সমুজ আহমদ সায়মনঃ
আগামী ৩১ শে জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই মিছিল মিটিং, ওঠান বৈঠক আর মাইকিংসহ প্রচার প্রচারনায় উত্তাল ও পোষ্টারে পোষ্টারে সয়লাব হয়ে ওঠেছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা। বিশ্বনাথের ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে দু’টি ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ায় উপজেলার সকল জনসাধারণের নজর এখন লামাকাজী ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের দিকে।বিশেষ করে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন নির্বাচনে কে হবেন আগামীর কান্ডারী? কে বসবেন স্বপ্নের সোনালী সিংহাসনে? এ নিয়ে জ্ঞানী গুণিসহ আপামর জনতা করছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। এবারের নির্বাচনে এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন চার জন। ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত হাতপাখায় একজন। স্বতন্ত্র (বিএনপি) দুইজন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকার একজন। গত নির্বাচনের প্রাপ্ত ভোটের হিসাব পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এককভাবে নির্বাচন করে তালুকদার গিয়াস উদ্দিন প্রায় ৪ হাজার ৯০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে নৌকা প্রতিক নিয়ে শংকর চন্দ্র ধর প্রায় ৩ হাজার ৭০০ ভোট পেয়ে হয়েছেন দ্বিতীয়।কিন্তু সে তুলনায় এবারের নির্বাচন পুরোপুরি ভিন্ন। বিএনপি সারাদেশে নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ গ্রহন না করলেও তাদের দলের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। খাজাঞ্চী ইউনিয়নও তার বাইরে নয়। স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থী হিসেবে মাঠে লড়ছেন দুইজন। একজন হলেন সাবেক সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন। অন্যজন বিশ্বনাথ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কয়েছ মিয়া। কেউ কাউকে ছাড় না দিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন জোর গতিতে। গতবারের একক প্রার্থীর ভোটে এবার স্বতন্ত্র (বিএনপি) এই দুইজনে ভাগ বসানোর সুবাদে নৌকার একক প্রার্থী আলহাজ্ব আরশ আলী গনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সর্বস্তরের জনসাধারণ।
প্রত্যন্ত এলাকা সরেজমিন ঘুরে ইউনিয়নের নোয়ারাই রায়পুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমি কোনদিনই নৌকায় ভোট দেইনি কিন্তু এবার ভোট দিতে ইচ্ছে পোষন করছি।কারণ একই দলের দুইজন থাকায় আর নৌকার প্রার্থী আরশ আলী একক ও তিনি একজন পরোপকারী মানুষ হওয়ায় এবার নৌকায় ভোট দিতে মনস্থির করেছি”।
ইউনিয়নের নব্বই বছরের বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত আমেনা বেগম বলেন, ‘বাবা কত বছর বয়স অইলে বয়স্কভাতা পাইমু, তুমি কিতা জাননি। আগে যারারে ভোট দিছলাম অউ মেম্বার ও চেয়ারম্যান বয়স্ক ভাতা দিবো দিবো কইয়া পাঁচ বছর শেষ করছে আইজও দিলোনা। তুমি কিতা দিতে আইছোনি”?
আরো এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, এবার হুনরাম নৌকা নিয়া একজন ভালা মানুষ আইছে ।তারে ইবার ভোট দিমু। হে পাস করলে আমারে বয়স্ক ভাতা দিবো আমার মনে কর”।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন,’আবেগে আপ্লুত হয়ে অতীতে বারবার ভুল করেছি।আর এই ভূ্লের মাশুল আমার মতো গোটা ইউনিয়নবাসী আজ তিলে তিলে অনুভব করছে।তাই এবার আর ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব আরশ আলী গনিকে ভোট দিতে কার্পণ্য করবো না”।
Leave a Reply