নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের প্রভাবাশালী ভূমিদস্যুদের দস্যুতা চলছেই। কোন ভাবেই দমন হচ্ছে না। এদের কালো থাবা হতে রেহাই পাচ্ছে না কেউ। সরকারি দলের ছত্র ছায়ায় ভমিদস্যুরা বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে দস্যুতা। অনেক সময় অসাধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় জালিয়াতি কাগজপত্র তৈরী করে অন্যের জমি গ্রাস করছে। জমি জবর দখল করে দেয়ার জন্যও গড়ে উঠেছে একাধিক সন্ত্রাসী লাঠিয়াল বাহিনী। চাহিদামত টাকা পেলেই বীরদর্পে ঝাপিয়ে পড়ে ওই সন্ত্রাসী বাহিনী। সশস্ত্র হামলা চালিয়ে জায়গা জমি দখল করে দিয়ে যাচ্ছে বীর বাহাদুররা। অনেক সময় প্রকাশ্যে পুলিশ পাহারায় এহেন দখলবাজি চলছে। এ পর্যনÍ দখলবাজির আগ্রাসনে পড়ে অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের অধিকাংশই হিন্দু পরিবার। দখলবাজরা নানা কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে দখলবাজি। এক শেণির ভূমিদস্যুরা জমির ব্যবসায়ী সেজে দখলবাজি করছে। এসব ভূমিদস্যু দখলবাজদের দ্বারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নিরীহ সংখ্যালঘু হিন্দুরা। অনেক হিন্দু পরিবার দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এসব ভূমিদস্যুদের মধ্যে অন্যতম হলো খান কবির ওরফে লেবু কবির ওরফে পুড়া কবির ওরফে দস্যু কবির ওরফে বিএনপি কবির ওরফে টাউট কবির ওরফে ভূমিদস্যু কবির ওরফে জালিয়াত কবির ওরফে কবির চুরা। কুখ্যাত এই ভূমিদস্যু কবির নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের জায়গা জবর দখলে মেতে উঠেছে। জানা যায়, মুলিয়া ইউনিয়নের গেয়ালবাড়ি, ননীক্ষীর ও বনগ্রামের পরিবারগুলিকে জিম্মি করে তাদের জায়গা জমি দখল করে নিচ্ছে। গোয়ালবাড়ী গ্রামের নিশিকান্ত ওরফে নিশে জানান, তার নড়াইল মৌজার এক খন্ড ধানী জমি দখল করে নিয়েছে ভূমি খেকো কবির। ননীক্ষীর গ্রামের অনিল কুমার বিশ্বাস ও কৃষ্ণপদ বিশ্বাস জানান, তাদের জমির পাশে জমি কিনে পাশের জমিগুলি কৌশলে দখল করে নিয়েছে ভূমিসন্ত্রাসী লেবু কবির। তাদের জমি জড়িয়ে গভীর গর্ত খুড়ে জমির বেশ কিছু অংশ দখল করে নিয়েছে। এভাবে অপ্রয়োজনীয় গর্ত খুড়ে জমির মাটি বিক্রি করে জমি দখল করে চলেছে দস্যু কবির। এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে গেলে তাকে নানা ভাবে হুমকি দেয়া সহ হয়রানী করা হচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসী কবির সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সন্ধ্যার পর এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দেয়। এতে করে হিন্দু পরিবার গুলি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। কুটকৌশলী ভূমিখেকো লেবু কবির কম দামে কাগজপত্র বিহীন জমি ক্রয় করছে। নামমাত্র মূল্যে বিরোধপূর্ণ জমি ক্রয় করছে। এছাড়া জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দুর্বল সংখ্যালঘুদের জায়গা জমি দখল করে নিচ্ছে। এভাবে দখলবাজি করে নেয়া ফসলি জমির মাটি গভীর গর্ত করে কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অধিকাংশ জমি তিনি নিজ নামে রেজিস্ট্রী করে নিতে পারেননি। আবার দখলবাজি যাতে প্রমান না হয়, তার জন্য কৌশল করে অনেক জমি রেজিস্ট্রী করে নেননি। এসব জমির মালিকদের ক্রয়মূল্যের ১০ শতাংশ টাকা দিয়ে বাকি টাকা দিচ্ছেন না। ভূমি মালিকরা টাকা চাইলে তাদেরকে বলছেন, জমির কাগজ ঠিক নাই। কাগজপত্র ঠিক করে জমি লিখে নেয়ার সময় বাকি টাকা পরিশোধ করা হবে। তবে মাটি কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। মাটি কাটার সময় অন্যের জমি জড়িয়ে মাটি কেটে নিচ্ছেন। এরপর বিনা কারনেই কবির তার জমির কিছু অংশ গর্ত করেছেন। গর্ত করার সময় পার্শ্ববর্তী অন্যের জমি জড়িয়ে গর্ত করছেন। এতে অন্যের জমি ভেঙ্গে দস্যু কবিরের গর্ত বড় হচ্ছে। অর্থাৎ অন্যের জমি ভেঙ্গে দস্যু কবিরের জমির মধ্যে চলে আসছে। এমনভাবে গর্ত করার কারণ জানতে চাইলে তাদেরকে হুমকি দিয়ে বলেন, এতো কথার দরকার নেই, সমস্যা হলে জমি লিখে দাও। পরে টাকা নিও। সরকারি আইনে আছে ফসলি জমি কেটে তার টপ সয়েল নষ্ট করা যাবে না। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় সেই কাজটি করে লেবু কবির হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এদিকে ভূমি সন্ত্রাসী লেবু কবিরের ভূমিগ্রাসের ঘটনাগুলি জেলার গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক অভিযোগ দেয়া হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। এমনকি তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, অভিযোগ দেয়ার পর ভূমিসন্ত্রাসী কবিরকে প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে আরো অন্তরঙ্গভাবে দেখা গেছে। এতে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতংক আরো বেড়ে গেছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্থরা গোপনে নিরবে চোখের জল ফেলছেন, কিন্তু প্রকাশ্যে কোন প্রতিবাদ করছেন না। ভয়ংকর এ সন্ত্রাসীর হাত থেকে হিন্দু সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে ও তাদের জায়গা জমি ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। মাইনরিটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ ও অভিযান নামে দু’টি সংগঠন ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে বক্তারা ভমিদস্যু কবির’র হাত থেকে সংখ্যালঘুদের রক্ষার দাবি জানান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ননীক্ষীর গ্রামের মৃত সুকুমার বিশ্বাসের জমি কিনেছেন তার স্ত্রী’র নিকট হতে। একইভাবে ভয় দিয়ে এ গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাস, বরুণ বিশ্বাস সহ আরোও অনেকের জমি কিনেছেন নাম মাত্র মূল্যে। এমন অনেকের জমি গ্রাস করে নিয়েছেন যারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।সাত ঘরিয়া গ্রামের প্রেমচান সরকার সুনিল মজুমদার বলেন সাত ঘরিয়া বিলে আমাদের ধানি জমি ছিলো কবির খান ঘের কেটে বাধঁ দিয়ে পানি নিস্কাশন এর পথ বন্ধ করার কারনে চৈত্র মাসেও জমিতে হাটু পানি থাকছে বিগত পাঁচ বছর কোন ফসল ফলাতে না পারায় কবির কে
জমি দিতে বাধ্য হয়েছি। এখন জমি হারিয়ে পথে বসে গেছি, ছেলে মেয়ে নিয়ে না খেয়ে দিন কাটছে এমন অব¯থা চলতে থাকলে এই এলাকার কৃষকদের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন পথ থাকবেনা।
নড়াইল সদরের সিতারামপুর এলাকার হিন্দুদের প্রায় ৭০ একর জমি গ্রাস করেছেন। সেখানে মনোরঞ্জন কুঠি তৈরি করেছেন। ওই মনোরঞ্জন কুঠিতে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিয়ে বৈঠক করেন। গুঞ্জন আছে, সেখানে সুন্দরী তরুনীদের ভীড় জমে। আর সেই সাথে চলে মাদক সেবন সহ সকল প্রকার কুকর্ম। অনেক সরকারি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন করতে ওই কুঠিতে যান বলে শোনা যায়। অনেক কুকর্মের নীল নকশা করা হয় ওই কুঠিতে বসে। মাদক,দূর্ণীতি,অনিয়ম,সন্ত্রাসী ও দখলবাজি সহ সকল প্রকার অপকর্মের সাথে জড়িত কুখ্যাত এই ভূমিদস্যু দীর্ঘ দুই যুগ ধরে এসব ভূমিদস্যুতা করে যাচ্ছে।
শুধু টাকার জোরে চালিয়ে যাচ্ছে রাম রাজত্ব। নড়াইল জেলা বি,এন, পির কোষাদক্ষ খান কবির ওরফে লেবু কবির ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি ০১.১১.২০০২ সালে জনতার ভোটে নির্বাচিত নড়াইল সদর পৌরসভার মেয়র জননেতা নিজামুদ্দিন খান নিলু বর্তমান নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগের (সাধারণ সম্পাদক) কে ষড়যন্ত্র করে পৌরসভায় আগুন লাগিয়ে নিজামুদ্দিন খান নিলু সহ ছয়,জনকে আসামি করে মামলা দিয়ে রাতারাতি পৌরসভার কমিশনার থেকে মেয়র বনে যান। সেই থেকে দখল বাজিতে মেতে উঠেন
বিএনপি’র অনেক চুনো পুঠি আটক ও গ্রেফতার হয়েছে। অনেক মাদক ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে নিহত হচ্ছে। অনেক ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী আইনের আওতায় এসেছে। ক্রস ফায়ারে নিহত হয়েছে। কিন্তু এই ভূমিদস্যুর কিছুই হয়নি। কারণ স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে তার গভীর সখ্যতা রয়েছে। দু’জন নেতা ঘরে বসেই তার পাপ পথে উপার্জিত অর্থের ভাগ পান। জানা যায়, নগদ টাকা, মূল্যবান উপহার সামগ্রী গিফট করে সরকারী কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করায় তিনি খুব পারদর্শী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রবিন্দ্রনাথ অধিকারি বলেন আপানারা যার বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন আমি তার বিষয়ে কিছু বলতে পারবোনা একপর্যায়ে তিনি বলেন আমার কাছে খান কবিরের কর্মকান্ড সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ আসে নাই তবে বনগ্রামের গোলক লস্করের বাড়ির সাথে উচু ভিটের মাটি এস্কেভেটর দিয়ে কেটে নিয়ে যেতে দেখেছি।