রাকিব হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বুড়িমারী বাসীসহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বুড়িমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেওয়াজ নিশাত।
শুভেচ্ছা বার্তায় নেওয়াজ নিশাত বলেন, বছর ঘুরে আবার পবিত্র ঈদুল আযহা আমাদের ধারে সমাগত। ঈদুল আযহা মানুষকে ত্যাগ ও কুরবাণীর আদর্শে উজ্জীবিত করে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের অনুপ্রেরণা দেয়। মানুষ সকল ভেদাভেদ, হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে পরস্পর পরস্পরের নিকটবর্তী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
নেওয়াজ নিশাত আরও বলেন, দেশের মানুষ এমন এক সময় পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন করতে যাচ্ছে যখন দেশে এক ভয়ংকর নৈরাজ্য চলছে। মানুষের জীবন ও সম্পদের কোনো নিরাপত্তা নেই। কোভিড-১৯ এর আঘাতে আমাদের জীবন, সমাজ, সংস্কৃতি যেন বদলে গিয়ে এক অচেনা রূপ ধারণ করছে। মানুষের দিন অতিবাহিত হচ্ছে আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে। করোনা ভাইরাসের ছোবলে সারাদেশে বিনা চিকিৎসায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু এবং হাজারও মানুষের অসুস্থতার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আনন্দ ও ত্যাগের অনন্য মহিমায় উদ্ভাসিত পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। পবিত্র এই দিনে আমরা কোরবানির মাধ্যমে তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে থাকি। পাশাপাশি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন এবং মানুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে সবার মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করি। পবিত্র কোরআনের সুরা হজ্ব এর ৩৭নং আয়াতে বলা হয়েছে- ‘আল্লাহতায়ালার দরবারে কোরবানীর পশুর মাংস কিংবা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না, বরং তোমাদের তাকওয়া তাঁর কাছে পৌঁছায়। এভাবেই তিনি এগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যেন তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারো-এজন্য যে, তিনি তোমাদের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। আর সুসংবাদ দাও সৎকর্মপরায়ণদের।’ এবার আমাদের মাঝে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঈদ-উল-আযহা এসেছে। বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসের থাবা। বাংলাদেশেও এ অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণ। প্রতিদিনই আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অনেকে মৃত্যুবরণ করছেন। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ, অর্থনীতির অবস্থাও নাজুক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পরিস্থিতিতে জনকল্যাণমুখী নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। ঘোষণা করেছেন নানা প্রণোদনা। ফলে গরিব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। আমার বিশ্বাস, করোনাভাইরাস মহামারির সব অন্ধকার কাটিয়ে ঈদ-উল-আযহা সবার মাঝে আনন্দ বয়ে আনবে। কোভিড-১৯ এর দুর্যোগময় পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আমাদের ধৈর্য্য, সাহস ও শক্তি প্রয়োজন। আসুন, আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যে, তিনি যেন আমাদের সেই তাওফিক দেন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত/শান্তি কামনা করছি। পাশাপাশি তাদের পরিবারের শোক সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। ঈদ-উল-আযহা আমাদের শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয়। সঞ্চারিত করে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা। এ মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে। পবিত্র ঈদ-উল-আযহার আনন্দ ও ত্যাগের অনন্য মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন। এই দিনে মানুষে মানুষে প্রীতি ও বন্ধনের যোগসূত্র আরও সুদৃঢ় হোক। আসুন, সবাই মিলে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করে সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশগড়ার প্রত্যয়ে প্রযুক্তি নির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আসুন- আমরা গ্রহণ করি শপথ। ঈদুল আযহা সবার জীবনে বয়ে আনুক সুখ-শান্তিও সমৃদ্ধি, সমাজে সৃষ্টি হোক সম্প্রীতি ও মেলবন্ধন। তিনি বুড়িমারী সহ দেশের সকল জনগণকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বুড়িমারী ও পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীসহ সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের করোনা ভাইরাসের কারণে অসুস্থ রোগী ও অসহায় মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত প্রসারিত করার জন্য আহবান জানান। সে সাথে সবাই ভালো থাকুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, করোনা থেকে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখুন। দূরত্ব বজায় রেখে ঈদ জামাতসহ প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করি। সবাইকে আবারও জানাই পবিত্র ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক।