এইচ এম বাবুল জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রামঃ– প্রেম করে বিয়ে। দেড় বছরের সংসার জীবন। তবে প্রথম থেকেই ছিল যৌতুকের জন্য নির্যাতন। জীবন বাঁচতে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিংকি খাতুন শিল্পী (২২) ফিরে আসেন বাবা-মায়ের কাছে। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয়নি স্বামী রাসেল বাবু (৩৪)। শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রীকে পেটের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে। শিল্পীকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্নভাবে ফুসলাতে থাকে। শ্বশুরবাড়িতে এসে থাকাও শুরু করে। কিন্তু কিছুতেই বনিবনা হচ্ছিল না।
এমন পরিস্থিতিতে একদিন শিল্পীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে রাসেল বাবু তার স্ত্রী শিল্পীকে জোর করে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করে। শিল্পী এতে রাজি না হওয়ায় বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রাসেল বাবু অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশ চাপ দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। মরদেহ খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যায় সে।
২০১১ সালের ২৭ মে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ওই দিনই পিংকি খাতুন শিল্পীর মা রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করেন। প্রায় ১০ বছর মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণে এই হত্যাকাণ্ডে রাসেল বাবুর জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। ফলে আসামি রাসেল বাবুকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান এ আদেশ দেন। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্রাহাম লিংকন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাসেল বাবু বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তার অনুপস্থিতিতেই আদালত এই আদেশ দিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার পিংকি খাতুন শিল্পী জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথরডুবি গ্রামের হাতেম আলী- রোকেয়া বেগম দম্পতির মেয়ে। আর ঘাতক স্বামী রাসেল বাবু নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ বাজার এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন পিপি আব্রাহাম লিংকন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম ও সিদ্দিকুর রহমান।