নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী পুলিশ ক্যাম্পের এস আই রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কটুক্তির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে নড়াইল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্যে পেড়লী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ জানুয়ারি পেড়লী গ্রামে আমাদের বাড়ির পাশের কাচারী ঘরে বসে আমি আমার বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম ,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার সহ আরো পাঁচ ছয় জন বসে মুক্তিযোদ্ধাদের পূনরায় যাচাই – বাছাই করা সম্পর্কে কথা বলছিলাম।
এমন সময় পেড়লী পুলিশ ক্যাম্পের সেকেন্ড ইনচার্জ এস, এম, রেজাউল করীম সেখানে উপস্থিত হয়ে আমাদের পাশের একটি চেয়ারে বসেন। এ সময় আমার গলায় ঝুলানো বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতীক ‘নৌকা মার্কা’ খচিত ও ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি’ সম্বলিত মাফলার দেখে তিনি ব্যাঙ্গাত্মকভাবে কটুক্তি করে বলেন, “৫০ বছর আগে মারা যাওয়া মানুষের ছবি গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন কেন? মরা মানুষের ছবি গলায় দিয়ে কী হবে? ভন্ডামী করেন?” একজন পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরণের মন্তব্য শুনে আমরা খুবই কষ্ট পাই। তখন আমি তাকে বলি,“জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের মহানায়ক, বাংলাদেশের স্থপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা। আর আমি আওয়ামী পরিবারের একজন সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একজন সন্তান। কাজেই, আওয়ামীলীগের প্রতীক ‘নৌকা’ খচিত ও বঙ্গবন্ধুর ‘ছবি’ সম্বলিত লাল-সবুজের এই মাফলারটি আমার পছন্দনীয়। তাই, মাফলারটি আমার গলায় রাখি। এতে ভন্ডামীর কী দেখলেন?” এ কথা শুনার সঙ্গে সঙ্গে এস, আই, রেজাউল করীম উত্তজিত হয়ে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলেন, “আরে রাখেন আপনার মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধারাই বাংলাদেশটা শেষ করে দিয়েছে। আর শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের মাথায় নিয়ে নেচে নেচে দেশটা নিঃশ্বেষ করে দিচ্ছে।” বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এ ধরণের ঠাট্টা-বিদ্রুপ ও ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য শুনে আমরা এর প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তিনি আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদের দেখানো হবে বলে শাসিয়ে দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরণের আচরণে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হতভম্ব হয়ে পড়ি। অতঃপর এ ঘটনার বিচার চেয়ে আমরা পুলিশের উর্ধ্বতন বিভিন্ন মহলে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করি। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এবং আরো তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়াও এস আই রেজাউল করিম ভুয়া ঠিকানায় চাকুরি করছেন। তিনি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও নিজ জেলাতে চাকুরি করছেন। প্রকৃত ঠিকানা গোপন রেখে পার্শ্ববর্তী খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বলর্দ্ধনা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে ভুয়া ঠিকানায় পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায়ই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার হুমকি দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে পেড়লী পুলিশ ক্যাম্পের এস আই রেজাউল করিম সাংবাদিকদের বলেন, এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করায় আমার বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম ও তার ভাই কামরুল ইসলাম অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-নজরুল ইসলামের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলামসহ পরিবারের সদস্যরা।