গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় গত তিন দিনের বৈরী আবহাওয়া টানা ও থেমে থেমে বৃষ্টিতে ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার সমতলের চার ইউপির বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।।
গোয়াইনঘাট উপজেলার আবহাওয়া বড় বিচিত্র ও বৈচিত্রময়।বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুকির মধ্যে থেকেও গোয়াইনঘাট উপজেলার সকল কৃষকদের কৃষি আবাদ করতে হয়।কৃষকদের পড়তে হয় নানা সমস্যা ও বিড়ম্বনায়। গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি প্রধান না হলেও,উপজেলায় বসবাসরত সিংহভাগ মানুষ কৃষি নির্ভরশীল।ধানক্ষেতের পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে সবজি সরিষাচাষ সহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ।এসব ফসল আবাদে উপজেলার কৃষকদের যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়তে হয় তার মধ্যে প্রধান সমস্যা বন্যা।অসময়ের অপ্রত্যাশিত ভয়াবহ ও বার বারের বন্যা কৃষকের কৃষি নিয়ে সকল পরিকল্পনা আশা ভরসা স্বপ্ন বোনা ভেস্তে যায়।বর্তমানে চলছে আমনের মৌসুম। উপজেলার কৃষকরা মাথায় গামছা বেঁধে বীজতলা প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত তিন দিনের বৈরী আবহাওয়া টানা ও থেমে থেমে বৃষ্টিতে ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার সমতলের চার ইউপির বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে,নন্দিরগাঁও, তোয়াকুল,লেংগুড়া ও ডৌবাড়ি।এতে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোন কোন কৃষক বীজ তলায় বীজ বপন করেছেন আবার কোন কোন কৃষক বেড তৈরি করে অপেক্ষায় রয়েছে।কোন কোন কৃষকের চারা তিন থেকে চার ইঞ্চি লম্বা হয়ে গেছে।দুই একজন কৃষকের ঘরে ধানের জ্বালা পড়ে রয়েছে।আকস্মিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়া বীজ তলায় ফেলতে পারেনি।
কৃষক মজর আলী জানান,ঈদুল আযহার আগের দিন ৫১ জাতের বীজ বপন করেছেন।দুইদিন পর পানিতে তলিয়ে যায় তবে পানি কমে যাওয়ায় কোন ক্ষতি হয়নি।গত পরশু থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়া আবারও তার চারা পানিতে তলিয়ে গেছে।তার ধানের চারা তিন ইঞ্চি লম্বা হয়েছিল।এখন তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
কৃষক গোলাম রাব্বানী জানান,
তার ঘরে একান্ন জাতের জালা পড়ে রয়েছে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বীজ তলায় ফেলতে পারেননি।ময়বুর রহমান বলেন, বীজতলা তৈরি করে অপেক্ষায় রয়েছেন।পানি কমলে পরে বীজ তলায় বাইন দিবেন।
উপজেলা কৃষি অফিসূত্রে জানা যায়,এবার উপজেলায় আমান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৭২৩৫ হেক্টর নির্ধারণ করা হয়েছে এবং হাইব্রিড উফসী ও স্হানীয় মিলে বীজতলা ৯০৯ হেক্টর।তার মধ্যে এ পর্যন্ত বীজতলা অর্জন হয়েছে ৩২৩ হেক্টর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি জানান,সাম্প্রতিক বন্যায় উপজেলার উপরে উল্লেখিত চারটি ইউপিতে সমতলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বীজতলা প্রস্তুতে একটু বিলম্ব হচ্ছে।তবে তার জন্য কোন সমস্যা হবে না এখনো আগস্ট মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সময় রয়েছে।তিনি বলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা বন্যা প্রবণ এলাকা। তাই উপজেলার কৃষকরা বন্যা সহনশীল ৫১/৫২ জাতের ধান আবাদ করে থাকেন।এই জাতীয় ধানের গাছ দুই সপ্তাহ পর্যন্ত পানির নিচে থাকলে সমস্যা হয় না।স্বল্প জীবনকাল মেয়াদ জাতের ধানের বীজ বপনের সময় রয়েছে।তাই বর্তমান বন্যায় কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।