আশরাফুল ইসলাম, খুলনা সদর প্রতিনিধি: ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সঃ) অবমাননার প্রতিবাদে ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচীতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির প্রস্তুতি হিসেবে সকাল ১০ টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে দূতাবাস ঘেরাও পূর্বক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে দশটায় সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অনেক আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট ও এর আশ পশের এলাকা, বিশ্বনবীর অবমাননার প্রতিবাদ জানাতে দল-মত নির্বিশেষে সমাবেশে অংশ গ্রহন করে নবীপ্রেমিক জনতা দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের ও সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা দেলোয়ার হোসেন শাকিল সঞ্চালনায় দূতাবাস ঘেরাও পূর্বক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর ও চরমোনাই পীর মাওলানা মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন ফ্রান্স সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে পুলিশ পাহারায় বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে বিশ্বের মুসলিমদের কলিজায় আঘাত করেছে ফ্রান্স প্রধানমন্ত্রী ম্যাক্রো ব্যঙ্গ প্রদর্শন করে নিজেকে ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। অবিলম্বে
ব্যঙ্গ প্রত্যাহার করে বিশ্ব মুসলিমের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে অন্যথায় বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দের ঘোষণা সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে ফ্রান্সকে বয়কট ও ফ্রান্সের পণ্য বর্জন করার কথাও জানান তিনি, পীরসাহেব বলেন জাতিসংঘ বিশ্বশান্তির নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠিত হলেও বিশ্ব মুসলমানের সার্থের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জাতিসংঘ ও ওআইসি কে ফ্রান্সের এই জঘন্য আচরণের কঠোর প্রতিবাদ জানানোর আহবান জানান তিনি, চরমোনাই পীর বাংলাদেশ সরকার কে সংসদে ফ্রান্সের জঘন্য কর্মকাণ্ডের নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানান, তিনি বলেন সরকার যদি দেশের মুসলমানদের পক্ষে অবস্থান করতে ব্যর্থ হয় তাহলে জনগণ সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
ফ্রান্সে প্রকাশ্যে রাসুল (সঃ) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের প্রতিবাদ এবং ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও পূর্বক সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী, আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা ইমতিয়াজ আহমেদ,
কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা নেছার উদ্দিন,মাওঃ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, জি এম রুহুল আমিন, মুক্তিযুদ্ধা আবুল কাশেম প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ ইসলাম ও মহানবী (সঃ) সম্মান রক্ষার্থে ৫দফা দাবি তুলে ধরেন
১. বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ফ্রান্স সরকারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক নিন্দা জানাততে হবে।
২. ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের সকল প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
৩.ইসলাম ও রাসূল (সঃ)কে অবমাননার জন্য ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি কে প্রকাশ্যে বিশ্ব মুসলমানের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
৪.অবিলম্বে ওআইসিতে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনতে হবে। ৫.বাংলাদেশে ইসলাম ও মহানবী (সঃ) বিরুদ্ধে কটূক্তি বন্ধে কঠোর আইন পাশ করতে হবে।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল গনমিছিল নিয়ে গুলশান দিকে রওনা হয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা, মিছিলটি শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ কাঁটা-তারের ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলকে আটকে দেয়, বাধার মুখে সেখানেই তাদের কর্মসূচির ইতি টানতে হয় এসময় বিক্ষুব্ধ নেতা- কর্মিরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে- বিশ্বনবীর অপমান -সইবে না রে মুসলমান৷
ম্যাক্রোর চামড়া- তুলে নেব আমরা।
জেগেছে রে জেগেছে- মুসলমানরা জেগেছে। বয়কট বয়কট-ফ্রান্সের পণ্য বয়কট। ঘেরাও হবে ঘেরাও হবে -ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাও হবে। ইত্যাদি প্রতিবাদী স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। উত্তেজিত নেতা কর্মিদের শান্ত হওয়ার আহবান জানিয়ে পীর সাহেব চরমোনাই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন
কর্মসূচিঃ
এক. আগামী ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল।
দুই. ৩০শে অক্টোবর শুক্রবার বাদ জুম্মা ইমাম-খতিবদের নেতৃত্বে দল-মত-নির্বিশেষে প্রতিটি মসজিদ থেকে মুসল্লিদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল
তিন. নভেম্বর মূর্তি নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে রাজধানীর ধোলাইপাড় চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ।
সমাবেশে প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন বিশ্বনবীর অবমাননা সহ্য করা হবে না। তিনি বিশ্ব মুসলিমকে এর প্রতিবাদেএক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন সমস্ত কুফরী শক্তি এক্যবদ্ধ, আমাদেরও এক্যবদ্ধ হতে হবে। বিশ্ব মুসলমানের কলিজার টুকরা বিশ্বনবী (সঃ) এর অবমাননা কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না। সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আলেম-ওলামা ইসলামী চিন্তাবিদগন বক্তব্য রাখেন।