মো. নাঈম ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন ঝালকাঠির মোবারক হোসেন মল্লিক। যুবক বয়সে দুর্দান্ত সাহস নিয়ে পাকসেনাদের মোকাবেলায় অস্ত্র হাতে তুলে নেন। শত্রুদের পরাস্ত করে বিজয়ের পতাকা হাতে সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঝালকাঠি শহরে মিছিল করেন তিনি। উদ্যোমী সেই তরুণ ১৯৭৭ সালে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। টানা ৯ দফায় ইউপি নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে জয়ী হচ্ছেন। গত ২২ জুন প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তিনি ৬ হাজার ২৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আলী আজাদ নুরানী পেয়েছেন ৪২০ ভোট। এ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ১৫জন। জানা যায়, ৪৪ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন মোবারক হোসেন মল্লিক (৭০)। শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। বর্তমানে তিনি ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এর আগে তিনি জেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জেলা ক্রীড়া ক্ষেত্রেও তাঁর রয়েছে অবদান। বর্তমানে তিনি ক্রীড়া সংস্থার একজন সদস্য।
স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে পারিবারিকভাবে সুখেই আছেন এ জনপ্রতিনিধি। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের কারণে তাঁর ইউনিয়নে চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস ও মাদকের বিস্তার নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে সহযোগিতাও করে যাচ্ছেন তিনি। বাল্যবিয়ে রোধে প্রচারণাও চালাতে দেখা গেছে তাকে। সালিস বৈঠকে ন্যায্য বিচার করে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। একাধিকবার জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন তিনি।নানা বিষয়ে সাফল্য অর্জন করে ইউনিয়নবাসীকে নিরাপদ জীবন যাপনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে জনগণের মন জয় করে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান,ঝালকাঠিতে ইউপি নির্বাচনে একটানা ৯বার নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মধ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন মোবারক হোসেন মল্লিক। গিনেস বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ড এ তাঁর নামটি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন ইউনিয়নবাসী।ঝালকাঠির ক্রীড়া সংগঠক ও সংস্কৃতজন মানিক রায় বলেন, মোবারক হোসেন মল্লিক একজন সাদা মনের মানুষ।জনসেবায় যদি কোন পুরস্কার থাকে, সেটা তাকে দেওয়া উচিত।তিনি গরিবের বন্ধু বলেও পরিচিত।মানুষ তাকে সম্মান করে,ভালোবাসেন।এ ব্যাপারে মোবারক হোসেন মল্লিক বলেন,এই বুড়ো বয়সেও আমাকে জনগণ নির্বাচন করতে উৎসাহ দেয়।আমি না চাইলেও তারা জোর করে আমাকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলেন।ইউনিয়নের জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতেই আমাকে নির্বাচন করতে হচ্ছে।আমি ৪৪ বছর ধরে বাসন্ডা ইউপির চেয়ারটিতে বসে আছি।কখনো কোন অন্যায় করিনি, জনতার সম্পদ চুরি করিনি।সরকার যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।বাংলাদেশে টানা ৯ দফায় কোন ইউপি চেয়ারম্যান নেই, তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার এলাকার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।আমাদের নেতা ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর সহায়তা বাসন্ডা ইউনিয়নকে দেশের একটি মডেল ইউনিয়নে পরিনত করার স্বপ্ন দেখছি।