রাকিব হোসেন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম -হাতীবান্ধা এলাকার সাংসদ মোতাহার হোসেনের সুপারিশ থাকার পরও করোনাকালে মৎস্যজীবিদের কপালে এবারও জুটছে না ত্রান কিংবা নগদ টাকা। সরকার দলীয় নেতা ও কর্মকর্তাদের পিছে ঘুরঘুর করেও ত্রান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন পাটগ্রাম উপজেলার রসূলগঞ্জ মৎস্যজীবী সমিতি’র কয়েকজন সদস্য।
তাঁরা জানান, উপজেলার তিনটি মৎস্যজীবি সমিতি’র আওতায় ৮২৬ জন সদস্য রয়েছেন। নদ- নদীতে আগের মত মাছ শিকার করতে না পারায় অধিকাংশ হতদরিদ্র মৎস্য পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলে জানানো হয়েছে।
পাটগ্রামে পৌরসভা, দহগ্রাম ও বুড়িমারী এলাকা নিয়ে গঠিত রসূলগঞ্জ মৎস্যজীবী সমিতি’র পক্ষ থেকে সম্প্রতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ বরাবর দাখিলকৃত একটি আবেদনে মাননীয় এমপি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন সেই আবেদনে সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। এমপি. নিজে উপস্থিত থেকে পাটগ্রাম ইউএনও সাইফুর রহমানকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। বরাদ্দ পেতে সেই আবেদনখানা পাটগ্রাম মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানোর কথা জানান মৎস্য অফিসের সহকারী হাফিজ। করোনাকালে কিভাবে জেলাতে আবেদন পাঠানো হয়েছে প্রশ্ন করলে হাফিজ বলেন এক বাহককে দিয়ে মোটরসাইকেলে করে ডিসি অফিসে পাঠানো হয়েছে। এ কথা শোনার পর রসূলগঞ্জ মৎস্যজীবি সমিতি’র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাবুল,সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী,কোষাধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম সদস্য মোকলেছার রহমান সরাসরি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন সেখানে কোন আবেদন পাঠানো হয়নি। এরপর সেখান থেকে মৎস্য অফিসের হাফিজকে মোবাইল করলে তিনি জানান,জেলা প্রশাসকের ওখানে না জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় পাঠানো হয়েছে।
তারপর মৎস্যজীবি সমিতি’র নেতারা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারুকুল ইসলামের কাছে গিয়ে তাদের আবেদন বিষয়ে জানতে চান।সেখানেও কোন আবেদন পাঠানো হয়নি বলে তাদের জানানো হয়। এরপর সেখান থেকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নিজেই পাটগ্রাম কার্যালয়ে খবর নিয়ে জানতে পারেন আসলে কোন আবেদন জেলায় পাঠানো হয়নি। মাননীয় এমপি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুপারিশ থাকার পরও কেন হাফিজ উদ্দীন আবেদন না পাঠিয়ে মিথ্যা কথা বলেছেন সেজন্য মৎস্য কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ দায়িত্ব অবহেলার দায় এড়াতে পারেন না বলে কঠোর ভাষায় কথা বলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। ঈদের আগে সীল স্বাক্ষরকৃত আবেদনের মূল কপি (হার্ট কপি) দ্রুত পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পরও থমকে গেছে ফাইলপত্র।
এমতাবস্থায় ত্রান না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন রসূলগঞ্জ মৎস্যজীবি সমিতি’র নিয়মিত ৭০ জনসহ সব মিলিয়ে ১৪৩ জন সদস্য।
সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাবুল জানান, করোনা’র শুরুতে ৮২৬ জনের মধ্যে দহগ্রামে সমিতি’র ২০ জন,পাটগ্রাম সমিতি’র ৪০ জন ও রসূলগঞ্জ সমিতি’র ৪০ জন সরকারের দেয়া ত্রান বাবদ ১০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,মৎস্যজীবিরাও মানুষ। নাম তালিকা যাচাই বাছাই করার পরও ঈদুল ফিতরের আগে সরকারের দেয়া আড়াই হাজার টাকা চোখে দেখেননি মৎস্যজীবিরা। তাঁর দাবী ১৪৩ জনের মধ্যে একজন মাত্র সদস্য মোবাইলে পেয়েছেন আড়াই হাজার টাকা।এবারও মৎস্য অফিসের গাফিলতির কারণে মৎস্যজীবিরা হতাশায় ভুগছেন। তাদের অনেকে চলমান লকডাউনে সংসার চালাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন অনেকে।এবার ঈদের আগে ৮২৬ জন মৎস্যজীবির জন্য জিআর নয় ত্রান বরাদ্দদানে
জেলা আ’লীগের সভাপতি মাননীয় এমপি মোতাহার হোসেনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে মৎস্য কর্মকর্তার ফোনে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়।সরকার ঘোষিত করোনা’র চলমান লকডাউনে মঙ্গলবার ৩ টা’র আগে অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিস বন্ধ রয়েছে।