এইচ এম বাবুল, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ–
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পঞ্চমবারের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা ও ধরলার পানি। গতকাল তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলার পানি। এখনো এ দুই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে আরেক দফা বন্যার শঙ্কায় রয়েছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। আর বারবার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষতিতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।
কুড়িগ্রামের কৃষকরা বলেন, পর পর তিন দফা বন্যার পর আমরা অনেকে নিম্নাঞ্চলে আমন চারাসহ বিভিন্ন ফসলাদি লাগিয়েছি। চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই দুবার পানি বৃদ্ধি হলো। দ্রুত পানি নেমে না গেলে ক্ষতিতে পড়তে হবে আমাদের। আর কতবার আমরা ক্ষতির ধকল সামলাব?
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। তবে এ পানি স্থায়ী হবে না।
অন্যদিকে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল কাদের জানান, হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। স্থানীয়রা জানান, তিস্তার পানি বেড়ে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার
দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকু-া ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নীলফামারীতে গতকাল বিকাল ৩টায় পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ক্রমাগত পানি বৃদ্ধির কারণে এরই মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষের মাঝে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পুর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বুধবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় তিস্তার পানিবৃদ্ধি পেয়ে ৬২ দশমিক ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি চরের মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ওইসব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, গত দুদিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি সকাল ৬টা থেকে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।