মো. নাঈম হাসান ঈমন ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ প্রভাব ফেলেনি দক্ষিণের জেলা ঝালকাঠিতে। শনিবার রাতে প্রশাসনের তাগিদে কিছু লোক বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও সকাল হওয়ার পরেই বাড়ি ফিরেছে সবাই।
আগে থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনিহা প্রকাশ করছিলো ঝালকাঠির নদীতীরের মানুষেরা। ভিটেবাড়ি ও গবাদিপশু ছেড়ে অন্যত্র থাকতে চায়নি কেউ। আবার ত্রানের আশায় অনেক পরিবারের কিছু সসদস্যরা আগ্রহ করেই আশ্রয় কেন্দ্রে রাত্রী যাপন করেছিলো। বাথরুম না থাকায় আশ্রয় কেন্দ্র আসা মানুষদের বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে।
অনেকে ভেবেছিলো দুপুরে নোঙ্গরখানা খোলা হবে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে। কিন্তু দুপুরে কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরেগেছে।
রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালি গ্রামের মোনাসেফ মৃধা বলেন, ‘আকাশে কোনো মেঘ বৃষ্টি নাই, সাইক্লোন কেন্দ্রে জোর কইররা লইয়া গেছে আমাগো মেম্বারে। রাইতে আমাগো ছবি তুলছে। সকালে বাড়ি আইছি।’
রাজাপুরের বড়ইয়া ইউনিয়নের নিজামিয়া গ্রামের হাজেরা বানু বলেন, ‘সন্দাহালে গেছি ব্যানে (সকাল) আইয়া পরছি। কয়ডা খেচুরী খাওয়াইছে আর কিচ্ছু পাইনাই। স্যারেরা কইছে বইন্যা যতি হয় হেলে ডাইল চাউল দেবে।
গালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া পারভেজ বলেন, ‘আমাদের সাইক্লোন শেল্টারে আনসার, গ্রাম পুলিশ, রেডক্রিসেন্ট কর্মী, ছাত্রলীগের সদস্যরা রাতভর উপস্থিত ছিলো। আমি নিজ উদ্দোগে সকলের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় আমরা সাধারন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আনিনাই।’
বড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দিন সুরু বলেন, ‘রাতে যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আসছে সবাইকে খিচুরী খাওয়ানো হয়েছে। সকালে সবাই বাড়ি ফিরে গেছে। তাছাড়া দুপুরে এখানে খাবারের আয়োজনও ছিলোনা।’
কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রিপন বলেন, ‘রাতে কিছু লোক আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলো, আমি তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছিলাম। আর জেলা প্রশাসক এসে চিড়া, গুর মুড়িও দিয়ে গেছে। সকালে সবাই বাড়ি চলে গেছে।’
ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সাবের হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রেখেছিলাম। কিন্তু ঝড় না হওয়ায় এখানে কেউ আশ্রয় নিতে আসেনি।’
ঝালকাঠি জেলায় শনিবার রাতে কতজন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে রাত্রীযাপন করেছিলো সে তথ্য জেলা প্রশাসন থেকে দিতে পারেনি। তবে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম জানিয়েছেন, ‘জেলার ৪ উপজেলার ৬১টি স্থায়ী সাইক্লোন শেল্টার এবং অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ৩৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছিলো।’