মোঃ আশরাফুল ইসলাম খুলনা সদর প্রতিনিধি: খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত ১০নং আসনের উপ-নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেকসোনা কালাম লিলি ৭ হাজার ৩৫৩ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন)-এর পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হয়। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুস আলী জানান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত ১০নং আসনে কাউন্সিলর লুৎফুন নেছা লুৎফার মৃত্যুতে আসনটি শুন্য হয়। সে কারনে এ আসনে ১৩ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ৩৭ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬৫ হাজার ১৫০জন। এই ভোটারদের মধ্যে ৮ হাজার ১১৬ ভোটার এ সংরক্ষিত ১০নং আসনে তাদের ভোট প্রদান করেন। প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেকসোনা কালাম লিলি আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৩৫৩ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রোকেয়া ফারুক বই প্রতীকে ৭৬৩ ভোট পেয়েছেন।
শনিবার সকাল ৮টায় ৩৭টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীন এর ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও আইন শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার ছিলো চোখে পড়ার মত। দুই প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের দুটি টিম এবং ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষনিক ভাবে নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল টিম হিসেবে তদারকি করেছেন। এছাড়া নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে ৩৭ জন্য প্রিজাইডিং অফিসার, ১৮৯জন সহকারি প্রিজাইডিং এবং ৩৭৮জন পোলিং অফিসার তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি ছিল খুবই কম
নির্বাচনী ফলাফল বাতিলের দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপি
নির্বাচনে সরকারি দলীয় শীর্ষ নেতা, সিটি মেয়রের অপতৎপরতা, নির্বাচনী এলাকায় সরকার দলের ত্রাণ বিতরণ, সিটি কর্পোরেশনের সিডিপির মহিলা কর্মীদের সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করা, বিভিন্ন বাজার ও দোকান মালিক সমিতিকে নির্বাচনী কাজ করতে বাধ্য করা, কালো টাকা বন্টন, বিএনপি কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্বাচনে শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী ও বহিরাগতদের এনে তিন ওয়ার্ডে ভোট সেন্টারের আশে পাশে জমায়েত করে বিএনপির ভোটারদের পথ অবরুদ্ধ করে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য করা ও নির্বাচনের দিন নগর আ’লীগের সভাপতির নেতৃত্বে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সেন্টারে গাড়ি বহর নিয়ে মহড়া দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে খুলনা মহানগর বিএনপি।
গতকাল রবিবার এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনী এলাকায় একজন সিটি মেয়রের যাওয়া আইনগতভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকলে তিনি আইনের কোন তোয়াক্কা করেননি বরং বিভিন্ন ব্যানার ব্যবহার করে তফসীল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় সভা সমাবেশ করেছেন। নির্বাচনী আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিষিদ্ধ ও বেআইনি সকল কাজ করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ভোটার শূন্য নির্বাচন প্রমাণ করে বিগত সকল নির্বাচনে সীমাহীন ভোট ডাকাতি, সন্ত্রাস, নির্বাচন কমিশনও সরকারের প্রতি অনাস্থার কারণে ভোটারা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সরকারি দলীয় শীর্ষ নেতারা নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করলেও নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তাদের বাধা দেয়নি। এতেই প্রমানিত হয় বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে অবাধ সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন সম্ভব নয়। নেতৃবৃন্দ ভোটার শূন্য এ নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দরা হলেন নগর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, জলিল খান কালাম, সিরাজুল ইসলাম, এড. বজলুর রহমান, এড. ফজলে হালিম লিটন, স ম আব্দুর রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, শেখ জাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, মোঃ মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, এস এম আরিফুর রহমান মিঠু ও ইকবাল হোসেন খোকন প্রমুখ।