত্র মিলনায়তন ইত্যাদি। অফিসের সামনে রয়েছে একটি টিউবওয়েল। দ্বিতল ভবনের সামনে রয়েছে সুপরিসর খেলার মাঠ। ১৯৯২ সালের শুরুর দিকে মাদরাসায় আব্দুন নূর মাস্টার বিজ্ঞানাগার ভবন প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়; যা ১৯৯৩ সালে শেষ হয়। তখনকার সময়ে মাদরাসার সুপারের দায়িত্বে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আব্দুল করিম। এবং ১৯৯৩ সালের শেষের দিকে সরকার প্রদত্ত একাডেমিক ভবন প্রতিষ্ঠা হয়।
এবং মাদরাসা একাডেমিক ভবন ও উত্তরের (ফেসেলিটিজ বিল্ডিং) তার সময় তথা ১৯৯৩ইং সনে ভিত্তি প্রস্তর হয়েছিল তৎকালীন সময়ে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্বে ছিলেন মাওলানা রহমাতুল্লাহ (বড় হুজুর)। উল্লেখ্য যে, মাদরাসার দ্বিতল ভবন, আব্দুন নূর মাস্টার বিজ্ঞানাগার ভবন তার সময়েই করা হয়েছিল।
এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রতি বৎসরের হিসাব নিকাশ, আয়-ব্যায়, মাদ্রাসার উন্নয়নের প্রতি আল্লামা এটি.এম.ওলিউর রহমান রহ: এর ভুমিকা ছিল অগ্রগণ্য ও অতুলনীয়। মাওলানা এটিএম ওলিউর রহমান মাদরাসার উন্নয়নের জন্য নিয়মিত বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করতেন। যার মাধ্যমে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সব মাহফিলে ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষগণ উপকৃত হতো। এবং দ্বীনের আহবানে সাড়া দিয়ে নিজেদেরকে তাকওয়ার উপর গঠন করার খোরাক পেত। উক্ত মাহফিলে জনসম্মুখে মাদরাসার বার্ষিক আয়-ব্যয় এর হিসাব পেশ করা হত। যে মাহফিলগুলোতে বড় বড় আলেম উলামা ও পীর মাশায়েখগণ অংশগ্রহণ করে দ্বীনি নসিহত পেশ করতেন। মাহফিল উপলক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী যত গ্রাম বাজার ছিল সেগুলো থেকে চাউল, বাশ ও বিভিন্ন অনুদান দিয়ে গ্রামের মানুষগুলো মাহফিলে শরীক হতেন।
প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার
দীর্ঘ ৫০বছর যাবত ঐতিহ্য-গৌরবের সাথে শিক্ষার মান সম্প্রসারণের জন্য উপজেলায় মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে প্রতিষ্ঠানটি। যে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথম স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে যত সরকার এসেছে সবার সহযোগিতায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, এবং জেলা মহকুমা শিক্ষা বিভাগের প্রতিটা স্তর থানা পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা পর্যায় সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আশি শতাব্দির দিকে মাদরাসাটি সরকারী স্বীকৃতি লাভ করে।
দুটি প্রতিষ্ঠান যখন মাওলানা এ.টি.এম. ওলিউর রহমান তীলে তীলে গড়ে তুলেন তখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সরকার কর্তক প্রশাসনিকভাবে শিক্ষা মন্ত্রনালয়, ধর্ম মন্ত্রনালয়, জেলা,. মহকুমা, থানা, উপজেলা চেয়ারম্যান, থানা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসক, থানা মহকুমা ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এর চেয়ারম্যানসহ সবার সার্বিক সহযোগিতায় আজ দাড়িয়েছে আছে এলাহাবাদ আলিম মাদরাসা।
সিলেটের প্রথম বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান সাহেব ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল মান্নার এর পদচারণায় মুখরিত হয়েছিল মাদরাসার ক্যাম্পাস। মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় সবার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
গ্রামবাসীর অবদানের কথা স্মরণ ও তাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার
মাওলানা এটিএম ওলিউর রহমান সাহেব তেলিকোনা গ্রামে দুটি প্রতিষ্ঠান করতে গ্রামে প্রতিটি স্তরের মানুষের সহযোগিতায় এলাহাবাদ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুরব্বিগণ কেউ জিবিত আর কেউ পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। যেমন- হাজী হুশিয়ার আলী রহ., মোঃ তমিজ উল্লাহ রহ., হাজী আব্দুল আলী রহ
: চাচা ইসকন্দর আলী রহ., আব্দুল আজিজ রহ, বিএসসি আব্দুর রাজ্জাক, মামা আব্দুল লতিফ রহ, হাজী আসলম আলী,মোহাম্মদ আব্দুল কাদির .আলকাছ হোসেন .আফতাব আলী .আব্দুল হাসিম . হাজী নুরল ইসলাম হাজী সোনাফর আলী, আব্দুল মতিন, হাজী মছদ্দর আলী, হাজী আসদ্দর আলী, রুস্তম আলী, উস্তার আলী, পীর আব্দুল গণি, আব্দুল করিম, কটাই মিয়া, ইজ্জত উল্লাহ, বখশ উল্লাহ, মনোহর আলী, তমিজ উল্লাহ, তেরাব আলী, বাদশা মিয়া, নওশা মিয়া, নূর উদ্দিন, আব্দুস সালাম, আবুল কালাম, আব্দুর রউফ, রইছ আলী, তাহির আলী, জমির আলী, আব্দুল বারী, ময়না মিয়া, আব্দুল হুসনসহ গ্রামের প্রতিটা পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়। মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় সবার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
এলাকাবাসীর অবদানের কথা স্মরণ ও তাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার
মাওলানা এটিএম ওলিউর রহমান সাহেব এলাকার মানুষের সহযোগিতায় এলাহাবাদ আলিম মাদরাসাকে একটি পূণাঙ্গ প্রতিষ্ঠানের রূপ ধারণে সক্ষম হন। যেমন উল্লেখযোগ্য হলেন, বিলেত প্রবাসী আলহাজ্জ আব্দুন নূর মাস্টার রহ, সাজিদুর রহমান রহ., পাকিছিরি, আলহাজ্ব আবুল হুসেন রহ. নোয়াপাড়া, হাজী মখদ্দস আলী রহ কান্দি গ্রাম , ছেরাগ আলী বিলপার, হাজী জমসিদ আলী রহ. সহ আরও অনেক গুণী শিক্ষা দরদী ব্যক্তিবর্গ। শেষ পর্যন্ত আলহাজ আব্দুন নূর মাষ্টার সহ. তিনি নিজ নামে এলাহাবাদ মাদরাসায় ৪০ হাত বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং নবীর বাগানে দান করেন। মাদরাসার প্রতিবেশি গ্রাম সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রাম এর অন্যতম হলো- নোয়াগাও, পশ্চিম নোয়াগাও, পাহাড়পুর, কৃসনপুর . পয়াগমহল .আকিলপুর .কিশের পুর .মিজার গাঁও . কাবিলপুর .চন্দ্রগ্রাম .আতাপুর . দুর্লভ পুর. ইসলামপুর . সৎপুর .রামপাশা দোহাল .দলিপাডা আমর গাও, রগুপুর, গমরাকুল, কিশেরপুর, মাঠগাও, বাউনপুর, কান্দিগাও, খাজানশিগাও, পাকিছিরি, ভাটপারা, নোয়াপাড়া, তেঘরি, বিলপার, পালেরচক, রামধানা, আশুগঞ্জ, পদনাপুর, চারিগ্রাম, বন্দুয়া, দোয়ালসহ আরো অনেক গ্রাম এর সহযোগিতায় মাদরাসা আজ এ পর্যন্ত পুস্ফুটিত হয়েছে।মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
হিফজ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন যারা তাদের কৃতজ্ঞা স্বীকার:
বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব যারা পালন করেছেন তারা হলেন- সর্বজনাব হাফিজ আব্দুল হান্নান (মিজার গাঁও ), হাফিজ মাও: আবদুস সুবহান (হিফজ বিভাগ (কানাইঘাটী), হাফিজ মাহমুদ (জকিগঞ্জী), হাফিজ শামছুল হক (কানাইঘাটী), হাফিজ ইয়াহইয়া (সৎপুরী), হাফিজ ছামির আলী (ভুলাগনজ)। মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় হিফজ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন যারা তাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
মাদরাসার সুপারের দায়িত্বে ছিলেন যারা তাদের কৃতজ্ঞা স্বীকার:
মাদরাসার সুপার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেন তাদের অন্যতম হলেন কাজি মাও: শাহেদ আলী (সুনামগঞ্জী), মাও: আরশাদ আলী (প্রতাপ পুরী) সিলেট। মাও:সিরাজ উদ্দীন (ছাতকী) মাও:আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী (মুন্সীরগাও) সিলেট, আব্দুল করিম (জামালপুর) (ভারপ্রাপ্ত), মাও: রহমতউল্লাহ (বড় হুজুর) সুনামগঞ্জী (ভারপ্রাপ্ত)। মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় মাদরাসার সুপারের দায়িত্বে ছিলেন যারা তাদের কৃতজ্ঞা স্বীকার করেছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি হলেন আবুতাহির মোহাম্মদ হোসাইন
যাদের নাম পাথরে বাধাই রয়েছে তাদেরকে কৃতজ্ঞচিত্ত্বে স্বরণ
এক কালিন দশ হাজার টাকা বা অনুদান দিয়েছেন এমন যারা হলেন- জনাব মাওঃ হাবিবুর রহমান-দৌলতপুর, জনাব মাষ্টার আব্দুন নুর –আলীনগর, জনাব হাজী আব্দুল আহাদ –আলীনগর, জনাব হাজী আব্দুর রব –আলীনগর, জনাব মাওঃ এ. টি. এম. ওলীউর রহমান –তেলিকোনা, জনাব তমিজ উল্লাহ –তেলিকোনা, জনাব হাজী আব্দুর রশীদ –তেলিকোনা, জনাব রাবেয়া আখতার –তেলিকোনা, জনাব হাজী আব্দুস সবুর –তেলিকোনা, জনাব হাজী রুশন আলী –কুরিখলা, জনাব নুরুন নাহার –আলমপুর, জনাব মৌঃ আব্দুল হান্নান –চানপুর, জনাব হারুন আহমদ- বুরাইয়া, জনাব রফিকুর রহমান- বুরাইয়া, জনাব রফিকুল হক –ঘাসিগাঁও, জনাব হাজী সুনাফর আলী- প্রয়াগমহল ,জনাব হাজী আবুল লেইছ- সৎপুর, জনাব মোঃ আবুল কাশেম –দেওকলস, জনাব সামশুল হক-(কাজী মঞ্জিল) বিশ্বনাথ, জনাব কুতুব আলী –সিংরাওইল, জনাব রফিক মিয়া শীন্মতপুর, জনাব আব্দুল খালিক –কান্দিগ্রাম, জনাব জমসিদ আলী -পালের চক। মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় যাদের নাম পাথরে বাধাই রয়েছে তাদেরকে কৃতজ্ঞচিত্ত্বে স্বরণ করছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
যাদের পদচারণায় মুখরিত হয় এ বিদ্যাপিঠ:
১৯৭০ সনে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পর থেকে যারা বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন তাদের অন্যতম হলেন- কর্ণেল আতাউল গণি উসমানী, কর্ণেল তৈয়বুর রহমান, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল মান্নান। তৎকালীন সময়ের সিলেট জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ, হাবিবুর রহমান ও বিভাগীয় হাইকমিশনার হাবিবুর রহমান। সিলেটের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম হলেন- মন্ত্রী-তৈমুর রাজা .এম.পি নুরুল ইসলাম খাঁন. এম পি মাকসুদ ইবনে আব্দুল আজিজ, এম পি শাহ শফিকুর রহমান এম.ইলিয়াস আলী .এম.পি.ইয়াহইয়া চৌধুরী -জামিল চৌধুরী, আর কে ধর , মরতুজ আলী, হাজী রইছ আলী সিলেটের বিশিষ্ট গন্য মান্য প্রমুখ। বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ আসনে নির্বাচিত বিভিন্ন মেয়াদের এম.পি গণের পদচারণায় মুখরিত হয়েছিল এ দ্বীনি বিদ্যাপিঠ।
বহির্বিশ্ব সহ দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষক হিসেবে এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থী এখান থেকে পাস করে দেশও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। যারা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সমাসীন হয়ে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় তাদেরকে কৃতজ্ঞচিত্ত্বে স্বরণ করছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
মাদরাসার নতুন ভবনের জন্য ভূমি দান
মাদরাসার আগের ছিল ৬২ শতক জায়গা। ২০১৪ সালে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ওলিউর রহমান মারা যান। মারা যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠাতার সহধর্মীনী মাদরাসার আজিবন দাতা সদস্যা শিক্ষাবিদ রাবেয়া আক্তার সভাপতি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এম.পি মুকাব্বির খানের মাধ্যমে প্রাপ্ত মাদরাসার নতুন বিল্ডিং নির্মানের জন্য প্রতিষ্ঠাতা পরিবার আরো ৩৪ শতক জায়গা মাদরাসায় দান করেন। আগের ৬২ শতক ও নতুন দানকৃত ৩৪ শতক মোট ৯৬ শতক জায়গার মধ্যে সরকার থেকে প্রাপ্ত ৪ কোটি টাকার নতুন বিল্ডিং এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের আয়োজন করা হয় মাদরাসার পক্ষ থেকে।
নতুন ভবনের উদ্বোধন:
২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর সোমবার বিশ্বনাথ উপজেলার তেলিকোনা এলাহাবাদ ইসলামি আলিম মাদ্রাসার সরকারী অর্থায়নে ৪র্থ তলা ফাউন্ডেশনের নতুন একাডেমীক ভবনের ভিত্তি প্রস্হর স্থাপন করেন সিলেট -২ আসনের সংসদ সদস্য জনাব মোকাব্বির খান এমপি ।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সৎপুর কামিল মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা শফিকুর রহমা, খাজাঞ্চি ইউনিয়নের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান পীর মোঃ লিয়াকত হোসাইন, বর্তমান চেয়ারম্যান তালুকদার মোঃ গিয়াস উদ্দিন,মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার সু-যোগ্য সন্তান যুক্তরাজ্য প্রবাসি ইমাম মাও নুরুর রহমান ও মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, মাদ্রাসার সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক এটিএম নুরুদ্দিন,আরবী প্রভাষক মাওলানা হরমুজ আলী, শারিরিক শিক্ষক ইশাদ উল্লাহ,এলাকাবাসির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন তেলিকোনা গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী ফকির শাহ তোফাজ্জুল হোসেন ভান্ডারী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবুল ফজল, মাওলানা রহমত উল্লাহ, (বড় হুজুর) মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা সালেহ আহমদ, মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা আব্দুল মোমিন, ইমাম.মাওলানা নুরুর রহমান, ক্বারী ওলীউর রহমান, মৌলভী সাইদুর রহমান হাউসা .পীরজাদা মৌলভী আবুল লেইছ সৎপুরী .হাফিজ মৌলভী মুহিবুর রহমান দেওকলস হাফিজিয়া মাদরাসা.মাও.মুহামমদ আল-মাসুম, মাধবপুরী তেলিকোনা গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি হাজী বাদশা মিয়া,সৌদি আরব প্রবাসী হাজী নুরুল হোসেন,হাজী আখলিছ হোসেন,মোঃ চান মিয়া,ফকির পীর সামসুল ইসলাম তোতা মিয়া, মৌলভী সুরুজ আলী মোঃনুর মিয়া, আজিজুর রহমান (গাবরু) মোঃ জবেদ আলী, আছকির মিয়া,ময়না মিয়া, সমছুল ইসলাম,সপিক উদ্দিন, মাওলানা আবুল বশর,তরুন সমাজ সেবক মোঃরাজুক আহমদ রাজু ,মোঃ খোয়াজ আলী,নোয়াব আলী,সিরাজ মিয়া, মেম্বার,আমির উদ্দিন মেম্বার, আমিনুর রহমান চুনু,মাসুদ আহমদ,ফারক মহরির,শাহ মোঃ গোলাম কিবরিয়া জিয়া,আবুল কালাম, ছমরু মিয়া,মুজাহিদ আলী,সাহাব উদ্দিন,হাফিজ কয়েছ আহমদ ,ফরিদ মিয়া .ধন মিয়া .উদিয়মান তরুন সমাজের কর্নধার আর-রাহমান এডুকেশন ট্রাষট এর সেক্ষরেটারী এম.মাসুদ আহমদ , আর-রাহমান এডুকেশন ট্রাষট সহ সভাপতি.মাও:এম.এ.মালিক . হাফিজ.মাও:কাজল বদশা .এম.মওছুফ আহমদ .এম.ছালেক আহমেদ.সিলেট, হাজী জমির উদ্দীন .এম.মসউদ আহমদ মুফাসসির .এম.মাহফুজুর রহমান.ইসলাম উদ্দীন প্রমুখ। এতে স্থানীয় ও জাতীয় ইলেক্ট্রনিকস ও প্রিন্সি পত্রিকার সাংবাদিকদের অন্যতম ছিলেন NTVর রিপোর্টার সাংবাদিক এম.মিলাদ আহমদ, এম.নুর উদ্দীন . এম.কয়েছ আহমেদ . অশিত বাবু প্রমুখ। মাদরাসার বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় আজ তাদেরকে কৃতজ্ঞচিত্ত্বে স্বরণ করছেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবার।
নতুন বিল্ডিং এর কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন, এম.পি, মন্ত্রী, সবাই যারা প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট তারা সবাই খুশি।দেশের স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান এলাহাবাদ আলিম মাদরাসা। এলাকাবাসীসহ সবাই চায় প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন সবার সহযোগিতায় এগিয়ে যাবে তার মাকসুদে মানজ্ঞিল পানে। আল্লাহ যেন সবার খেদমত কবুল করেন। আমীন।