সারা বিশ্বে মহামারী করোনাভাইরাস এর তান্ডব এখনো শেষ হয়নি। এরই মধ্যে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে পশ্চিম ইউরোপের একাধিক দেশে ভয়াবহ বন্যা টাইফুন,ভূমিধস আঘাত এনেছে। উন্নত রাষ্ট্রগুলো যাদের অর্থ, সমরাস্ত্র, উন্নতবাহিনী কোন কিছুরই কমতি নেই!কিন্তু প্রকৃতিক এই বিপর্যয় সামাল দিতে এগুলো যে কাজেই আসছে না। যেমন টা covid-19 এর প্রথম ধাক্কায় হয়েছিলো। গত দুইদিন ধরে নিউজে দেখছি সদ্য করোনাভাইরাস এর ধাক্কা থেকে উঠে আসা চীনে ভয়াবহ টাইফুনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড দেশের বিশাল অংশ। একই সময়ে বহু দূরের দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আর এই দুর্যোগ গুলোর প্রধান কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এতে বুঝাই যাচ্ছে বাকি রাষ্ট্র গুলোর উপর ও এই ভয়াবহ বিপদ আসা সময়ের ব্যাপার। এখন আসি আমাদের বাংলাদেশে বর্তমান চিত্রে। সারা বিশ্বে যখন মহামারী ভাইরাসের সংক্রমণ কমে এসেছে আমাদের দেশে উল্টো মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ না করুক এই মুহূর্তে যদি অন্যকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে দেশের ও জনগণের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে যে ঠেকবে আল্লাহই ভালো জানেন। বর্তমান ও আগামীর পৃথিবীতে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো মোকাবেলা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। দেশটির লাখ লাখ নাগরিক নানা সময়ে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, দাবদাহ ও খরার মতো মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের অনেক অংশ ডুবে যাবে।
বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তন কিছু কিছু অঞ্চলের আবহাওয়ার সংকটময় অবস্থাকে আরও শোচনীয় করে তুলবে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী মোটামুটি ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলবে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে এই ধরনের দুর্যোগ ঘন-ঘন হতে থাকবে।
ফলে উপকূলের মানুষকে সুরক্ষা দেবার জন্য নানা পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য লাগবে টাকা। তাই বাংলাদেশ উচিত এখন থেকেই জোরালো ভাবে আন্তজার্তিক সম্মেলন গুলোতে এই বিষয়ে কাজ করে ফান্ড সংগ্রহ করা।
এতদিন উন্নত রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নানা পদক্ষেপ কিংবা অর্থ দান পরিকল্পনা প্রণয়ন করলেও জোরালোভাবে কোন দেশই তাদের পরিবেশের হুমকি স্বরূপ নেতিবাচক কর্মসূচি গুলো বন্ধ করেনি। যেহেতু এবার তারাই ভুক্তভোগী হচ্ছে তাই আশা করাই যায় আগামীর জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন গুলোতে তারা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিবেন। —
এবারের জলবায়ু সম্মেলনে চারটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে:
১. ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের মাত্রা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা। কারণ ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীব্যাপী কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ একেবারে শূন্যতে নামিয়ে আনতে হলে এটি করা জরুরি।
২. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে থাকবে সেগুলোর হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
৩. এসব কাজ করার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। সেজন্য প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল করার জন্য উন্নত দেশগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে।
৪. জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।
যাইহোক সর্বোপরি সমস্ত কিছুর মালিক একজনই মহান সৃষ্টিকর্তা যা চান মানুষ তা কখনোই ফেরাতে পারবেনা। আর তিনি যা না চান আমরা তা কখনো করতেও পারবো না। তাই মানুষের উচিত যার যার অবস্থান থেকে প্রচুর প্রার্থনা করা। আল্লাহর দেওয়া জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক, বিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে পরিবেশ এবং পৃথিবী কে নিরাপদ আবাসস্থল করা। বিশেষ করে আমার প্রিয় মাতৃভূমি সোনার বাংলাদেশ কে আল্লাহ হেফাজত করুক। আমিন
সৈয়দ মনোয়ার উল্লাহ,
সমাজকর্মী (বি,এস,এস-এম,এস,এস)
sayed.manoar16@gmail.com