রাকিব হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামের সার ডিলার সফিকার রহমান BCIC লোগো ব্যবহার করে অবৈধভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ সার বস্তা জাত করে প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সারের গোডাউনে কয়েক হাজার টন রাসায়নিক সার অবৈধভাবে মজুদ রেখে কোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
সারাদেশে যখন সরকার কৃষকের মুখে হাসি ফটাতে ইউরিয়া সারের পিছনে হাজার কোটি টাকা ভূর্তুকী দিচ্ছে আর সেই সময়ে বাংলাদেশের কৃষকের কপাল পোড়ার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী দেশ ও জাতির শত্রু বিএনপি নেতা সফিকার রহমান কৃষক সরকারকে ফাঁকি দিয়ে কয়েক কোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন! তিনি দিনে দুপুরে পাটগ্রাম পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডে সোহাগপুর আনন্দ বাজার কদমতলী এলাকায় তার নিজস্ব গুদামে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা আনুমানিক ৫০/৬০ টন জমাটবদ্ধ ইউরিয়া সার পাথর ভাঙ্গা ক্রাসিং মেশিন দিয়ে ভেঙে নতুন করে বিসিআইসির নতুন বস্তা ব্যবহার করে প্যাকিং করছেন বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। তিনি দীর্ঘদিন থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবৈধভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউরিয়া বাজারে দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে লাখ লাখ টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ ইউরিয়া সার পাথর ক্রাসিং মেশিন দিয়ে ক্রাসিং করেন। ক্রাসিংকৃত ইউরিয়া সার গুলো নতুন করে বিসিআইসি’র লোগো প্রিন্টকৃত বস্তায় প্যাকেটজাত মার্কেটে সরবরাহ করতেন অনায়াসে। যেন তা দেখার কেউ নেই।
একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সফিকার রহমানের দোকান থেকে বিগত বছরগুলোতে যারাই ইউরিয়া সার ক্রয় করেছে তাদেরই ফসলের মাঠে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে পাটগ্রাম কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন কিছুই জানি না, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা সরেজমিনে যা কিছু দেখেছি বা পেয়েছি তারেই প্রেক্ষিতে আমি উপরমহলকে অবগত করেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করবো, আরেকটি বিষয় পাটগ্রামে এই মহুর্তে যেহেতু পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ভূমি সহকারী কমিশনার নেই তাই তাকে জরিমানা করা হয়নি। এ বিষয়ে নির্বাহী ক্ষমতা আমার হাতে নেই,
তবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে জানালে তিনি এসে কাজ বন্ধ করে চলে যান তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিব, আরেকটি বিষয় পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ভূমি কমিশনার না থাকার কারণে তাকে জরিমানা করা হয়নি এ বিষয়ে কৃষি অফিসার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন নির্বাহী ক্ষমতা আমার হাতে নেই,
আমরা শফিকুর রহমানের সঙ্গে সরাসরি কথা বললে তিনি আমাদেরকে বলেন, সরকারের সকল মহলের কাছে জানানো হয়েছে এবং তারা বলেছে আপনি নির্দ্বিধায় কাজ চালিয়ে যান কোন সমস্যা হবে না, এই বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করে এবং পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করার জন্য বলে এবং আরো বলে আমার কিছুই হবে না,
উল্লেখ্য যে, কৃষি মৌসুমে স্যারের তীব্র সংকট দেখা দিলেও সফিকার রহমান উপজেলার কিছু অসাধু সার ডিলারের সাথে আঁতাত করে সারের দাম বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন গোডাউনে মজুদ করেন। অপর দিকে বাজারে সারের সংকট দেখিয়ে সারের দাম বাড়িয়ে দেয় সফিকারসহ বিএনপি জামাতের কিছু কুচক্রী সার ব্যবসায়ী। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই সকল ব্যবসায়ী দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন অপকর্ম। তবে অবৈধ সার ব্যবসায়ী সফিকার রহমান একজন বিএনপি’র পদধারী সিনিয়র নেতা এবং প্রভাবশালী তাই তিনি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সুকৌশলে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি কৃষি ফলন নষ্ট করার জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ ইউরিয়া, পটাশ, সালফারসহ বিভিন্ন রকমের সার এভাবে বাজারজাত করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করতেছেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ এসব সার জমিতে ব্যবহার করে ফসল কীটপতঙ্গ ভরে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তী সময়ে স্থানীয় কৃষি ব্যবস্থাপনার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে এমনটাই ধারণা করছেন সাধারণ কৃষকরা। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অবিলম্বে অসাধু সার ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
Leave a Reply