স্টাফ রিপোর্টার : হঠাৎ করে ভারতীয় পিয়াজ আমাদানী বন্ধ হয়ে পড়ায় দেশ জুড়ে পিয়াজের বাজারে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। পিয়াজের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রনে দেশ ব্যাপি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকার পরও নিয়ন্ত্রন হচ্ছে না বাজার মূল্য। দেশের বড় বড় শহরগুলোতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ৩০ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রি চালিয়ে গেলেও গ্রামগঞ্জে এর কোন ব্যবস্থা না থাকায় নিম্ম আয়ের জনগোষ্ঠী এই সুবিধা থেকে রয়ে যাচ্ছে বঞ্চিত।
এদিকে একশ্রেণী অসাধু ব্যবসায়ী কোন প্রকার নিয়ম নীতি না মেনে, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিজের মত করে অধিক মোনাফার লোভে যতেচ্ছা পিয়াজ বিক্রিতে রয়েছে সরব।
মফস্বল এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা এখন সময়ের দাবী বলে ক্রেতাদের আহবান। প্রশাসনের নজরদারি ছাড়া অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরা যাবে না বলেছেন অনেকেই।
আজ সরজমিনে বিশ্বনাথ উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে পিয়াজের অনিয়ন্ত্রিত বাজার মূল্য লক্ষ করা গেছে। উপজেলা সদরে অবস্থিত বিশ্বনাথ বাজার, রামপাশা বাজার, রাজাগঞ্জ বাজার, বৈরাগী বাজার, প্রীতিগঞ্জ বাজার, মুফতিবাজার, লামাকাজী বাজার, খাজাঞ্চী রেল ষ্টেশন বাজার ঘুরে দেখা গেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রির দৃশ্য। গত ৩/৪ দিন ধরে পিয়াজের বাজার এমনই অবস্থায় রয়েছে বলে জানান পিয়াজ খরিদ করতে আসা জমির আলী। তিনি বলেন, আমরা নিম্ম আয়ের মানুষ, এতো দামে পিয়াজ কিনে খাওয়া বিরাট কষ্টকর। দৈনিক রোজগারে সিংহভাগ পিয়াজের পিছনে ব্যয় করতে হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রনের কেউ নেই।
এদিকে পিয়াজের অস্থির মূল্য নিয়ে উপজেলার রামপাশা বাজারের পাইকারি দোকানদার ইরন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান ভিন্ন চিত্র। তিনি পিয়াজের বাজারমূল্য এভাবেই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশি পিয়াজ তিনি ৬০টাকা দরে কিনে এনে ৬৫ টাকায় পাইকারি বিক্রি করেন। বিদেশি পিয়াজ ৫৮টাকায় কিনে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। উত্তর বিশ্বনাথ এলাকার হাট-বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তার নিকট থেকে পাইকারি কিনে স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করে থাকেন পিয়াজসহ নানান কাঁচামাল।
এছাড়া হিরন মিয়া জানান, চিকন মুসুরডাল ১২০ টাকা, পামওয়েল ৯৫ টাকা, ছোলা ৭০টাকা, সুয়াবিন ১০৫/১১০টাকা, চিনি ৬০টাকা, আটা ৩০ টাকা করে পাইকারী বিক্রি করছেন।
ভোগ্যপণ্যের হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ম আয়ের মানুষেরাই বিপাকে পড়েন বেশি। ক্ষয়-ক্ষমতার বাহিরে পূন্য মূল্য, প্রকৃত ওজনের তারতম্য, মূল্য তালিকা না থাকা, প্রশাসনে নজরদারি না থাকায় অনেক ক্রেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক চেয়ারম্যানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনিয়ন্ত্রিত বাজারমূল্য নিয়ে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে বারবার তুলে ধরা হয়েছে কিন্তু প্রশাসন কোন প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না, বিষয়টা দুঃখজনক। এব্যাপারে দ্রুত গ্রামগঞ্জের প্রতিটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা খুবই জরুরী। খেটে খাওয়া মানুষের স্বস্থির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের সাবধান না করলে বাজার নিয়ন্ত্রন হবে না। তাই তিনি জরুরী ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনায় জোর দাবী জানান।