মো আব্দুল হালিম,উপজেলা প্রতিনিধি বিশ্বনাথ : আজকের তরুণরাই পরবর্তী বাংলাদেশের কর্ণধার। যে দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশই তারুণ্য নির্ভর তাঁর ইতিবাচক পরিবর্তন চাইলেই সম্ভব। প্রবাদ আছে”তরুণরা দাঁড়ালে হারবেনা দেশ/তরুণরাই আমাদের বাংলাদেশ।” এরকমই একটি সুন্দর, নির্মল ও সম্ভাবনাময় সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য অন্তরে নিয়ে তরুছায়ার যাত্রা। বলছিলাম তারুণ্যের উচ্ছ্বাস “তরুছায়া’র” কথা।
বাংলাদেশের উন্নত জেলাগুলোর মধ্যে সিলেট অন্যতম। এই জেলার একটি মডেল উপজেলা বিশ্বনাথ। যার রয়েছে নিজস্ব কতগুলো বৈশিষ্ট্য। এর মধ্যে একটি হচ্ছে উপজেলার প্রায় অঞ্চলেই রয়েছে সচেতন যুব সমাজের ভিন্ন ভিন্ন নামে সামাজিক সংগঠন।এরই ধারাবাহিতায় ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর প্রান্তে লামাকাজী ও খাজাঞ্চি ইউনিয়নের কয়েকজন স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে পথচলা শুরু তরুছায়া নামের সংগঠনটি।যে সমাজের পলিমাটি, ধূলিকণার স্পর্শে সংগঠনের কর্মীদের বেড়ে ওঠা সেই সমাজের প্রতি তাদের দায়িত্বের জায়গাটা সুবিশাল।তারা ইচ্ছা করলেই এ দায় সরাতে পারে না। তরুছায়া বিশ্বাস করে তাদের হাত ধরে শুরু হওয়া ইতিবাচক পরিবর্তন একদিন একজন থেকে দুজন, দুজন থেকে চারজন,চার থেকে বারো এভাবে হাজার, সহস্র, লাখো কিংবা কোটি মানুষের ভেতরে সঞ্চার হবে। এভাবেই বদলাবে সামাজিক সংগঠনটি সমাজ,চারপাশ, বদলাবে পুরো বাংলাদেশ। হয়তো কর্মীরা এ সমাজের আমূল পরিবর্তন করতে পারবো না, হয়তো শত বাধা বিপত্তি, ঝড় জঞ্ঝা আসবে। তবুও তারা শুরু করতে পারে।সংগঠনের সদস্যরা অন্যরকম এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেই পারে।
তরুছায়া প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সমাজের ছোট বড় নানা বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষাবিস্তার, রক্তদান, আর্ত-মানবতার সেবা, শিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদি বিষয়ে তরুছায়া অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হয় কুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে ২০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় বিশেষ শিক্ষাবৃত্তি।২০১৮, ১৯ খ্রিষ্টাব্দে এস.এস.সি/দাখিল-এইচএসসি/আলিম উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংর্ধনা প্রদান ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের দেয়া হয় বিশেষ শিক্ষাবৃত্তি ও সম্মাননা। তাছাড়া নিয়মিতভাবেই তরুছায়া ব্লাড ডোনেশন গ্রুপের মাধ্যমে সেচ্ছায় রক্তদান করাও তরুছায়ার অন্যতম সাফল্য।
করোনাভাইরাসের মহামারীতে যখন খেটে খাওয়া দিনমজুর অসহায় মানুষ নিরুপায় অসহায়,তখন তাদের পাশে দাঁড়ায় তরুছায়া। এভাবেই নানারকম সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তরুছায় এখন বিশ্বনাথের অন্যতম একটি সেরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু সংগঠনের সকল সদ্যসরাই শিক্ষার্থী হওয়ায় অনেক সময় ইচ্ছা স্বত্ত্বেও তারা অনেক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে পারেনা।মূলত তরুছায়া একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সংগঠন কর্মীরা বেশিরভাগ কার্যক্রমেই বিত্তবান চ্যরিটি ডোনারদের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। এলাকার বিত্তবান ও প্রবীণদের পাশে নিয়ে তরুছায়া এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে বলীয়ান হয়ে তরুছায়া কাজ করে যাচ্ছে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মানের প্রয়াসকে সামনে রেখে। শতবর্ষী হোক তরুছায়। ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের সবুজ প্রান্তরের সাথে মিশে থাকুক তরুছায়া, সমাজ বিপ্লবের অন্যতম প্লাটফর্ম হিসেবে।
সকল বিত্তবানরা যুক্ত হউক এমন মহান উদ্যোগে এটাই তরুছায়ার সৈনিকদের মানবিক চাওয়া।