নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলে এক বিধবা স্ত্রীর ঘরে ডুকে অপকর্ম করার সময় স্থানীয় মহিলাদের দাবড় খেয়ে লুঙ্গি খুলে পাঁলালো কলোড়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রকাশ বিশ্বাস। মহিলারা জানান, প্রকাশ মেম্বারকে একাধিক বার এই মহিলার সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দেখা গেছে। তার নিয়মিত আসা-যাওয়া ও সেক্সুয়ালি কাজ এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে আমরা মহিলারা আজ মঙ্গলবার তাকে হাতে নাতে ধরার জন্য বসে ছিলাম। যখন-ই প্রকাশ মেম্বার ঘরে ডুকে লুঙ্গি খোলে তখন আমরা তেড়ে আসলে মেম্বার লুঙ্গি খুলে ভৌ – দৌড় মারে।
এলাকাবাসী জানান, প্রকাশ বিশ্বাস এক জন মাদক ব্যবসায়ী। তার মাদক কেনা বেচা এলাকায় বিস্তার ছড়িয়েছে। নিজে এক জন মাদক সেবি হওয়ায় মাদক বিক্রিতে তার সুবিধা অনেক। এই মাদক সেবী প্রকাশ বাল্য কাল থেকে পাঁড়ার হাঁস চুরি, মুরগী চুরি, ডিম চুরি করে আজ বড় চোর বনে গেছে৷ চুরি করা টাকা এক জায়গা করে মেম্বার হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত সরকারি প্রণোদনা, বয়স্ক ভাতা , বিধবা ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, সহ প্রতিটি কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি , কলোড়া ইউনিয়নে করোনাকালে সরকারের দেয়া নগদ অর্থ বিতরনে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও আত্বসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বর প্রকাশ বিশ্বাস নিজের স্ত্রী, মা, আপন ভাই, মামাত ভাই, শ্যালিকা সহ নিকট আত্মীয়দের নাম তালিকাভুক্ত করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে কলোড়া ইউনিয়নে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে করোনা বিস্তার রোধে গৃহীত লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ এবং বিভিন্ন দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র ও দুস্থ ৩ শত ৫৬ পরিবারের মাঝে নগদ ১ হাজার টাকা করে বিতরনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাচ আলী সরদার সকল ইউপি সদস্যদের যথাযথ নিয়ম মেনে নিজ নিজ এলাকার উপযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা জমা দেয়া নির্দেশ দেন। ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রকাশ বিশ্বাস সেই নির্দেশ অমান্য করে আত্মীয়দেরস্বজন ও নিজ পরিবারের লোকজনের নাম দিয়ে মাথা প্রতি নগদ ১ হাজার টাকা করে তুলে নিয়েছেন। ব্যক্তিগত বিশেষ সম্পর্কের কারনে আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারে একাধিক নামে টাকা দিয়েছেন। এ ছাড়াও তালিকাভুক্ত একাধিক ব্যক্তির নামে বরাদ্দ হওয়া টাকা নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে টিপ দিয়ে তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ এলাকার অনেক অসহায় হতদরিদ্র সরকারের এই নগদ অর্থ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে প্রকাশ মেম্বর নিজ পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের নাম তালিকাভুক্ত করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। তার দেয়া তালিকায় রয়েছে ধনী ব্যক্তিদের নাম। নগদ টাকা বিতরনের তালিকায় ২৮৬ নাম্বারে রয়েছে জয়ন্তি বিশ্বাস। তিনি প্রকাশ মেম্বারের স্ত্রী। তালিকার ২৮৯ নাম্বারের স্মৃতি বিশ্বাস মেম্বরের মা। ২৭৪ নাম্বারের বিকাশ বিশ্বাস এবং ২৮৬ নাম্বারের প্রভাত বিশ্বাস মেম্বারের আপন ভাই। তালিকার ২৮০ নাম্বারের শান্তি বিশ্বাস মেম্বারের আপন শ্যালিকা। ২৮২ নাম্বারের শেখর বিশ্বাস ও ২৯৪ নাম্বারের মধুসূদন বিশ্বাস মেম্বারের মামাত ভাই। বিশেষ সম্পর্কের সুবাদে শিল্পী বৈরাগী ও তার স্বামী নিত্যানন্দ বৈরাগী দু’জনেই টাকা পেয়েছেন। চতুর প্রকাশ মেম্বার গোয়ালবাড়ি গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও আলোমতি রানীর নামের টাকা অন্যদের হাতের টিপ দিয়ে উত্তলোন করে নিয়েছেন। আলোমতি রানী ও শ্রীকান্ত বিশ্বাস আদৌ জানেন না তাদের নামে টাকা এসেছে। মেম্বার প্রকাশ বিশ্বাস নিজ স্ত্রী, মা, আপন ২ ভাই, ২ জন মামাত ভাই, শ্যালিকা সহ নিকট আত্মীয়দের নামে এবং অন্যদের নামের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। বাইরের দু’একজন যা কিছু পেয়েছেন তারা ধনি পরিবারের ও একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী। এ ব্যাপারে প্রকাশ মেম্বারের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন,তালিকা তৈরিতে কোন অনিয়ম হয়নি। মাদকাসক্ত প্রকাশ মেম্বারের এহেন দুর্নীতি অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির ঘটনায় ফুসে উঠেছেন এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ হতদরিদ্র ও সচেতন মহল। তারা তদন্তপূর্বক দুর্নীতিবাজ প্রকাশ মেম্বারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।