মো. নাঈম ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঝালকাঠি জেলার ৪ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম হয় এমন জায়গাগুলোতে ২২টি বেসিন নির্মাণ করেছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। প্রতিটি বেসিনে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩০ হাজার টাকা করে। দেশে করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলেও নির্মাণের এক বছরেই বেসিনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কোথাও ট্যাপ ভাঙা আবার কোথাও ভেতরে ময়লা আবর্জনায় ভরে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বেসিনগুলো। বেসিনগুলোতে হাত ধোয়ার উপকরণ না রাখায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে সিভিল সার্জনের অফিস থেকে বলা হয়েছে, বেসিনগুলো নির্মাণের পর নিয়মিতই সাবান রাখা হত। কিন্তু সাবান থাকে না। চুরি হয়ে যায়। আবার কোথাও সাবান থাকলেও মানুষের মধ্যে এখন আর হাত ধোয়ার আগ্রহ নেই। তাই একপর্যায়ে এসে বেসিনগুলো পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।
ঝালকাঠি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২২টি বেসিন নির্মাণে মোট ব্যয় হয় প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতিটি বেসিন লাল টাইলসে মোজাইক করা। দেয়া হয়েছিল ২টি সাবান রাখার ট্রে (সাবান দানি), পানি পড়ার দুটি ট্যাপ, সামনে দৃশ্যমান গ্লাস, পৌরসভার সাপ্লাই পানির পাইপের মাধ্যমে সংযোগ দেয়া হয় পানি ব্যবস্থাপনার। দাঁড়িয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে হাত ধোয়ার পরিবেশ ছিল বেসিনগুলোতে।
জেলা শহরে নির্মিত বেসিনে দেখা যায়, পানির পড়ার ট্যাপগুলোর কোথাও দুটিই ভাঙা আবার কোথাও একটি ভাঙা। কোথাও পানি ভর্তি আবার কোথাও ময়লা জমে আছে। নেই হাত ধোয়ার সাবান। বেসিন উপচে পড়ছে ময়লা পানি, জমেছে শেওলা। সবগুলোই নির্মাণ করা হয়েছিলো জেলা প্রশাসক কার্যালয়, আদালত চত্বর, সিভিল সার্জন অফিস, সদর হাসপাতাল, প্রেসক্লাব, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে।
২২টি বেসিনের মধ্যে পরিত্যক্ত অবস্থায় এখন দৃশ্যমান রয়েছে ২১টি। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত বেসিনটির স্থানে করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নান্দনিক ম্যুরাল। গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
এছাড়াও ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম আহমেদের সৌজন্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এবং মসজিদের সামনে স্থাপন করা হয় বেসিন। পৌরসভার পানি সাপ্লাই পাইপের মাধ্যমে সংযোগ দেয়া হয় পানি ব্যবস্থাপনার। সেগুলোর মাত্র কয়েকটি বাদে বেশিরভাগই এখন পরিত্যক্ত ও ব্যবহার অনুপযোগী।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছর প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে জেলায় ২২টি বেসিন নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি বেসিন নির্মাণ ব্যয় ৩০ হাজার টাকা ধরা হলেও ১০% বিয়োগে ২৬ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি বেসিন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।
বেসিনগুলো নির্মাণ করার পর প্রতিটি বেসিনের জন্য কিছু সাবান সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে দেয়া হয়। পরবর্তীতে স্ব স্ব অফিসের তদারকিতে বেসিনগুলো দেয়া হলে তা ব্যবহার উপযোগী রাখার দায়িত্ব তাদের।