বার্তা বিভাগঃ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রাজাগঞ্জ বাজার টু উত্তর বিশ্বনাথ – লামাকাজী সংযোগ সড়ক পাকাকরণের কাজ অঘোষিত ভাবে বন্ধ রয়েছে। কেন বন্ধ হয়ে আছে পাকাকরণ কাজ কেউ জানেনা। এনিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ওয়ার্ড মেম্বার সিরাজুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানেন না বলে জানান। ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করে ব্যর্থ হতে হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোন মন্তব্য করতে নারাজ। এছাড়া অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ খাজান্সী ষ্টেশন টু কামাল বাজার রাস্তা প্রশস্তকরণ ও খানা খন্দক সংস্কার, রহিমপুর- বন্ধুয়া রাস্তা পাকাকরণ ও খাজান্সী- বিশ্বনাথ রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সংস্কার, উত্তরবিশ্বনাথ টু প্রিতীগন্জ বাজার নতুন রাস্তাটি রেললাইনের পাশ ঘেঁষে নির্মাণের জোর দাবী জানিয়ে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খাজাঞ্চি ইউনিয়নের সাবেক চেযারম্যান এডভোকেট আব্দুর রশীদ লাল মিয়া।
সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সাবেক সদস্য, খাজান্সী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট মো: আব্দুর রশীদ লাল মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে জোর দাবী উত্থাপন করে বলেন, অবিলম্বে এই রাস্তাগুলো; রাজাগঞ্জ বাজার-উত্তর বিশ্বনাথ অংশের পাকা করণের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সমাপ্ত করণের নিমিত্তে স্হানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অধিনস্থ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন !
জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন উত্তর বিশ্বনাথবাসী উপজেলা ও জেলা সদরের সহিত যোগাযোগ করে থাকেন। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হওয়ায় প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ হাটবাজারে হাজার হাজার জনগণ চলাচল করে থাকেন !
বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলে উত্তর বিশ্বনাথের কয়েকটি ইউনিয়নের জন্য সিলেট শহরের যাতায়াতের এক মাত্র উপায়, এই ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত রেললাইন ছিল। তখনকার থেকে এপর্যন্ত রেললাইনই ব্যবহার করছেন এ অঞ্চলের মানুষ। কিন্তু গত বছর থেকে করোনার অযুহাতে দেড় বছর হলো রেলগাড়ী বন্ধ। সিলেট ছাতক লাইনে রেলগাড়ী আর কবে সচল হবে কেউ জানে না। রেলগাড়ীর বিকল্প হিসেবে শুধু বর্ষাকালে তৎকালীন খরস্রোতা খাজান্সী নদী দিয়ে সুরমা নদী যোগে রসুলগন্জ থেকে সিলেট গামী ইন্জিন চালিত ছোট ছোট লঞ্চ যোগে সিলেটে যাওয়া আসা করা যেত। এখন খাজাঞ্চি নদী মরে হয়েছে বালুচর। নেই পানি নেই লঞ্চের যাতায়াত।
কালের বিবর্তনে স্বাধীনতার পর বিশ্বনাথের সকল ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নয়ন সাধিত হলেও খাজান্সী ইউনিয়ন বরাবরই ছিল অবহেলিত ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ! জেলা সদরের সহিত রেল পথে সিলেট- ছাতক লাইনে খাজান্সী রেলওয়ে ষ্টেশন ও বর্ষাকালে নদীপথে খাজান্সী নদী যোগে লঞ্চে যোগাযোগের সুযোগ থাকলেও উপজেলার সহিত যোগাযোগের ছিলনা উন্নত কোন ব্যবস্হা !
উপজেলা প্রশাসন সৃষ্টি হলে খাজান্সীবাসীর উন্নয়ন বঞ্চনার সুচনা শুরু হয় কিন্তু দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের পর অবশেষে দেওয়ান শমশের রাজা চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে খাজান্সী ইউনিয়নের প্রতি উপজেলার অবহেলা ও বঞ্চনার অবসান হয় এবং খাজান্সী ইউনিয়নের সহিত উপজেলা সদরের যোগাযোগের নিমিত্তে ১৯৯১ সালে পুরান রাজাগঞ্জ – উত্তর বিশ্বনাথ রাস্তার সংস্কার ও জেলা সদরের সহিত যোগাযোগের নিমিত্তে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ- কামাল বাজার রাগীব আলী ব্রীজ পর্যন্ত সংস্কার করে রাস্তাগুলি চলাচলের উপযোগী করে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নির্মান করা হয় !
পরবর্তীতে খাজান্সী ইউনিয়ন টু কামাল বাজার রাস্তা,
রাগীব আলী ব্রীজ পাকাকরণ হলে সিলেট জেলার সাথে সংযোগকৃত করা হলে খাজান্সীবাসী জেলা সদরের সহিত যোগাযোগে ঐ রাস্তাটি ব্যবহার করে চলাচল করতে থাকেন। তৎপরবর্তীতে পুরানরাজাগন্জ- রাজাগঞ্জ রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে রাজাগঞ্জ – উত্তর বিশ্বনাথ তথা লামাকাজী পর্যন্ত অংশটুকু পরিত্যক্তই থেকে যায় দীর্ঘ দেড়যুগেরও বেশীদিন। অতঃপর ২০২০ সালে বর্তমান সরকার রাজাগঞ্জ বাজার -উত্তর বিশ্বনাথ অংশে পাকাকরণের উদ্যোগ গ্রহন করে। এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাটি কেটে কোন কোন জায়গায় কংক্রিট ছাড়া শুধু বিট বালু ফেলে কাজের সুচনা করে। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাইট ত্যাগ করে চলে গেছে যার কারণে জনগনের দুর্ভোগের মাত্রা অতীতের চেয়ে বৃদ্ধি পায় এবং জনগনের ভোগান্তি সৃষ্টি হয় যা বর্ষাকালে আরো বেশী আঁকার ধারন করেছে। বর্তমানে ঐ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা সহ এলাকার জনগন হাট বাজার উপজেলা সদরে যাতায়াতে বিরাট অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন ! অবিলম্বে এই রাস্তা পাকাকরণ কাজ সমাপ্তের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, নির্বাহী প্রকৌশলী সহ উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।