এইচ এম বাবুল, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ–
কুড়িগ্রামে ফের বন্যা দেখা দেওয়ায় জেলার নদী তীরবর্তী উপজেলা গুলোতে বন্যার নতুন পানিতে মৎস শিকারের ধুম পড়েছে। ফুলবাড়ি উপজেলার আবাল বৃদ্ধ, বনিতা কেউ মাছ মারতে যেন বাদ পড়ছে না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি সকলেই যেন মাছ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। করোনার প্রভাবে দরিদ্র মানুষ কেউ মাছ মেরেই ভাত খাচ্ছ কেউবা অভাব অনটনের কারণে মাছ মেরে তা হাট বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে।
এবারের বন্যা সবাই মোকাবেলা করার সাহস নিয়ে এগিয়ে এসেছে। ইতিপূর্বে বন্যায় সবাই বন্যার পূর্ববর্তী প্রস্তুতি গ্রহন করায় এবার বন্যার্ত মানুষেরা আর চিন্তিত নয়। বরং সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে মৎস শিকারের ব্যস্ততায় দিন কাটাচ্ছে। আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা সকলেই যার যার সামর্থ মত জাল পেতে, বরশি ফেলে, খরা পেতে, কেউবা কারেন্ট জাল পেতে মৎস্য শিকার করছে। আবার কেউ কেউ হাটু পানিতে নেমে ফসলি জমির মধ্যে দুই হাত দিয়েই মাছ মারছে। পুটি, ট্যাংরা, কই, খলশা, বাইন, গচই, টাকি, চিংড়ি, বোয়াল, কাতলা, নওলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ মারছে।
অনেক পুকুর বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়ায় সর্বত্র মাছের ছড়াছড়ি। তাই জাল পাতলেই সবাই কম বেশি মাছ পাচ্ছে। কারো জালে যেন মাছ পড়া বাদ পড়ছে না। ফুলবাড়ি সদরের মরা নদীতে দেখা গেল একত্রে ১০/১২ জন খড়া জাল পেতে মাছ মারছে। সবার জালেই মাছ আটকা পড়ছে। কেউ যেন খালি হাতে ফিরছে না
বর্শি দিয়ে মাছ মারা জৈনেক মৎস্য শিকারী গোলাম জানায়, প্রতি খোটায় খোটায় বর্শিতে মাছ উঠছে। সবাই তাই আনন্দ উল্লাসে মাছ মারতে মেতে উঠেছে।
খাল, বিল, নদী নালায় বন্যার পানি কমে গেলেও পুনরায় বন্যার পানিতে এবার অধিক সংখ্যক মাছ এসেছে। পর পর দুই দফা বন্যায় যেমন মাছ কম ছিল এবং সবাই বন্যা মোকাবেলায় ব্যস্ত ছিল কিন্তু এবার সকলের তেমন কাজ না থাকায় মৎস্য শিকারে হুমরী খেয়ে পড়েছে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় যুবক কিশোর দলবেধে মৎস্যশিকারে নেমেছে।
“মাছে ভাতে বাংগালী” কথাটি যেন বাস্তবে রুপ নিয়েছে। অনেকে মাছ মেরেই সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে। তাই সকলে উৎসবমুখর হয়ে বন্যার পানিতে এখন মৎস্য শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এবারের বন্যায় পেশাদার মৎস শিকারীরাও উপজেলা, গ্রাম গঞ্জে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাছ মেরে বেজায় খুশী। দু’দফা বন্যার পর মৎস্য না পারার ক্ষতি যেন তারা পুশিয়ে নিয়েছে।