মির্জা মাহামুদ হোসেন রন্টু নড়াইলঃ নড়াইল সদর উপজেলার উপ- সহকারী কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে সীমাহীন দূর্নীতি, অনিয়িম, সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যানা গেছে , প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়ন মাঠ কর্মী নিজেরা সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির সার, বীজ প্রদানের তালিকা তৈরী করছেন। আর এই তালিকায় ভূলে ভরা, নাম এক জনের ছবি আর এক জনের ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকার সার, বীজ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। নীতিমালায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দের সাথে নিয়ে তালিকা প্রনয়নের কথা থাকলে ও এই নির্দেশনা মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।
জানা গেছে সদরের হবখালী ইউনিয়নের দায়িত্ব রত ইউনিয়ন কৃষি অফিসার পরিতোষ মালাকার তিনি চেয়ারম্যানের দেওয়া নাম বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছে মত তালিকা প্রনয়ন করেছেন । আর সেই তালিকায় যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। সেগুলি উপকার ভোগীরা পায়নি। এই সারের তালিকায় যাদের নাম দেওয়া হয়েছে সেখানে অন্য লোকের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে । এতে করে দূর্নীতির বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে গেছে।
জানা গেছে ২০২০- ২০২১ অর্থ বছরের খরিপ – / ২০২১ – ২২ মৌসুমে রোপা আমন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রোপা আমন( হাইব্রিড) ফসলের বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ ও ২০২০- ২০২১ অর্থ বছরের খরিপ -২/২০২১- ২২ রোপা আমন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রোপা আমন (উফশী) ফসলের বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।
জেলায় সর্বমোট ৩৫০০জন কৃষকে ( উফসি)ও হাইব্রীড ধানের বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে ।
যার ভিতর সদরে উফসি ৫০০ হাইব্রিড ১২০০সর্বমোট ১৭০০। লোহাগড়া উপজেলা উফসি ৩০০ ও হাইব্রিড ৫০০ সর্বমোট ৮০০ ও কালিয়া উপজেলা উফসি ২০০ হাইব্রিড ৮০০ সর্ব মোট ১০০০ সব মিলিয়ে জেলায় ৩৫০০ কৃষকের মাঝে এই প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
আর এই প্যাকেজে রয়েছে উফসী ধানের বীজ ৫ কেজি, ডি এ পি সার ১০ কেজি ও এম ও পি সার ১০ কেজি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ কেজি বীজের দাম ২৭৫ টাকা, ১০ কেজি ডি এ পি ১৬০ টাকা ও ১০ কেজি এম ও পি ১৫০ টাকা মোট ৫৮৫ টাকা। অপর দিকে হাইব্রিড বীজ ২ কেজি, ডিএপি ২০ কেজি এমওপি ১০ কেজি যার বাজার মূল্য বীজ ৬৩০ টাকা ২০ কেজি ডিএপি ৩২০ টাকা এমওপি ১০ কেজি ১৫০ টাকা মোট ১১০০ টাকা। অর্থাৎ এক জন কৃষক যদি উফসী বীজ ও সার পায় তাহলে সেই কৃষক পাবে ৫৮৫ টাকার বীজ ও সার। আর যদি হাইব্রিড পায় তাহলে পাবে ১১০০ টাকার বীজ ও সার। কিন্তু পরিতাপের বিষয়
এই সার বিতরণ করার নামে সরকারের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের এই সার সরাসরি চলে গেছে কালো বাজারে। কৃষকের নাম থাকলে ও মিল হয়নি ছবিতে। আরো মজার বিষয় যে সাক্ষর গুলো দিয়ে সার উৎত্তলন করা হয়েছে সেই সাক্ষরগুলো কৃষকের না।
সরকারের এই মহতি উদ্যোগ ভেস্তে গেছে বলে দাবি করেন হবখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুর ইসলাম চঞ্চল। তিনি বলেন, তালিকায় ৩৮ নাম্বারে রয়েছে মন্নু শেখ। সেখানে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে আবদুল্লাহ কাদেরের। এছাড়া ও তালিকায় অনেকের ছবির সাথে নামের মিল নেই।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পরিতোষ মালাকার এ বিষয়ে জানান, দুই একটা ছবি এদিক ওদিক হতে পারে। আর হবখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এক জন দূর্ণীতিবাজ তাই ওকে বাদ দিয়ে আমি তালিকা প্রনয়ন করেছি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, হবখালী থেকে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সার বাজারে বিক্রি হচ্ছে কি না আমি জানি না।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আমি জানি না। আজ নতুন শুনলাম । নড়াইল উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, দীপক কুমার রায় বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।