নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইল সদরের রূপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই জাহিদের বিরূদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি ও নিরীহ সাধারণ মানুষদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানবাহনের কাগজপত্র চেক করার নামে সাধারণ মানুষদের হয়রানি করেন। অথচ মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। সড়ক দিয়ে অবৈধ যানবাহন তার সামনে দিয়ে সহজে চলে যায় নগদ টাকার বিনিময়ে। কিন্তু বৈধ কাগজপত্র থাকা যানবাহনের মালিক ও চালক হয়রানীর শিকার হন টাকা না দেয়ার জন্য। তবে হাতে নগদ ধরিয়ে দিলে কোন সমস্যা হয় না। টাকা না পেলে নানা অজুহাতে গাড়ি ঠেকিয়ে রেখে সময় ক্ষেপন সহ হয়রানী করেন।
নড়াইল পৌরসভার ভাদুলি ডাঙ্গা গ্রামের রাজ মিস্ত্রী নজরুল ইসলামের ছেলে রাছেল, শরিফুল খাঁনের ছেলে রাসেদ খাঁন, ও হারুন মোল্ল্যার ছেলে নাইম মোল্ল্যা বলেন গত ১৪/০৫/২০২১ ইং তারিখ শুক্রবার ঈদের দিন রাত ১০টা ৩০মি: দিকে আমরা মটর সাইকেলে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় টিএসআই জাহিদ আমাদের গতি রোধ করে চার ঘন্টা আটকে রেখে মাদক দিয়ে চালান দেয়ার ভয় ভিতি দেখিয়ে ২০.০০০ টাক দাবি করেন এক পর্যায় বাড়ী থেকে সাত হাজার পাঁচশত টাকা এনে দিলে আমাদের ছেড়ে দেয়। ফাঁড়ির পাশেই কামরুল ও তার সুন্দরী স্ত্রী রাত-দিন চব্বিশ ঘন্টা ইয়াবা ও ফেন্সিডিল বিক্রি করে। কামরুলের সুন্দরী স্ত্রী ও নগদ টাকার কারনে সব কিছু চলছে নিরবে। গুঞ্জণ আছে কামরুলের বাড়ির সামনে দিয়ে টিএসআই জাহিদ অসময়ে হাটাহাটি করেন আরমুচকি হাসি দেন। কারনে অকারনে তাদের বাড়ির সামনের দোকানে গিয়ে আড্ডা দেন। মাঝে মাঝে কামরুল ও তার স্ত্রীর সাথে ফিস ফিস করে কথা বলেন। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সড়কের গাড়ী ঠেকিয়ে টাকা নেয়ায় ব্যস্ত থাকে। পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাঝে মধ্যে তাঁদের আটক করলেও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। আবার নিরীহ লোকজনদের ধরে ফাড়িতে আটক রেখে মাদকের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে। নড়াইল সদর পুলিশ ফাঁড়ির একশ গজের মধ্যে বাবু খানের ছেলে কামরুল ইসলাম (৩৫) দীর্ঘ দিন যাবত ইয়াবার ব্যবসা করে আসছে। ইয়াবা কারবারীর বিরূদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্বেও আটক না করে ঐ পথে চলাচল করা পথচারীদের প্রতিনিয়ত হয়রানী করে মাদক দিয়ে চালান দেয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে রূপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই জাহিদ এর বিরূদ্ধে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হয়রানীর স্বীকার স্থানীয় এক ব্যাক্তি জানান, গত ৮ মে দুপুরের দিকে তিনি নিশিনাথতলার দিকে যাচ্ছিলেন। টিএসআই জাহিদ ও সাদা পোশাকে থাকা এক কনষ্টেবল মটর সাইকেলযোগে এসে তার গতিরোধ করে। এরপর অশ্লিল গালি দিয়ে ইয়াবা আছে দাবি করে দেহ তল্লাশি করে। কোন কিছু না পাওয়ার পরও তারা কৌশলে টাকা দাবি করে। প্যান্টের বেল্ট ধরে বলতে থাকে ইয়াবা কোথায় রাখছিস,বের কর। এরপর ওই কনস্টবল কানের কাছে এসে বলে স্যারকে ১০ হাজার টাকা দে। তা-না হলে তোকে মাদক দিয়ে চালান দেয়া হবে। এসময় জনগনের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে তারা বেগতিক দেখে আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যান। এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা রমা রানী দাস জানান,কামরুল একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে দীর্ঘ দিন যাবত এখানে মাদক ব্যবসা করে আসছে। নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নিলু খাঁন সাহেবের কাছে নালিশ দেয়া হয়েছে। পুলিশ সব কিছুই জানে। কোন অদৃশ্য কারনে পুলিশ তাকে ধরে না। সেটা আমার কাছে রহস্যজনক। প্রফেসর আব্দুর রহিম বলেন,ফাঁড়ির পাশে কামরুল সহ একাধিক ব্যক্তির মাদক ব্যবসা পরিচালনা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। টিএসআই জাহিদ’র রহস্যজনক ভূমিকায় এলাকার পরিবশে নষ্ট হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, টিএসআই জাহিদ এর আগের কর্মস্থল ছিল সাতক্ষিরা। তিনি সেখানে এটিএসআই পদে থাকা কালে নানাবিধ অপকর্ম ও চাঁদাবাজি করে সমালোচনায় আসেন। স্থানীয়রা মাদক নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ জনগনকে হয়ারনীর হাত থেকে তার অপসারন দাবি করেছেন। নড়াইলের সুযোগ্য পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার) যেখানে ইতোমধ্যে মাদকের করাল গ্রাস থেকে নড়াইলকে অনেকাংশে মুক্ত করে ফেলেছেন। সেখানে খোদ পুলিশ ফাড়ির পাশেই মাদক বিকিকিনি জনমনে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। টিএআই জাহিদ’র নিকট জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ কৌশলে এড়িয়ে যান।