লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
সরোয়ার হোসেন খাদিম, একরামুল, সাজু ও আজিজ সততা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নামে বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এরপর ওই টাকায় বেশ কয়েকটি মোটরবাইক গাড়ি দেখা গেলেও বিলাসবহুল ফ্ল্যাটগুলো কোথায় তা জানতে হবে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের। তাদের বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে। অসহায়দের সঞ্চয়পত্র আত্মসাৎ। লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের ওমর আলী নামের এক ভোক্তা সারোয়ার হোসেন খাদিম ও সততা সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামের একটি এনজিওর পরিচালক ও কর্মী একরামুল সাজুর আজিজের বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ ও সঞ্চয়পত্র আত্মসাতের অভিযোগও দায়ের করেন আদিতমারী থানায়।
এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে আদিতমারী থানায় যেকোনো সময় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়ন থেকে লাখ লাখ চাকরি ও ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ভুক্তভোগীরা দেশের বিভিন্ন থানায় মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করতে চাইলেও বিশ্বে করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। মহামারি শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন ইউনিয়নে মানববন্ধনের প্রস্তুতি চলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এসব কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে, তাই প্রশাসন দুটি সহজ পদক্ষেপ নিলে এসব মানববন্ধন কর্মকাণ্ডের কোনো প্রয়োজন নেই, খরচের অপচয় থেকে রেহাই পাবেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
সংস্থাটির পরিচালক ও কর্মীদের কাজ হল: সততা সমাজ কল্যাণ সংস্থার কার্যালয় স্থানান্তর করে এবং সহজ শর্তে ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের টাকা ঋণ দেওয়ার আশায় সেখানে সঞ্চয় গ্রহণ করে। এটিকে একটি ‘সৎ সমাজকল্যাণ সংস্থা’ ভেবে গ্রাহকরা এতে জমা করতে শুরু করেন। সততা একটি সামাজিক কল্যাণ সংস্থা হিসাবে কাজ শুরু করেছিল। ব্যবসায়ীরা অনেক ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানের দেওয়া বড় ঋণে থাকে। মূলত সারোয়ার হোসেন খাদিম ন্যায্য বেতন না দিয়ে স্ত্রী, বড় ছেলে ও ছোট ছেলে, আত্মীয়-স্বজন ও মাঠ কর্মীদের দিয়ে সংগঠনটি পরিচালনা করতেন, এভাবে অল্প সময়ের মধ্যে সারওয়ার হোসেন খাদিম জামানত হিসেবে অনেক টাকা হাতিয়ে নেন এবং সততা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন এবং পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্য মাথা ঢেকে নেন।
তাদের সাথে কতজন কর্মী ছিল সে কারণে তাদের গ্রেফতার বা জিজ্ঞাসাবাদ না করা পর্যন্ত অনেক তথ্য গোপন থাকবে। তাদের কি কোনো বেতন দেওয়া হয় নাকি? তারা তাদের গ্রাহকদের বিনিয়োগ থেকে বার্ষিক লাভের শতাংশ বা সরকারি রাজস্বে ভ্যাট জমা দেওয়ার জন্য প্রলোভিত হয়েছিল কিনা।
সরজমিনের মতে, সংগঠনটি দিনমজুর, চা দোকানদার, মুদি ব্যবসায়ী, ক্ষুদে ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন শ্রেণীর পেশাজীবীদের টার্গেট করেছে। গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে কর্মীরা সময়ে সময়ে বিশেষ প্যাকেজ ও প্রণোদনা ঘোষণা করে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করতেন। ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান না হলেও তারা ব্যাংকের মতো গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে নিজেদেরকে ঋণ দেওয়া শুনাইতেন না দিয়ে ।
এ ব্যাপারে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আদিতমারী থানার ওসি” মোক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।