জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আগে থেকেই ভুগছে সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে সব ধরনের সবজির দামও বাড়তি পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ করে টমেটো, শিম গাজর, কাঁচামরিচ ও ধনে পাতার দাম সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে কোনো কোনো কাঁচামাল ব্যবসায়ী ১০ টাকার কাঁচামিরচ কিংবা ধনেপাতা বিক্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জগন্নাথপুরে সবজির দাম বাড়তি নিয়ে অস্বস্তিতে ক্রেতারা।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর ) জগন্নাথপুর পৌর শহরস্থ জগন্নাথপুর বাজারের সবজি বাজারগুলো ঘুরে বিক্রেতাদের থেকে জানা গেছে, শীত মৌসুমের সবজি না হওয়ায় এগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। সবজির দাম বেশি হওয়ায় অস্বস্তি জানিয়েছেন ভোক্তারা। তবে জগন্নাথপুরের আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা জানান, উত্তরবঙ্গে ও সাম্প্রতিক সময়ে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে বন্যার কারণে সবজির দাম একটু বাড়তি। শীত মৌসুমের সবজি বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার তেমন সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী একমাসের মধ্যে স্থানীয় সবজি আমদানি হলে দাম কিছুটা কমে আসবে। তারা জানান, আগাম শীত মৌসুমের সবজি সুনামগঞ্জে উৎপাদন হওয়ায় স্থানীয়দের চাহিদা পুরণ করবে। স্থানীয় আমদানী করা সবজির মূল্য বর্তমানের তুলনায় অনেক কম থাকবে।
জগন্নাথপুরের সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৭০/৮০ টাকা, একইভাবে বাধাকপিও প্রতি পিস ৭০/৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১ শ ২০ টাকায়, বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০/৪০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, লাল শাক প্রতি আটি ১০/১৫ টাকা, দেড়শ প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, শিম মানভেদে প্রতি কেজি ১ শ ৬০ থেকে ১ শ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিস ৮০/১২০ টাকা, কাঁচ কলা প্রতি হালি ৬০ টাকা, চায়না গাঁজর প্রতি কেজি ১ শ ৪০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৭০টাকা, ঝিঙে প্রতি কেজি ৭০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০ টাকা ও কাঁচা মরিচ মানভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
জগন্নাথপুর বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা ক্রেতা সাহাদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক মাস ধরে একই রকমভাবে বাজারে বাড়তি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। কোনো কিছুরই দাম কমে না। মাঝে মাঝে কোনো কোনো সবজির দাম কিছুটা বাড়ে আবার আগের দামে ফিরে আসে। সবমিলিয়ে বলতে গেলে বাজারে সবজির দাম বাড়তিই যাচ্ছে।
এদিকে জগন্নাথপুর বাজারের গাঙপাড়ের সবজি বিক্রেতা সজল রায়ের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়তি দামে সবজি সিলেটের সোবহানীঘাট ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ক্রয় করতে হয়। পাইকারি বাজার থেকে মাল কেনার পর পরিবহন খরচ হয়। সে কারণে লাভ রেখে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। এমতাবস্থায় বর্ষা মৌসুমে সবজির বাজার একই রকম যায়। তবে কিছুদিনের মধ্যে শীত মৌসুমের সবজি সুনামগঞ্জ থেকে আসা শুরু করবে৷ এতে দামও নেমে আসবে।
সবজি ব্যবসায়ী লিটন মিয়া জানান, এখন মৌসুম না হওয়ায় কিছু কিছু সবজির বাড়তি দাম যাচ্ছে। এর কারণ হলো বাজারে সরবরাহ খুবই কম; তাই দাম একুট বাড়তি। খরচ অনুযায়ী সীমিত লাভ ধরে আমরা সবজি বিক্রি করি। বাজার ভেদে সবজির দামে খুব বেশি পার্থক্য থাকে না। কোনো কোনো সবজির দাম ৫/১০ টাকা কম-বেশি হয়।
জগন্নাথপুর বাজারের তাজ উল্লাহ সবজি ভান্ডারের আড়তদার সেলন ভান্ডারি বলেন, উত্তরবঙ্গ ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে বন্যার কারণে সবজির দাম একটু বাড়তি। তবে আগামী একমাসের মধ্যে শীত মৌসুমের স্থানীয় সবজি এলে দাম নেমে আসবে।