সমুজ আহমদ সায়মন
(১ম পর্ব)
সমাজের উন্নতি ও অগ্রগতির উপরই নির্ভর করে মানব জাতির সূখ ও শান্তি ।যে সকল সামাজিক সমস্যা আমাদের সমাজে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে বাঁধা সৃষ্টি করেছে, কেড়ে নিয়েছে মানুষের সূখ শান্তি, দূর্নীতি তার মধ্যে অন্যতম ।বিশ্ব মানবতার মহান দূত হযরত মুহাম্মদ (সা:)সমাজ বা রাষ্ট্রে দূর্নীতি নামক সামাজিক ব্যাধি প্রবেশের পরই কেবল তার প্রতিকারের জন্য পদক্ষেপ নেননি বরং দূর্নীতির মন মানসিকতা সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টির আগেই তা বন্ধ করে দিতেন।তাইতো মহানবী (সা:)আল্লাহর দেয়া একমাত্র কল্যাণময় জীবন বিধান হিসেবে দূর্নীতি প্রতিরোধের মহৎ আদর্শ স্থাপন করেছেন ।ইসলামের দৃষ্টিতে রোগের চিকিৎসার চেয়ে তার প্রতিরোধই হচ্ছে উত্তম ব্যবস্থা ।এ উদ্দেশ্যে সে লোকদের জৈবিক চাহিদা গুলি যেমন যথোচিতভাবে পূরণ করে ।তেমনি ব্যাপক শিক্ষা প্রশিক্ষণ পরিশুদ্ধির মাধ্যমে দূর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষদের সচেতন করে তোলেন ।এর পরে কেউ দূর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন ।তাতে তিনি কোন সংকোচবোধ করেন নি।
আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে পৃথিবীর মানুষদেরকে হেদায়েতের জন্য তাদের নিকট স্থায়ী বানী পৌঁছানো এবং তাদেরকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দানের জন্য অসংখ্য নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন ।নবী রাসুলগনের আগমনের এই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ( সা:) এ ধরাধমে তার আগমনের উদ্দেশ্য ছিল পথভ্রষ্ট মানুষকে আলোর পথ দেখানো।হালাল হারামের শিক্ষা প্রদান, এবং তাদের পরিশুদ্ধ করা ।দূর্নীতি অনেক গুলো বিষয়কে একত্রিত করে যেমন,ঘুষ, খেসারত, কালোবাজারী ইত্যাদি ।মহানবী (সাঃ) মানুষকে এ সকল বিষয় থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ।দূর্নীতির সব বিষয়সমূহকে হারাম ঘোষনা দেওয়া দূর্নীতি দমনে মহানবীর (সা:) প্রথম পদক্ষেপ ।
মহানবী( সা:) খাদ্য বস্তু, পানীয় কম উপার্জন তথা সকল বিষয়ে শুধু হালাল ও হারামের পথই নির্দেশ করেননি বরং বৈজ্ঞানিক পন্থায় যুক্তির মাধ্যমে হারামের অপকারীতা এবং হালালের উপকারিতা বর্ণনা করেন।দূর্নীতির মাধ্যমে মানুষ যে সম্পদ উপার্জন করে তার অপকারীতা সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, হে মানবমন্ডলী তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে ভক্ষণ করো আর তোমরা শয়তানের পথ অনুসরন করোনা ।নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্যে শত্রু “।এরপর মহানবী( সাঃ )হালাল সম্পদের উপকারিতা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন,মানুষের খাদ্যের মধ্যে সেই খাদ্যই সবচেয়ে উত্তম যে খাদ্যের ব্যবস্থা সে নিজ হাতে উপার্জিত সম্পদ দ্বারা করে ।এভাবে মহানবী (সাঃ)হালাল সম্পদের উপকারিতা এবং দূর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত হারাম সম্পদের অপকারীতা বর্ণনা করে সকল প্রকার দূর্নীতি প্রতিরোধের আদর্শ রেঁখে গেছেন ।
দুনিয়ার লোভ লিপ্সা উচ্চ বিলাসী জীবনের মোহই দূর্নীতির অন্যতম প্রধান কারণ ।মানুষ মৃত্যুর কথা ভূলে গিয়ে দুনিয়াকে বসবাসের স্থায়ী জায়গা মনে করে দূর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অপচেষ্টায় লিপ্ত ।অথচ মহানবী( সাঃ)এ ধন লিপ্সা কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন ।এ ক্ষেত্রে মানুষকে বারবার মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে ।যেমন আল্লাহর বাণী, প্রত্যেক জীবকে মৃত্যুর স্বাধ গ্রহন করতে হবে আরো বলা হয়েছে, পার্থিব ভোগ সামান্য, ।এভাবে মহানবী (সাঃ)পার্থিব সম্পদের প্রতি লিপ্সা হতে দূরে থেকে আখেরাতের পুঁজি বাড়ানোর প্রতি নির্দেশ দিয়ে মানুষের ধন লিপ্সাজনিত কলুষিত অন্তরের চিকিৎসা করতঃ দূর্নীতির অন্যতম পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন ।
সম্পদের প্রতি মানুষের মোহ স্বভাবজাত ।এই মোহ যখন কঠিন আকার ধারণ করে তখন অন্ততর কলুষিত হয়ে যায় ।ফলে সে দূর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দিকে ঝুঁকে পড়ে ।অপরদিকে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করলে মন থেকে অর্থের মোহ কেটে আখেরাতের প্রতি ঝোঁক বৃদ্ধি পায়।সর্বকালের সেরা মহা বিজ্ঞানী মহানবী( সাঃ)মানুষের হৃদয়ের এ প্রকৃতি বুঝতে পেরেই তাদের হৃদয় থেকে দূর্নীতি উপড়ে ফেলা, হৃদয় থেকে অর্থের মোহ মুছে ফেলে আল্লাহর রাস্তায় অর্থ দানের জন্য উৎসাহ দেন। (চলবে )