ফাতেমা খানম মৌ নড়াইলঃ
নড়াইল সদর উপজেলার মূলিয়া ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক(এফ.পি.আই) তুহিন সরকারের বিরুদ্ধে পরিবার কল্যাণ সহকারি(এফ.ডব্লি এ) শ্রীমতি রানী দাসকে যৌন হয়রানি, অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও স্বামীকে গুম করার হুমকির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাব সন্তোষ জনক না হওয়ায় পূনরায় কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে ।
নড়াইল সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৭ ফেব্রুয়ারি পরিবার কল্যাণ সহকারি(এফ.ডব্লি এ) শ্রীমতি রানী দাস পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক তুহিন সরকারের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়গুলি গন কর্মচারি (আচরন) বিধিমালা ১৯৭৯ এর সুস্পষ্ট লংঘন হওয়ায় ১৩ ফেব্রুয়ারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার মল্লিক স্বাক্ষরিত কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পূণরায় ২৪ ফেব্রুয়ারী কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীমতি রানী দাস বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক তুহিন সরকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কারনে আমি নিরাপত্তা হীনতায় আছি নানা প্রান্ত থেকে হুমকি ধামকি আসছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলা থেকে কয়েকজন সিনিয়র পরিবার কল্যাণ সহকারি(এফ.ডব্লিউ.এ)বিষয়টি জানতে আমার সাথে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে দেখা করেন।এ সময় বাশগ্রাম ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক(এফ.পি.আই)রিয়াজউদ্দিন ও ভদ্রবিলা ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক(এফ.পি.আই) হুমায়ন কবীর উপস্থিত হয়ে প্রকাশ্যে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে তুহিন সরকারের মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেনি।
উল্লেখ্য,৭ ই ফেব্রুয়ারি পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক তুহিন সরকারের বিরুদ্ধে পরিবার কল্যাণ সহকারি শ্রীমতি রানী দাস সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে লিখিত অভিযোগদায়ের করেছেন। এ ছাড়া নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সদর থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন। ডায়েরী নম্বর ২৫১।
শ্রীমতি রানী দাসের লিখিত অভিযোগ ও সাধারন ডায়েরী সূত্রে জানা যায়, নড়াইল সদর উপজেলার মূলিয়া ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ সহকারি শ্রীমতি রানী দাস ২০১৭-১৮ সালে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকের শূণ্য পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তুহিন সরকার পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদে যোগদান করেন।যোগদানের পর থেকে তুহিন সরকার নিজের কোন দায়িত্ব পালন না করে শ্রীমতি রানী দাসকে দিয়ে তার নিজের রির্পোট তৈরিসহ যাবতীয় অফিসিয়াল কাজ করতে বাধ্য করেন।কাজ না করলে যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন রকম অশালীন ভাষা ও হুমকি দিয়ে আসছেন।এ বিষয়ে আমি মৌখিকভাবে কর্মকর্তা,সহকর্মী ও সংগঠনের নেত্রীদেরকে জানিয়েছি।মান-সম্মানের ভয়ে আমি এফ.পি.আই তুহিনের মানসিক নির্যাতন নিরবে সয়ে যাচ্ছি। শ্রীমতি রানী দাস বলেন,তুহিন সরকারের পিতা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী প্রভাত সরকারকে ছেলেকে বুঝানোর অনুরোধ করেছিলাম।৬ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টা ৪৪মিনিটে আমি দায়িত্ব পালন কালে তুহিন সরকার মোবাইল ফোনে আমাকে যৌন হয়রানির হুমকি দেয়।আমাকে ও আমার মেয়েদের ধরে নিয়ে এ করবে ও করবে।আমাকে,আমার মা,মেয়ে চৌদ্দগোষ্ঠীকে দাড়ায় পড়ে করবে,পেট বাধায় দেবে। আরো অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। যেসব বিশ্রী ভাষা ব্যবহার করেছে তা আমি মুখে বের করতে পারছি না।লজ্জায়-ঘৃণায় আমি ফোন কেটে দিয়ে ফোনটি বন্ধ করে দিই।এসব কথা বলতে বলতে শ্রীমতি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
তিনি আরো জানান,তুহিন সরকার মোবাইল ফোনে আমাকে বলে আমি নড়াইলের সবকিছূ দিনে ৩বার দাঁড়ায় পড়ে জন্ম দিই। আমি সেই ছেলে।এহেন পরিস্থিতিতে তুহিন সরকারের অধীনে আমার চাকরি করা একেবারেই অসম্ভব।আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।ফোন কল রেকর্ড বের করলে এর সত্যতা মিলবে।
শ্রীমতি রানী দাসের স্বামী কালিয়া উপজেলার শাহাবাদ ইউনাইটেড একাডেমীর শিক্ষক সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন,তুহিন ফোন দিয়ে গালিগালাজ করে এবং বলে তোকে বাড়ি থেকে তুলে এনে তোর চামড়া ছুলে ফেলব, তোর কোন বাপ ঠেকায় ? তুই আর তোর দুই মেয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারবি না।