রাকিব হোসেন,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরশহরে গভীর রাতে এক লোকের দেখা মিলে রেলগেট এলাকায়। দেখে মনে হলো পলাতক কোন আসামী । একটু পর পাশের দোকানদার মাসুদ বলল, লোকটার বাড়ি দহগ্রামে। পাটগ্রাম হাসপাতালের ওদিক থেকে রেল লাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে আসা লোকটা খুব ধীরগতিতে হেঁটে পাকা সড়কের উপর দিয়ে যখন রেল লাইন পার হয়ে গালামাল দোকানদার সুলতানের দোকানের সামনে ব্যাগটা রাখলেন। তখন তার কাছে গিয়ে শিকল কেন পা’য়ে? ছবি তোলার অনুমতি চাইলে বলেন তুলেন। ছবি তুলে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনার বাড়ি কি দহগ্রামে? জবাবে তিনি বললেন, আমার শ্বশুরবাড়ি দহগ্রামে। নিজের বাড়ি মুন্সিরহাট। মুন্সীরহাট কোথায়? বেশ ভদ্র ভাষায় কথাবার্তা হচ্ছে। আবার জবাব দিলেন,তার বাড়ি মুন্সিরহাট জগতবেড় ইউনিয়নে। কবি বকুলের বাড়ির পাশে। বাবার নাম মোক্তার আলী। মা- বাবা বেঁচে আছেন। বললেন- হ্যাঁ।
বউ বাচ্চা আছে কি’না জানতে চাইলে বলেন, বউয়ের নাম নুরজাহান। এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। এত রাত বাড়ি যাবেন কেমনে? রিক্সা,ভ্যানও তো পাবেন না। পা’য়ের শিকলটা খুলে দিলে না’কি বাড়ি যেতে পারবেন। সে কারণে পাটগ্রাম থানায় ফোন দেয়া হয়। ডিউটি অফিসার বলেন,বাজারে টহলগাড়ী ডিউটি অফিসারের সাথে কথা বলতে। কল করা হলো। ওপাশ থেকে তিনি বললেন, ওসি বা ডিউটি অফিসার যদি বলেন তবেই তিনি রেলগেট আসবেন। রাত তখন দুই- আড়াইটা। পাঁচবার কথা বলা হয় তবুও পুলিশ বিষয়টা আমলে নিলেন না। নাম জিজ্ঞেস করা হলে বলে,,রবিউল ইসলাম অনেকে বেলাল নামে ডাকে তাকে। এবার রবিউল(বেলাল) বললেন, শিকলটা খুলে দেন। বলা হয় একটু অপেক্ষা করেন পুলিশ আসবে।তখন তারা শিকল খুলে দিবে। রেল লাইনের কাছে পাকা সড়কে বসে অপেক্ষায় থাকলেন রবিউল(বেলাল) কিন্তু পুলিশ আসলেন না। আবার তাকে বলা হল- শিকল কে লাগিয়েছেন, কেন লাগিয়েছেন? জবাবে বললেন,তার বাবা পায়ে শিকল পরিয়ে দুটো তালাও লাগিয়ে দিয়েছেন। এ সময় রবিউল নিজে বললেন,বউ বাচ্চা সবাইকে মারপিট করি।খুব মারি। ওরাও আমাকে মারে।এমন নিষ্ঠুর বাবাকে শাস্তি দিতে চাইলে রবিউল বলেন, না’ শাস্তি দেয়া যাবে না। বয়স্ক তো কষ্ট পাবে। রাত ৩ টা’র সময় এ প্রতিবেদকের কাছে রবিউলের শেষ দাবী ছিল পা’য়ের শিকলটা খুলে দেন। বাড়ি যাব। আইনী বেড়াজালে আটক এ প্রতিবেদক এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান ও ওসি ওমর ফারুখের মোবাইলে সংযোগ মিলেনি। সুস্থতার জন্য রবিউলকে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে করছেন অনেকে। প্রতিবেদকের আবারো জানতে চাওয়া পা শিকলে বেঁধে দেওয়া ব্যক্তির শাস্তি হবে কিনা বা চাও কি না অশ্রুসিক্ত দু’টি চোখে বলে বাবার শাস্তি কি ভাবে কামনা করি