মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে “বাসার স্মৃতি” নামের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। এ ঘটনায় সেখান থেকে ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এবং ৩০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে রাজাপুরের একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু হয়। আইরিন আক্তার (২২) বরিশালের হিজলা উপজেলায় শশুর বাড়ি থেকে রাজাপুরের বলাইবাড়ি বাবার বাড়ি বেরাতে আসেন ১৬ মাসের শিশু কন্যা রিপা মনিকে নিয়ে। আড়াই বছর আগে পারিবারিক ভাবে হিজলা উপজেলায় রিপন বেপারীর সাথে বিয়ে হয় আইরিনের।
শনিবার (২২ জুলাই) আইরিন তার শিশু কন্যা রিপা মনি ও ছোট ভাই নয়ন হাওলাদার (১৬) কে নিয়ে শশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি নামক ষ্টান থেকে ভান্ডারিয়া থেকে ছেড়ে বরিশালগামী “বাসার স্মৃতি” নামের একটি বাসে উঠে। বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে বাসটি ঝালকাঠি সদরের ছত্রকান্দা এলাকার গাবখান ধাঁনসিড়ি ইউনিয়নের কাছে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে পুকুরে উল্টে পড়ে যায়। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মুহুর্তের মধ্যেই শিশু, বৃদ্ধ ও নারী সহ ১৭ জনের তাজা প্রাণ ঝরে যায়। কান্নায়, আহাজারি আর লাশের মিছিলে ঝালকাঠির আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যায়। জেলা জুরে নেমে আসে শোকের ছায়া। নিভে যায় আইরিন, তার কোলে থাকা ১৬ মাসের শিশুকন্যা রিপা মনি ও সাথে থাকা ছোট ভাই নয়ন হাওলাদারের প্রাণ।
এ মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা আইরিনের পরিবার। ছেলে, মেয়ে ও নাতনির অকাল মৃত্যুতে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন আইরিনের বাবা নূরুল ইসলাম ও মা নূর নাহার বেগম সহ স্বাজনরা। ১৬ মাসের শিশু কন্য রিপা মনি, স্ত্রী আইরিন ও শালা নয়নকে হারিয়ে পাগল প্রায় আইরিনের স্বামী রিপন বেপারী। আইরিনের বাবার বাড়ি এখন শোকের মাতম, কান্না আর আহাজারিতে যেনো ফেটে যাচ্ছে স্বজনদের বুক।
আইরিনের স্বামী রিপন বেপারী, আইরিনের বাবা মা সহ স্বাজনরা এ দুর্ঘটনায় জন্য দায়ী করেছেন বাস চালককে। দুর্ঘটনায় নিহত আইরিন ও তার শিশু কন্য রিপা মনি ও ভাই নয়ন হাওলাদারকে তার বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।