রাকিব হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত তিনবিঘা করিডর দহগ্রাম ইউনিয়ন। ১৯৯২ সালের ২৬শে জুন ভারতীদের কাছ হতে মুক্তি হলেও, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে কল্পনাতীত।
২০১১ সালের ১৯শে অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দহগ্রাম সফরের মাধ্যমে ঘোষণা করেন, দহগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সরকারি করন ও দহগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজিয়েটে রুপান্ত করা হবে।
দহগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারি করণ করা হলেও কলেজ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি ফলে দহগ্রাম ইউনিয়ন থেকে প্রায় (২৫ কিঃমিঃ) দুরে গিয়ে এখানকার শিক্ষার্থীরা উপজেলা শহরে কলেজে ভর্তি হয়। এখানে একটি মাত্র দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতে গতবছরে এমপি ভুক্ত হলেও বেহাল দশায় পড়েছে।
(০৮ই মার্চ) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাদ্রায় সে রকম কোন একাডেমিক ভবন নাই, পাঠ দান চলছে টিন সেটের ছোট একটি বিল্ডিং এর ভিতর। শ্রেনী কক্ষ গুলো অত্যান্ত ছোট, নাই ছাত্রছাত্রীদের পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা। ফলে অনেক শ্রেনী কক্ষে শিক্ষার্থীদের দাড়িয়ে থেকে ক্লাশ করতে দেখা গেছে।
দাখিল মাদ্রাসার অফিস সুত্রে জানা যায় এখানে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৯৫ জন। আগামী নতুন বছরে এর সংখ্যা দ্বিগুন হবে বলে সম্ভবনা প্রকাশ করেছেন সহকারী শিক্ষক বৃন্দ।
অত্যান্ত দুঃখজনক তথ্য হলো ২৯৫ জন শিক্ষার্থীদের জন্য নাই কোন টয়লেট, ফলে শিক্ষার্থী সহ মাদ্রাসার সকলেই অতি সমস্যায় রয়েছেন।
নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আকলিমা খাতুন বলেন,আমাদের এখানে টয়লেট নাই পাশের বাড়িতে টয়লেট করতে হয়, বিষয়টি খুবই খারাপ লাগে।
মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট আজম আলী বলেন, দীর্ঘদিন থেকে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পিছনে কাজ করে যাচ্ছি, বিভিন্ন জায়গায় ছুটাছুটি করছি, হবে- হবে বলে আর উন্নয়ন হচ্ছে না, কান্না জড়িত কষ্ঠে বলেন এমপি ভুক্ত হয়েছে প্রায় এক বছর হলো কিন্তু আমার মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জন্য কোন ভবনের ব্যবস্থা নাই, আমরা নিজের অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের যে বসার ব্যবস্থা করে এসেছি সেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
আছে শিক্ষক সংকট, আমার মোট শিক্ষক ও কর্মচারী ১৫ জন তার মধ্যে বেতন পায় ১১ জন বাকি ০৪ জনের বেতনের কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না।
টয়লেট নাই, নিজ উদ্যোগে একটা কাচা টয়লেট করেছি এতগুলো শিক্ষার্থীদের চাপে তা ঘনঘন নষ্ট হয়ে যায়। মাদ্রাসায় কোন আসবাবপত্র নাই। তিনি মাদ্রাসার উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক বিমল চন্দ্রের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মাদ্রাসার সমস্যা লিখিত আকারে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য (ডিও লেটার) জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে জমা দিলে তারা ব্যবস্থা নিবেন অথবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এডিবি বরাদ্দের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে দরখাস্ত করতে বলেন।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি।
মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ কমিটির সভাপতি সাফিউল আলম বাবলু বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, বিভিন্ন জায়গায় ছুটাছুটি করছি,মাদ্রাসা উন্নয়নে কাজ করা হবে বলে সবাই আশার কথা শুনাচ্ছে, কবে যে হবে সেটা বলা যাচ্ছে না।
তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব এর সাথে দ্রুত কথা বলে এডিবি বরাদ্দ থেকে একটা টয়লেট করার ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন