সাজ্জাদুর রহমান, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জেলার ব্র্যান্ডিং হিসেবে খ্যাতি প্রাপ্ত লতিরাজ কচু এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে পৌঁছে গেছে বিদেশে। অথচ সরকার এখান থেকে রাজস্ব পেলেও জয়পুরহাটে বেচা কেনার জন্য এর নির্দিষ্ট কোনো হাট বাজার নেই। লতিরাজ কচু চাষ বেশী লাভজনক হওয়ায় এখানকার কৃষকদের ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছে। এ জন্যই কচুর লতিকে এখানকার মানুষ মূলত রাজ লতি হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।
তবে এখানে সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, রপ্তানির জন্য প্রসেসিং করতে লতি পাঠাতে হয় ঢাকা কিংবা চট্রগ্রামে। তাই অত্র অঞ্চলের কচু চাষি এবং ব্যবসায়ীরা মনে করেন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে সরকারিভাবে প্রসেসিং সেন্টার গড়ে তুলতে পারলে একদিকে যেমন সময় ও শ্রম বাঁচবে এবং জেলাবাসীর আশা আকাঙ্খা পূরণ হবে, তেমনিভাবে ব্যপক কর্মসংস্থান গড়ে উঠবে এবং যার ফলে অত্র অঞ্চলের বেকার সমস্যাও কিছুটা দুর হবে।
প্রায় ৩০ বছর আগে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি তে সীমিত আকারে কৃষকরা কচু চাষ শুরু করেছিল। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে অন্যান্য ফসলের তুলনাই অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকেরা মূলত ঝুকে পরে কচু চাষের দিকে। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে কচু লতি বিদেশে রপ্তানি শুরু হয়। ইউরোপ, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া সহ এখন বিশ্বের প্রায় ২৫/২৬ টিরও বেশী দেশে এখন লতিরাজ কচু রপ্তানি হচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত ৪০% কচু বিদেশে রপ্তানি হয় বলে এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জয়পুরহাটে কচু প্রসেসিং সেন্টারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও জয়পুরহাটের পাঁচবিবি তে অত্র অঞ্চলেই কচু প্রসেসিং সেন্টারের দাবি জানিয়েছেন পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, এখানে বর্তমানে ১২৫০ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচু চাষ হচ্ছে এবং স্থানীয় হাটগুলোতে প্রকারভেদে ২০টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে ক্রয় বিক্রয় করা হচ্ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এবং জেলাতে কচু লতি প্রসেসিং সেন্টার চালু হলে লতিরাজ কচু রপ্তানিতে দেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।
লতি রাজ কচু এবং সোনালি মুরগির খ্যাতির জন্য জয়পুরহাটের স্লোগানই হচ্ছে, “সোনালি মুরগি-লতিরাজ, জয়পুরহাটের গর্ব আজ।”